Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

চাঁদপুরে মেঘনার ভাঙনে ২৮০ পরিবার গৃহহীন

উজানের নেমে আসা পানির প্রবল স্রোতে পদ্মা-মেঘনা উত্তাল

চাঁদপুর থেকে বি এম হান্নান : | প্রকাশের সময় : ২৩ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

উজানের নেমে আসা পানির প্রবল স্রোতে পদ্ম-মেঘনা উত্তাল হয়ে উঠেছে। প্রমত্তা মেঘনার করাল গ্রাসে চাঁদপুর সদরের ৪টি গ্রামের প্রায় দেড়শ’ বসতবাড়ি নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। একইভাবে হাইমচর উপজেলায় ১৩০টি বসতবাড়ি মেঘনায় বিলীন হয়েছে। এখনো ঝুঁকিতে রয়েছে পাঁচ শতাধিক পরিবার। ভূমিহীনদের আবাসস্থল লগিগমারা বন্যা আশ্রয়ন কেন্দ্র ভাঙনের মুখে পরায় ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে।
চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলার চরাঞ্চলে উজানের পানির তীব্র স্রোতে ২শ’ ৮০ বসতঘর পদ্মা-মেঘনা নদীতে তলিয়ে যাওয়ায় ত্রান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে রোববার দুপুরে। চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ডাঃ দীপু মনি। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, উজানের পানিতে চাঁদপুরে যেসব চরাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, তাদেরকে সহযোগিতা দেয়া হয়েছে। কোন কারণে বন্যা দেখা দিলে তা মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছি। আমরা দলীয়, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ সকলকে নিয়ে দুর্যোগ মোকাবেলা করবো। দুর্যোগকালে এবং পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্থ ও প্রসূতি মায়েদের স্বাস্থ্যসেবা এবং নিরাপত্তার বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ ব্যবস্থা নিবেন। এছাড়া হাইমচর উপজেলায় মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ের মানুষের উদ্ধারের জন্য রেসকিউ বোট খুবই জরুরি। এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করা হবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের ৪টি গ্রামে মেঘনার ভাঙনের মুখে দেড় শতাধিক বাড়ি-ঘর ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। পদ্মা-মেঘনার স্রোতে ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের গোয়াল নগর চোকদার কান্দি, ৬নং ওয়ার্ডের লগিগমারা চরের বেপারী কান্দি ও বালিয়ার চরের দেওয়ান কান্দি গ্রাম ভাঙনের কবলে পড়েছে। গ্রামগুলোর বহু বাড়ি ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। বাকি বাসিন্দারা তাদের টিনের তৈরী ঘর নিজেরাই সরিয়ে নিচ্ছে।
৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার সফিক কুড়ালি জানায়, শনিবার রাত ১২টার পর থেকে ভাঙনের তীব্রতা বেড়ে যায়। এক রাতেই এই গ্রামের ৫০টি বসতঘর নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। বেপারী কান্দির নদীতে বিলিন হওয়া হাজি কুদ্দুস আলী বেপারী জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আল-আমিন জানায়, রাত ১২টার পর থেকে ভাঙন বাড়তে থাকে। কিছুক্ষনের মধ্যেই মসজিদটি নদীতে বিলিন হয়ে যায়। প্রতি ওয়াক্তে এ মসজিদে গ্রামের প্রায় অর্ধশতাধিক মুসল্লি নামাজ আদায় করতো।
রাজরাজেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান হাজি হযরত আলী বেপারী জানান, এক সপ্তাহ ধরে উজানের নেমে আসা পানির স্রোতে পদ্ম-মেঘনা উত্তাল হয়ে উঠে। এতে করে প্রতিবছরের মতো এবারো ভাঙন দেখা দেয়। এ পর্যন্ত ইউনিয়নের ৪ টি গ্রামের প্রায় দেড়শ’ বসতবাড়ি নদীতে বিলিন হয়ে গেছে। এখনো পাঁচ শতাধিক পরিবার ঝুঁকিতে রয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা বলেন, দেশের উত্তরে বেশ কিছু জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। ওইসব জেলার বন্যার পানি নেমে আসায় পদ্ম-মেঘনায় পানির স্রোত বেড়ে গেছে। খবর পাওয়ার সাথে সাথে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে শুকনো খাবার ও ঔষধ বিতরণ করেছি। যারা ক্ষতিগ্রস্ত গৃহহীন তাদের নামের তালিকা করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে সকলকেই সহায়তা প্রদান করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ