Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ ক্ষুদ্র ঋণের এনজিওগুলো

| প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রামবর থেকে : আশ্রয় ও খাবারের খোঁজে যখন বন্যা দুর্গতরা ছুটছেন, তখন তাদের তাড়া করে ফিরছেন এনজিও কর্মীরা। দুর্গত এলাকায় ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ। কাজের সঙ্কট থাকায় বন্ধ হয়ে গেছে আয়। তিন বেলা খাবার যোগাতেই যখন সাহায্যের দিকে তাকিয়ে মানুষ, সেই অবস্থাতেও দুশ্চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি। এভাবেই এনজিও জালে ঘুরপাক খেয়ে নাভিশ^াস উঠেছে বন্যা দূর্গতদের। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ব্রহ্মপূত্র ও তিস্তা নদীর বিস্তীর্ণ অঞ্চল এখন বন্যা কবলিত। পানিতে ডুবে গেছে ফসল, নিচু এলাকায় বাড়িতেও থাকতে পারছে না মানুষ। জরুরি প্রয়োজনে কোনো কাজে অর্থায়নের জন্য ঋুদ্র ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থ নিয়েছিলেন দুর্গতরা। প্রতি সপ্তাহেই শোধ করতে হয় এই ঋণের কিস্তি। আয় থাকলে এই কিস্তি দেয়া তেমন কোনো ঝামেলা হয় না বেশিরভাগ মানুষের কাছেই। তবে টাকার যোগান বন্ধ হওয়ায় এদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। কেউ কেউ কিস্তি দিতে জমানো টাকা ভাঙছে, কেউ বা ধারদেনা করছে, আবার কেউ এনজিওর ঋণ পরিশোধে অন্য এনজিও থেকে ঋণ নিচ্ছে। এতে একটি সংস্থার ঋণ পরিশোধ হলেও আসলে বেড়ে যাচ্ছে ঋণের বোঝা। ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায়ে নি¤œ আয়ের মানুষ দূর্ভোগে পড়লেও বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আর ক্ষুদ্র ঋণ দাতা প্রতিষ্ঠান গুলোর স্থানীয় কর্মীরা নির্দেশনা না থাকায় চাকরির স্বার্থেই জোর জবরদস্তি করে যাচ্ছে এসব বানভাসি মানুষকে। উপজেলার বজরা ইউনিয়নের সাতালস্কর গ্রামের বাসিন্দা হাছনা বানু। বন্যার পানি তার বাড়িতে এখনও। তিন বেলা খাবার জোগাড় করতে পারছেন না। এই অবস্থাতে ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’ হিসেবে দেখা দিয়েছে ক্ষুদ্র ঋণের এনজিও। মানবেতর জীবন যাপনের মধ্যেও এনজিও ‘আশা’ বজরা শাখার মাঠ কর্মী শাহাজাহান আলী কিস্তির টাকার জন্য বার বার তাগাদা দিয়ে হাছনা বানুর কাছে টাকা তুলে নিয়ে গেছেন। মাঠ কর্মী শাহাজাহান আলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ হলে তিনি কিস্তি আদায়ের কথা স্বীকার করেন। আশা বজরা শাখার ব্যবস্থাপক ফজলুল করিমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার ৫ জন মাঠকর্মী আছে। তাদেরকে মাঠে পাঠাই কিস্তি আদায়ের জন্য। যারা কিস্তি দিচ্ছে তাদেরটা নেয়া হচ্ছে আর যারা দিচ্ছে না তাদের কাছে জোড় করে আদায় করা হচ্ছে না। ভারপ্রাপ্ত বজরা ইউপি চেয়ারম্যান ফয়েজ আহমেদ এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার ইউনিয়নে যেসব এনজিও আছে, আমি তাদেরকে বন্যার সময় কিস্তি আদায় না করার জন্য নিষেধ করে দিয়েছি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ