Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লায় রাক্ষস আতঙ্ক!

মো. আকতারুজ্জামান চৌদ্দগ্রাম থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কুমিল্লা জেলা জুড়ে চলছে রাক্ষস আতঙ্ক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রাক্ষস নিয়ে চলছে নানান আলোচনা ও সতর্কিকরণ বার্তা।
এ নিয়ে পাঠকরাও কুমিল্লা জেলাসহ দেশ বিদেশ থেকে মুঠোফোনে জানতে চেয়েছেন রাক্ষস স¤পর্কে। কুমিল্লায় রাক্ষস নামে এক অজানা প্রাণী হানা দিয়েছে যে প্রাণীটি কিনা গৃহপালিত পশু এবং মানুষের রক্ত খেয়ে বেড়াচ্ছে তারা এমন তথ্য জানিয়ে মুঠোফোনে এর সত্যতা জানতে চাচ্ছেন।
ফেসবুকে রাক্ষস নিয়ে চলছে নানান আলোচনা ও সতর্কিকরণ বার্তা । মূল ঘটনার উৎপত্তি কুমিল্লা সদর উপজেলার মুরাদপুর এলাকায়। গত ৩ আগস্ট বৃহ¯পতিবার ভোরে ঘুম থেকে উঠে মুরাদপুর এলাকার জহিরুল ইসলাম দেখেন তার ছাগলের খামারের ৪ ছাগল ও ৫টি ভেড়া মৃত পড়ে আছে। এ ঘটনার বর্ননা দিতে গিয়ে জহিরুল ইসলাম জানান, আমি খামারে গিয়ে দেখি মৃত ছাগল ও ভেড়াগুলোর কোনটির ঘাড়, কোনটির পা, কোনটির পেট কোন অজানা মাংসাশী প্রাণী খেয়ে ফেলেছে। তবে কোথাও এক ফোটা রক্তও পড়ে থাকতে দেখিনি অর্থাৎ রক্তসহ খেয়ে ফেলা হয়েছে।
গত ৩ আগস্ট মুরাদপুরে অজানা মাংসাশী প্রাণীর আক্রমণে মারা যায় ছাগল ও ভেড়াগুলো এ ঘটনা জানা জানি হলে ঘটনাস্থল দেখতে আসে শত শত উৎসুক জনতা। গুজব ছড়িয়ে পড়তে থাকে এটি রাক্ষসের কাজ এবং কুমিল্লায় রাক্ষস হানা দিয়েছে। পরবর্তীতে কুমিল্লার লালমাই, বরুড়া, চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম ও ব্রাহ্মণপাড়ায় রাক্ষস হানা দিয়েছে এমন ঘটনা শুনে অন্য এলাকা থেকে মুঠোফোনে জানতে চান পাঠকরা। তবে কেউই তার এলাকায় রাক্ষস হানা দিয়েছে অথবা নিজে সরেজমিনে দেখেছে এমন তথ্য দিতে পারেনি। ফেসবুকেও বিষয়টি নিয়ে অনেক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। অনেকে রাক্ষস হানা দিচ্ছে এমন সতর্কবাণী ও অলৌকিক ঘটনা নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করছেন। বিশেষ করে মানুষ খেয়ে ফেলার একটি ছবি সকলেই পোস্ট করে এটিকে কুমিল্লার বলে দাবি করছে।
ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের হায়দ্রাবাদে চিতা বাঘের আক্রমণে নিহত ব্যাক্তির ছবি যা ২০১৫ সালে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল তবে ভারতের একটি পত্রিকার ওয়েবসাইটে গিয়ে পাওয়া যায় এসব ছবি। ওই পত্রিকায় ২১ এপ্রিল ২০১৫ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয় ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের হায়দ্রাবাদে চিতা বাঘের আক্রমণে এক ব্যাক্তি নিহত হয় এবং চিতা বাঘ ওই ব্যাক্তির বুক এবং পেটের অংশ খেয়ে ফেলে।
ভারতের ওই ছবি কুমিল্লার ছবি বলে অনেকে ফেসবুকে পোস্ট করে দাবি করছেন কুমিল্লায় রাক্ষস এভাবেই মানুষ খেয়ে বেড়াচ্ছে যা স¤পূর্ণ গুজব।
কুমিল্লা জেলার প্রতিটি উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোন অজানা প্রাণী দ্বারা মানুষের উপর আক্রমন হওয়ার কোন ঘটনা এ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। এছাড়া সদর উপজেলার মুরাদপুরের ওই ঘটনার ২০দিন অতিবাহিত হলেও জেলার আর কোথাও এমন ঘটনা ঘটেনি।
একই কথা জানালেন কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন। তিনি জানান, মুরাদপুরে গৃহপালিত পশুর (ছাগল ও ভেড়া) মৃত্যুর একটি ঘটনা ছাড়া জেলার আর কোথাও এধরনের ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। মানুষের উপর আক্রমনের খবর সঠিক নয়। সবাইকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ