Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আতঙ্কে পুলিশি নির্যাতনে নিহত বিএনপি নেতা পিন্টুর পরিবার

মামলা নেয়নি শাজাহানপুর থানা

বগুড়া ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পুলিশের নির্যাতনে বগুড়ার শাজাহানপুরের স্থানীয় বিএনপি নেতা মাসুদুল হক পিন্টুর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা নেয়নি শাজাহানপুর থানার পুলিশ কর্তৃপক্ষ।
ফলে হয়রানির আশঙ্কায় চরম আতঙ্কে রয়েছে নিহত পিন্টুর পরিবারের সদস্যরা। তবে তারা জানিয়েছেন পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই মামলার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হবেন তারা। নিহত বিএনপি নেতা পিন্টুর মা পিয়ারা বেওয়া জানান, মঙ্গলবার রাতে আমি নিজে বাদী হয়ে আমার ছেলে হত্যার সাথে যে সব পুলিশ জড়িত তাদের নামে থানায় মামলা করতে যাই, কিস্তু ওসি মামলা নেয়নি। বুধবার রাতে আমার ভাই আমজাদ হোসেন মামলা করতে গেলে পুলিশ তাকেও ফিরিয়ে দেয়। মামলা না নেওয়ায় আমরা ভয়ে ভয়ে আছি। পিন্টুর স্ত্রী খায়রুন নেছা কান্না জড়ানো কন্ঠে জানান, আমার স্বামীর শোকে আমিসহ আমার দুই মেয়ে অসুস্থ। আমরা সুস্থ হলে আদালতে মামলা করবো।
এদিকে মামলার বিষয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়া লতিফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার বিকেলে পিন্টু শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। বুধবার সকালে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে পিন্টুর সুরতহাল প্রতিবেদন করা হয়েছে। পরে একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে লাশের ময়নাতন্তের কাজ সম্পন্ন করা হয়। সবকিছুই আইনি প্রক্রিয়া মেনে করা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করার কিছু নেই। সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া শেষে ঘটনার জন্য কেউ দায়ী হলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গতকাল বৃহষ্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২ টার সময় নিহত পিন্টুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ভেতর থেকে তার বাড়ির দরজা লাগানো। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ডাক দিলে দরজা খুলে দেয় পিন্টুর শ্যালক। দিনের বেলায় দরজা কেন লাগানো জানতে চাইলে সে বলে, দুলাভাইয়ের মৃত্যতে পরিবারের সবার মনে ভয় কাজ করছে।
বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় বাবা বাবা বলে কেঁদেই চলেছে, পিন্টুর দুই অনার্স পড়–য়া মেয়ে মেহেরুন নেছা ও নবম শ্রেণীর মাদ্রাসা পড়ুয়া মেয়ে মোহনা। প্রতিবেশীরা শত বুঝ দিয়েও দুই মেয়ের কান্না থামাতে পারছে না। কথা বলতে চাইলে মেহেরুন নেছা জানান, কথা বলে আর কি হবে ? পুলিশ মামলা নেয়নি ? এদেশে কি কোন বিচার নেই ? আমার বাবার হত্যাকারীরা কি পার পেয়ে যাবে ? সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনারা কি আমার বাবার বিচারের জন্য কিছু করতে পারেন ?
পিন্টুর লাশের ময়নাতদন্তের রির্পোট প্রভাবিত করার আশঙ্কা করছে তার পরিবার। পিন্টুর ছোট ভাই টুটুলের স্ত্রী গোলাপী বেগম বলেন, ময়নাতন্তের রির্পোট আমরা সঠিক পাবো না কিনা সে চিন্তায় আছি। পুলিশ কিনা পারে। হত্যা করতে পেরেছে আর ময়নাতন্তের রির্পোট পাল্টে নিতে কতক্ষণ। আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা একটু নজর রাখবেন যেন পুলিশ ময়নাতন্তের রির্পোটে কোন প্রভাব খাটাতে না পারে । উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার কৈগাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ ইন্সপেক্টর আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে ৪ পুলিশ সদস্য পিন্টুর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে । আটকের আড়াই ঘন্টা পর সে শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় । পিন্টুর পরিবার অভিযোগ করে পুলিশী নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে । পিন্টু আশেকপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএনপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ