Inqilab Logo

সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪, ১০ আষাঢ় ১৪৩১, ১৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জনবল সঙ্কট ও দায়িত্বে অবহেলায় স্বাস্থ্যসেবা বঞ্চিত উপজেলাবাসী

কালিয়া উপজেলা ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

নড়াইল জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নড়াইলের কালিয়া উপজেলা ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটির চিকিৎসা ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছে। নানাবিধ সমস্যা, চিকিৎসক সঙ্কট, তাদের অবহেলা, সীমাহীন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি। অপরদিকে, কর্মচারীদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হয়। এখানকার বর্তমান চিত্র দেখলে মনে হবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নিজেই যেন বিভিন্ন অনিয়ম আর দুর্নীতির রোগে আক্রান্ত। এদিকে সচেতন মহলের তেমন কোন খেয়াল নেই। জরুরী ও নার্স বিভাগে রোগীদের নিকট থেকে সরকারী টাকা ছাড়াও বাড়তি টাকা নেয়ার ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে কুকুরের বসবাস প্রকট আকার ধারণ করেছে। কর্তৃপক্ষের এদিকে কোন খেয়াল দেখা যায়নি। অফিস সূত্রে জানা যায়, ২১জন চিকিৎসকের স্থলে আছেন মাত্র ৩ জন। গুরুত্বপূর্ণ গাইনী বিভাগে জরুরী ভাবে চিকিৎসা বা অপারেশনের কোন ব্যবস্থা নেই। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যায় উন্নত হলেও ওষুধ সরবরাহ করা হয় ৩১ শয্যার। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইউএইচএ ডাঃ শরীফ শাহবুর রহমান, ডাঃ ফারহানা ইসলাম ও ডাঃ তরিকুল ইসলাম নামে ৩জন চিকিৎসক আছেন। ইউনিয়ন পয্যায় ১৪জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও ডাঃ বাবুরাম মন্ডল, ডাঃ ফারজানা ইসলাম, ডাঃ ফারজানা মুন্নী, ডাঃ নিশাত সুলতানা ও ডাঃ নিশাত খানম নামে ৫জন চিকিৎসক বর্তমান কর্মরত আছেন। এছাড়া ডাঃ সাকিবা বিনতে হান্নান মাতৃত্বকালীন ছুটিতে ছিলেন। তার ছুটি ১৫জুন শেষ হয়েছে। কিন্তু তিনি অদ্যাবধি যোগদান করেননি। অধিকাংশ চিকিৎসক অফিস সময়ে স্থানীয় ক্লিনিকে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। ১৮জন নার্সের মধ্যে আছেন ১৫জন, ২জন সুপার ভাইজার মধ্যে আছেন সবিতা নামে ১জন, তবে তিনি নড়াইলে ডেপুটেশনে আছেন। মিডওয়াইফ ৪টি পদের মধ্যে ১জনও নেই। ল্যাবটরিতে ৩জনের মধ্যে জয়ন্তী দাশ নামে ১জন আছেন। এক্সেরে মেশিনটি দীর্ঘ ৫-৬ বছর নষ্ট বা অকেজো রয়েছে। দেড় বছর আগে আসা আল্ট্রাসনো যন্ত্রটিও শুরু থেকেই নষ্ট। ডেন্টাল বিভাগে শুরু থেকে চিকিৎসক নেই। তবে ইনাম নামে একজন টেকনোলজিষ্ট রয়েছে। তাকে দিয়ে মাতৃকালিন মহিলাদের অফিসিয়াল কাজকর্ম করানো হচ্ছে। ডেন্টাল চেয়ার ও অন্যান্য চিকিৎসার যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেছে। একটি অ্যাম্বুলেন্স, তার বয়স ১৬ বছর। সেটি নড়বড়ে। ফার্মাসিষ্ট ২জনের মধ্যে আশিষ বাগচী নামে ১জন আছেন। তিনি চিকিৎসকদের চিকিৎসা পত্র অনুযায়ী ওষুধ রোগীদের সরবরাহ করেন না মর্মে অভিযোগ রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শরীফ শাহবুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘রোবিবার আমি অফিসিয়াল কাজে বাইরে ছিলাম। ৬০টি ফ্যানের মধ্যে সবগুলোই নষ্ট। নষ্ট ফ্যান ও টয়লেট গুলির বিষয় যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বারবার লিখিত ভাকে অবহিত করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। কালিয়া উপজেলাটি বিচ্ছিন্ন এলাকায় অবস্থিত হওয়ায় এখানে চিকিৎসা সেবার প্রয়োজন বেশী। নতুন করে স্থাপনা নির্মাণ করে চিকিৎসা সেবার মান বাড়াতে হবে। এজন্য অত্র অঞ্চলের সচেতন মহলকে এগিয়ে আসতে হবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ