Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিজস্ব পরিবহনে ভোগান্তির শিকার শিক্ষার্থীরা

| প্রকাশের সময় : ২৩ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মো. আশরাফুল আলম, বাকৃবি থেকে : সম্পূর্ণ আবাসিক ব্যবস্থাসম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি)। যাতায়াতের জন্য রয়েছে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা থাকলেও যথাযথ তদারকি ও অব্যবস্থাপনার কারণে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। পুরোনো সূচিতে বাস চলাচল, শিক্ষার্থীদের বাসে তদারকির অভাব, যথাযথ নিয়ম-কানুন না থাকায় প্রায় প্রতিদিনই অভিযোগ থাকছে শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় হতে সকাল সাড়ে ৬ টায় প্রথম বাসটি ময়মনসিংহ শহরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় এবং রাত ৯ টায় সর্বশেষ বাসটি পুনরায় ফিরে আসে। এর মাঝে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো মোট ১৬ বার আসা যাওয়া করলেও তাদের অনেকগুলো সূচিই বিতর্কিত। এতদিনেও কেনো সূচিতে পরিবর্তন করা হচ্ছে না সে বিষয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে শিক্ষার্থীরা। তাদের অনেকেরই অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ যথাযথ তদারকির ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেই এমন ঘটনা ঘটছে। তাছাড়া, শিক্ষার্থীদেরকে প্রতি সেমিস্টারে বাস কার্ডের জন্য ৭২ টাকা জমা দেয়া হলেও আজ পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীকেই বাস কার্ড প্রদান করা হয়নি। সকালের বাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছেলেমেয়েদেরকে আনা নেয়া করা হয়। বিভিন্ন সময় তাদের কাছে বাস কার্ড চাওয়া না হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে বাস কার্ড চাওয়া হয়। অন্যথায় বিভিন্ন ধরনের অপ্রীতিকর অবস্থার শিকার হয় তারা।
শিক্ষার্থীদের অনেকের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের জন্য আলাদা বাস সার্ভিস চালু থাকলেও কর্মচারীদের জন্য কোনো আলাদা বাস সার্ভিস নেই। আর তাই শিক্ষার্থীদের বাসেই যাতায়াত করেন তারা। এর ফলে বাসের বেশিরভাগ সীটই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের দখলেই চলে যায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাসের ভেতর দাঁড়িয়ে থেকে শহরে যেতে হয়। এমনকি ছাত্রীদেরকেও বেশিরভাগ সময় দাঁড়িয়ে যেতে দেখা যায় যখন কর্মচারীরা বাসের সীটে বসে থাকেন। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, কর্মচারীরা বাসের ভেতরে বসে থাকেন আর মেয়েদেরকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শহরে যেতে হয়। এ নিয়ে তাদেরকে বলা হলে তারা সীট ছাড়তে পারবে না বলে জানায়। অনেক কর্মচারী আবার ২-৫ মিনিটের রাস্তা পারাপারের জন্যও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে সীট দখল করে বসে যায়। অধিকাংশ মেয়েরা তাদের হলের সামনে থেকে বাসে উঠে বিধায় তারা কোনো সীট না পেয়ে বাসে দাঁড়িয়ে যাতায়াত করে।
অনেকেই আবার বলেছেন কর্মচারীদের জন্য আলাদা বাসের ব্যবস্থা করতে। তাহলেই তাদেরকে আর শিক্ষার্থীদের বাসে যাতায়াত করতে হবে না। শিক্ষার্থীদেরও কোনো অভিযোগ থাকবে না। সেই সাথে ক্লাসের সময় অনুযায়ী একটি নতুন বাসের সূচি তৈরি করারও পরামর্শ দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বিকেলে ৪.১০ মিনিট ও ৫.০৫ মিনিটে যে বাসগুলো শহরে যায় তাদেরকেও নতুন সূচির আওতায় আনতে হবে। এতে করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক অর্থ নষ্ট হওয়া থেকে বেঁচে যাবে এবং বাস সার্ভিসের যথাযথ উপকার পাওয়া যাবে। বাসে বহিরাগতদের যাতায়াতে নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও আহŸান জানায় শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. খান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, বেশ কিছুদিন ধরেই অভিযোগগুলো শুনতে পাচ্ছি। তবে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই চেষ্টা করছি পরিবহন শাখার উন্নয়নের জন্য। ইতোমধ্যে বেশকিছু বিষয়ে সাফল্য পেয়েছি আমরা। বাসের সূচিতে পরিবর্তন আনা, কর্মচারীদের আলাদা বাস ব্যবস্থা, বাসে মেয়েদের আসন নিশ্চিত, বাসকার্ড তদারকিসহ বেশকিছু সমস্যা নিয়ে দ্রুত পরিবহন কমিটির সাথে আলোচনা করা হবে। তবে এখন থেকে নিয়মিতই বাসকার্ড চেকিং করা হবে এবং শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ পরিচয়পত্রটিই বাসকার্ডের ভূমিকা পালন করবে। তবে মেয়েদের জন্য বাসে আসন সংরক্ষণের বিষয়টি খুব দ্রুতই ব্যবস্থা করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ