বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আব্দুল হামিদ,কলারোয়া (সাতক্ষীরা) থেকে : মাড়োয়ারী এজেন্টরা বাংলাদেশের উন্নত মানের কোরবানীর পশুর চামড়া কেনার জন্য কলারোয়া সীমান্ত পথে বাংলাদেশে আসছে। এই চামড়ার মূল্য পরিশোধে ভারত থেকে হুÐির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা পাচার হয়ে আসছে। সীমান্তের নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে, মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানে ঈদুল আজাহায় কোরবানী দেওয়ার জন্য বাংলাদেশী মুসলমানেরা বাজারের সব চাইতে হৃষ্টপুষ্ট রোগমুক্ত সেরা গরু, ছাগল, মহিষ এবং স্থান বিশেষে বিত্তবানরা কেউ কেউ উট ক্রয় করে থাকে। হৃষ্টপুষ্ট রোগমুক্ত এসব পশুর চামড়া খুবই উন্নত মানের। বাংলাদেশের কোরবানীর পশুর এই চামড়া বহিঃ বিশ্বে ব্যপক চাহিদা রয়েছে। এই চামড়ার আন্তর্জাতিক বাজার দর অপেক্ষাকৃত বেশী। এদিকে ঢাকার ট্যানারী মালিকরা কারখানা সরাতে যেয়ে চরম আর্থিক সংকটে রয়েছে। ফলে ট্যানারি মালিকরা চামড়া ব্যবসায়ীদের বিগত বছরের পাওনা বকেয়া টাকা পরিশোধ করতে পারেনি। কোটি কোটি টাকা বকেয়া পড়ে থাকায় ব্যবসায়ীদের চামড়া কেনার সক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে। এতে করে বাংলাদেশের চামড়ার বাজার মূল্য চরম ভাবে হৃাস পেয়েছে। বর্তমানে এই অঞ্চলে ৮ থেকে ১২ কেজি ওজনের ছাগলের চামড়ার মূল্য ৩০ টাকা। ১২ থেকে ১৫ কেজি ওজনের ছাগলের চামড়ার দাম দেওয়া হচ্ছে ৭০ টাকা। ৫০ থেকে ৫৫ কেজি ওজনের গরুর চামড়া ১০০ টাকা, দেড়মণ ওজনের গরুর ২’শ টাকা, ২মণ ওজনের গরুর ৪’শ টাকায় ক্রয় করা হচ্ছে। প্রিণ্ট ও ইলেক্ট্রোনিকস মিডিয়ার কল্যাণে এবং চোরাচালানীদের মাধ্যমে বাংলাদেশে চামড়ার বাজারে এই ধ্বস নামার সংবাদ সম্পর্কে ভারতীয়রা সমধিক জ্ঞাত রয়েছে। তাই কম দামে বাংলাদেশী চামড়া সংগ্রহে ভারতের মাড়োয়রী ব্যাবসায়ীরা ইতিমধ্যে তৎপর হয়ে উঠেছে। সুত্র জানায়, চামড়া কেনার জন্য মাড়োয়ারী ব্যবসায়ীরা মোবাইলের মাধ্যমে বাংলাদেশের চোরাচালানী গডফাদারদের সংগে যোগাযোগ করেছে। বিষয়গুলো দেখভাল করার এবং তুলনা মূলক কম দামে চামড়া কেনার জন্য মাড়োয়ারী এজেণ্টরা কেউবা পাসপোর্টে এবং কেউবা চোরাই পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। আর চামড়ার মূল্য পরিশোধে হুÐির মাধ্যমে টাকা আনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাড়োয়ারী ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশের শ্যামনগর, কালিগঞ্জ, দেবহাটা, সাতক্ষীরা, কলারোয়া, যশোরের শার্শা, ঝিকরগাছা, চৌগাছা, মহেশপুর সীমান্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে বৃহত্তর খুলনা বিভাগের বিভিন্ন হাটবাজারের চামড়া ব্যবসায়ীর সংগে যোগাযোগ সম্পন্ন এবং অগ্রিম টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা চুড়ান্ত করা হয়েছে। আবার সীমান্ত পথে আগত ভারতীয় গরু বিক্রির টাকা চামড়া কেনায় বিনিযোগ করা হচ্ছে বলেও সুত্র জানায়। তাছাড়া দক্ষিণ ও দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের সর্ববৃহৎ চামড়ার বাজার যশোরের রাজারহাটে চামড়া কেনার জন্য স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের সংগে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এছাড়া চোরাচালানী গডফাদারের সহায়তায় বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী উপজেলা কলারোয়া, সাতক্ষীরা সদর, দেবহাটা, কালিগঞ্জ, শ্যামনগর, যশোরের শার্শা, ঝিকরগাছা, চৌগাছা, মহেশপুর উপজেলার গ্রামাঞ্চলে চামড়া কেনার মৌসুমী ফড়িয়া নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে সীমান্ত সুত্র জানায়। কলারোয়া ও সাতক্ষীরার ব্যবসায়ীদের একটি সুত্র জানায়, বেশ কিছু ট্যানারী সরানোর পরে পূর্ণ উৎপাদনে যাওয়ার পর্যায়ে পৌছায়নি। স্থানান্তর জনিত ধকলে বহু ট্যানারী রুগ্ন হয়ে পড়েছে। ফলে ঈদের আর মাত্র এক সপ্তাহ খানেক বাকী থাকলেও ঢাকার চামড়া ব্যবসায়ীদের চামড়া কেনার তেমন আগ্রহ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। ফলে দক্ষিণ ও দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে সিংহভাগ চামড়া ভারতে পাচার হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে সুত্র জানায়। এদিকে প্রতি বছর ঈদ পরবর্তী কয়েকদিন চামড়া পাচার রোধে সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়। তাই এসব চামড়া নিরাপদে ভারতে পাচারের জন্য চোরাচালান সিÐিকেট ইতিমধ্যে কলাকৌশল খুজে বের করতে তৎপর রয়েছে। এ ব্যাপারে বিজিবি খুলনা সেক্টর কমাÐার জানান, ইতিমধ্যে চামড়া পাচার প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। কোন ভাবে যাতে চামড়া পাচার না হয় সে জন্য ঈদ পরবর্তী নজরদারি বৃদ্ধিসহ প্রয়োজনীয় সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।