পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইয়াওমে আরাফাই হজ্জ
হজ্জ আদায়ের কর্মকান্ডের মাঝে তিনটি কর্ম সম্পাদন করা ফরজ। যথা : (ক) হজ্জের নিয়তে ইহরাম বাঁধা (খ) যিলহজ্জের ৯ তারিখ ফজর হতে সুর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আরাফাত ময়দানে অবস্থান করা এবং (গ) ১০ই যিল হজ্জ তাওয়াফে যিয়ারত আদায় করা। এই তিনটি ফরজ কর্মের মধ্যে আরাফাত ময়দানে অবস্থান করা কর্মটির একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এ প্রসঙ্গে হযরত আবদুর রহমান ইবনে ইয়া’মার আদ্দায়লী (রা:) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন : আমি রাসূলুল্লাহ (সা:) কে আরাফায় অবস্থানরত দেখতে পেলাম। তখন নজদের অধিবাসী কিছু লোক তাঁর নিকট উপস্থিত হল। তারা আরজ করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! হজ্জ কি রকমে কি নিয়মে হয়? উত্তরে রাসূলুল্লাহ (সা:) বললেন : আরাফাতই তো হজ্জ। যে ব্যক্তি মুযদালিফায় যাপন করা রাত্রির ফজরের পূর্বে আরাফাত-এ এসে পৌঁছবে তার হজ্জ পূর্ণ হয়ে গেল। মিনায় অবস্থানের জন্য নির্দিষ্ট তিন দিন। যে ব্যক্তি দু’দিনেই অবস্থান সম্পূর্ণ করবে তাতে তার কোন গোনাহ হবে না। আর কেই বিলম্বিত করলে তাতেও কোন দোষ নেই। তৎপর তিনি এক ব্যক্তিকে জন্তযানে নিজের পেছনে বসায়ে নিলেন। সেই লোক উক্ত কথাগুলো উচ্চ:স্বরে ঘোষণা করতে আরম্ভ করল। (মোসনাদে আহমাদ, সুনানে আবু দাউদ, জামে তিরমিজী, সুনানে নাসাই সুনানে ইবনে মাজাহ)।
এই হাদীস উদ্ধৃত রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর বাণী ‘আরাফাতই তো হজ্জ’ কথাটির অর্থ ওমর্ম-সূদুর প্রসারী। তাই উপরোক্ত কথাটির ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা একান্ত প্রয়োজন। অন্যথায় ভুল বুঝা বুঝির আশঙ্কা থেকে যাবে। আসুন, এবার সেদিকে লক্ষ্য করা যাক!
(ক) আরাফাতই তো হজ্জ কথাটির ব্যাখ্যা ইমাম শাওকানী (রহ:) এভাবে করেছেন, তিনি বলেছেন : যে জ্যক্তি আরাফাত ময়দানে অবস্থানের জন্য নির্দিষ্ট দিনে উক্ত ময়দানে উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য লাভ করল, তার হজ্জই সহীহ হলো।
(খ) আল্লামা ইজ্জুদীন আবদুস সালাম বলেছেন : আরাফাতই হজ্জ কথাটির অর্থ হলো আরাফাত ময়দানে অবস্থানই হজ্জ পাওয়ার কাজ।
(গ) ইমাম তিরমিজী উপরোক্ত কথাটির ব্যাখ্যা এভাবে করেছেন : যে ব্যক্তি আরাফাত ময়দানে (নয়ই জিলহজ্জ দ্বিপ্রহরের পর হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ে অবস্থানকারী ব্যক্তির হজ্জ পূর্ণ হয়ে যাবে) ১০ই জিলহজ্জ ফজর উদয় হওয়ার পর উপস্থিত হয়, তবে এই উপস্থিতি তার কোন কাজে আসবে না। তার হজ্জ হারিয়ে গেছে বা হয়নি। এ ব্যাপারে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ্ সম্পূর্ণ একমত। ইমাম শাফেরী ও ইমাম আহমাদ দৃঢ়তার সাথে বলেছেন যে, তাকে পরবর্তী বছর পুনরায় হজ্জ আদায় করতে হবে।
বস্তুত : আরাফাত ময়দানে উপস্থিত হয়ে হাজী সাহেবগণ অত্যন্ত নম্র, বিনয়ী ও আল্লাহর প্রতাপে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। আল্লাহর নিকট দোয়া ও মোনাজাত করার ব্যাপারে ধৈর্যশীলও পরম সহিষ্ণু হয়ে থাকে। বাহ্যিক কোন দু:খ কষ্টই তাদেরকে বিব্রত করে তুলতে পারে না। একমাত্র আল্লাহর রেজামন্দিই তাদের কামনার ধন হয়ে যায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।