Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কুমিল্লায় কুরবানির পশুহাটে উঠবে তিন লাখ গরু

স্বাস্থ্য পরীক্ষায় থাকবে ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম

কুমিল্লা থেকে সাদিক মামুন : | প্রকাশের সময় : ২৩ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কুমিল্লায় এবারে সাড়ে তিন লাখের বেশি গরু ষোল উপজেলার স্থায়ী ও অস্থায়ী চার শতাধিক কুরবানির পশুর হাটে স্থান পাবে। এসব গরুর সত্তর ভাগই বৈজ্ঞানিক ও আধুনিক পদ্ধতিতে মোটাতাজা করা। যা কুমিল্লার প্রকৃত খামারি, খন্ডকালিন খামারি ও গৃহস্থ পর্যায়ে পালন করা হয়েছে। বাকি ত্রিশভাগ গরুর বিশভাগ মৌসুমী ব্যবসায়ি বা বেপারীদের হাত ধরে উত্তরাঞ্চলের জেলা থেকে আসবে। আর দশভাগ আসবে কুমিল্লার পাঁচ উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে। কুমিল্লার প্রায় ৮৯ হাজার খামারী ও গৃহস্থের হাত ধরে হাটে উঠবে প্রায় তিন লাখ গরু। আর ৫০ হাজারের বেশি গরু আসবে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও সীমান্ত পথে ভারত থেকে। এবারের কুরবানির হাটে গরু সঙ্কট থাকবে না আশা করছেন কুমিল্লার প্রাণী সম্পদ অফিসের কর্মকর্তা। অন্যদিকে ওষুধ বা ইনজেকশনে মোটা তাজা করা নাদুস-নুদুস গরু এবং রোগা, জীর্ণশীর্ণ গরুর বিক্রি রোধ করতে কুরবানির হাটে সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ে থাকবে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম। 

মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আজহা তথা কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে বৈজ্ঞানিক ও আধুনিক পদ্ধতিতে গবাদিপশু ‘হৃষ্ট-পুষ্টকরণ’ প্রক্রিয়ায় কুমিল্লার ষোল উপজেলায় খামারি, খন্ডকালিন ও পারিবারিক পর্যায়ে পালনকারি ৮৮ হাজার ৭১২জন এবারের কুরবানির পশুর হাটে দুই লাখ ৯৪ হাজার ৯৫৪টি গরু তোলার প্রস্তুতি নিয়েছে। এছাড়াও মৌসুমী ব্যবসায়ি ও বেপারীদের হাত ধরে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা ও ভারত থেকে কুমিল্লার সীমান্ত পথে আনা আরও প্রায় ৫০/৬০ হাজার গরু স্থান পাবে হাটগুলোতে। সবমিলে এবারে কুমিল্লার ২৬৩টি স্থায়ী হাট ও দেড় শতাধিক অস্থায়ী পশুর হাটে কুরবানির গরুর সংখ্যা দাঁড়াবে সাড়ে তিন লাখের বেশি। গতবারের তুলনায় এবারে কুমিল্লায প্রায় ১৫ হাজার খামারি, খন্ডকালিন ও পারিবারিক পর্যায়ে পালনকারির সংখ্যা বেড়েছে। গতবছর ঈদের সপ্তাহখানেক আগ থেকে কুরবানির গরুর দাম বেশি থাকলেও ঈদের আগেরদিন দাম পড়ে যায়। এবারে ধারণা করা হচ্ছে বন্যা এবং ভারত থেকে বৈধ-অবৈধ উপায়ে গরু আসায় দাম সহনশীল পর্যায়ে থাকবে। এছাড়াও এবারে পশুর হাটে পর্যাপ্ত গরু ছাগল স্থান পাবে বলে আশা করছেন প্রাণী সম্পদ অফিসের কর্মকর্তারা।
কুমিল্লার প্রাণী সম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারে হৃষ্টপুষ্টকরণ প্রক্রিয়ার আওতায় কুমিল্লার ১৬ উপজেলায় এক লাখ ৯৩ হাজার ৯৫২টি ষাঁড়, ৭৪ হাজার ৩২০টি বলদ, ২৭৬ হাজার ৬৮২টি গাভীসহ দুই লাখ ৯৪ হাজার ৯৫৪টি পশু কুরবানির জন্য বিক্রি করতে হাটে তোলা হবে। এছাড়াও হাটে ছাগল, ভেড়া স্থান পাবে ৫১ হাজার ১২৯টি। কুরবানিকে সামনে রেখে হৃষ্টপুষ্টকরণ প্রক্রিয়ায় এবারে গবাদীপশু লালনে এগিয়ে রয়েছে মুরাদনগর, হোমনা, বরুড়া, নাঙ্গলকোট, দাউদকান্দি, চৌদ্দগ্রাম, দেবিদ্বার, মেঘনা, সদর দক্ষিণ, বুড়িচং, আদর্শ সদর ও তিতাস উপজেলা। কুরবানির হাটে বিক্রির উদ্দেশ্যে কুমিল্লার যেসব খামারি, খন্ডকালিন ও পারিবারিকভাবে এসব ষাঁড়, বলদ, গাভী, ছাগল, ভেড়া পালন করেছেন তাদেরকে হৃষ্টপুষ্ট করার বিষয়ে পরামর্শসহ সবধরণের সহযোগিতা দিয়েছেন কুমিল্লা জেলা প্রাণী সম্পদ অফিসের ও উপজেলাসহ মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারিরা।
কুমিল্লার প্রাণী সম্পদ অফিসের কর্মকর্তা ডা. আবদুল মান্নান বলেন,‘কুমিল্লা অঞ্চলের হৃষ্টপুষ্ট প্রায় তিন লাখ গবাদীপশু এবারে কুরবানির হাটে উঠবে। এসব গবাদীপশুর অধিকাংশই শংকর জাতের। এছাড়া মৌসুমী ব্যবসায়িরাও দেশের অন্যান্য জায়গা থেকে কুমিল্লার হাটগুলোতে প্রচুর গরু তুলবে। তাই আশা করা হচ্ছে, হাটে এবার গরুর সঙ্কট দেখা দেবে না। আরেকটি বিষয়ে এবার আমরা বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি, এটি হচ্ছে হাটে যাতে কোন অবস্থাতেই রোগা, জীর্ণশীর্ণ এবং নিষিদ্ধ পাম্প ট্যাবলেট, স্টেরয়েড ও ডেক্সামিথাসনের মতো ভয়ঙ্কর ক্ষতিকারক ওষুধ, ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে মোটা-তাজা করা নাদুস-নুদুস গরু বিক্রি করতে না পারে। এধরণের গরু বিক্রিরোধে হাটগুলোতে ৬৮টি ভেটেনারী মেডিকেল টিম সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ