রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সিলেটকে পর্যটন নগরী গড়ার প্রত্যয় ছিল, সংশ্লিষ্টরা ঘোষণাও দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবতা চরম হতাশাজনক। পর্যাপ্ত বিনোদনের কোন ব্যবস্থা নেই এই নগরীতে। দেশ বিদেশে ছড়িয়ে থাকা সিলেটি প্রজন্মও দেশে এসে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে। অভিভাবকরাও হন বিব্রত। সে কারনে ছেলে-মেয়েদের দেশে নিয়ে আসতে অনেকর অনিহা। বিনোদন, অবকাশ উপভোগের কিছুই নেই। দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। অথচ প্রকৃতি ছিল বিনোদনের পক্ষে। সুষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় লোকদের বিনিয়োগের সুযোগ দিলে হয়তো বিনোদন ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটতো সিলেটে। বিশেষ করে সিলেট নগরীতে গড়ে উঠতে পারতো কাংখিত বিনোদন স্পষ্ট। এতে করে মানুষের আর্থিক সফলতার পাশাপাশি চিত্ত বিনোদনেরও পথ উম্মুক্ত হতো। নগরী হতো জনবান্ধব। সিটি কর্পোরেশনের মালিকানাধীন তিনটি পার্ক থাকলেও নেই সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনা। অথচ কর্তৃপক্ষ যেন নিধিরাম সর্দার। নগরীর ধোপাদিঘীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত ওসমানী শিশুপার্ক। পার্কটি সিটি কর্পোরেশনের হলেও বর্তমানে পরিচালিত হয়ে আসছে ব্যক্তিমালীকানায়। বিনোদন প্রেমীদের জন্য সপ্তাহের সাতদিনই পার্কটি খোলা থাকলেও তাতে কাংখিত বিনোদন মিলছেনা। এর অন্যতম কারন স্থান সংকুলান না হওয়া। বিশেষ করে ছুটির দিনে অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা না থাকায় শিশুদের নিয়ে সকলেই এখানে আনন্দ খুঁজতে আসে। কিন্তু মান বা সুষ্ট পরিকল্পনা প্রশ্নবিদ্ধ। সিলেট সার্কিট হাউজের পাশেই জালালাবাদ পার্ক এর অবস্থান। সংস্কারের অভাবে পার্কটি তার সৌন্দর্য হারিয়ে ফেলেছে। একটু নিরিবিলি বসার মত পরিবেশ নেই সেখানে। বিকেলে অল্প সময়ের জন্য গেইট খোলা হলেও দেখা যায় অবাঞ্চিত নারী পুরুষের আনাগোনা। সন্ধ্যা হলেই হেরোইনসেবীদের আড্ডাখানায় রূপ নেয় পার্কটি। ফলে অনেকের ইচ্ছে থাকলেও পার্কটিতে প্রবেশ করেন না। চার দলীয় জোট সরকারের আমলে দক্ষিণ সুরমার আলমপুরে ৩ একর ৭৭ শতক জায়গার ওপর একটি শিশুপার্ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। পার্কের নামকরণ করা হয় ও সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের নামে। মূলত তার ঐকান্তিক ইচ্ছায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছিল সিলেট সিটি করপোরেশন। পার্কটির নামের সাথে ‘এম সাইফুর রহমান’ নাম জুড়িয়ে থাকার কারনে সংস্কার ও আধুনিকায়নের ব্যাপারে বর্তমান কর্তৃপক্ষ একেবারেই উদাসীন। দম বন্ধ হয়ে আসা লোকজন নগরীর মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরমা নদীর উপর নির্মিত শাহজালাল ব্রিজ-৩ এ ফুটপাত বসে অনেকেই বিনোদন খুঁজেন। সেখানে প্রতিদিন বিকেল হলেই ভিড় করেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। লিডিং ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী সাহেদ শান্ত জানান, এমনিতেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি। ক্যাম্পাস নেই। একটু খোলামেলা আড্ডা দেয়ারও জায়গা নেই। ফলে বিকেল হলেই আমরা ব্রিজে চলে আসি। ব্রিজটিকে অনেকেই সেলফি ব্রিজ নামে ডাকেন। হযরত শাহজালাল (রহঃ) এর মাজার জিয়ারতে আসা ভক্ত আব্দুল মালিক জানান, সুরমার ঐ ব্রিজে আসলে সহজেই বুঝা যায় সিলেট নগরীর লোকজন কতটা বিনোদন বঞ্চিত। অপরদিকে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত নগরীর অভ্যন্তরে একটি পার্ক তৈরির আশ্বাস দিয়েছেন। এর জন্য জেল রোডস্থ পুরাতন জেলখানা বেছে নিয়েছেন। শহরতলীর বাদাঘাটে জেলখানাটি স্থানান্তর হলেই নতুন পার্ক স্থাপনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এখন কেবল দেখার অপেক্ষা। এব্যাপারে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবিব জানান, জালালাবাদ পার্কটির সংস্কার কাজ খুব শীঘ্রই শুরু হবে, পার্কের চারিদিকে সীমানা প্রাচীর তুলে দেয়া হবে এজন্য অর্থও বরাদ্দ করা হয়েছে। আলমপুরের পার্কটির উন্নয়নের ব্যাপারেও কাজ চলছে বলে জানান তিনি। সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজ বলেন, আমরা পার্কগুলো মান সম্পূন্ন করার চেষ্টা করছি। কিন্তু নানাবধি জটিলতা অনেক কিছুই সম্ভব হয়ে উঠে না। সুজন সিলেটের প্রেসিডেন্ট ফারুক মাহমুদ বলেন, বিনোদন ক্ষেত্রে আমরা কত পেছনে সিলেট দেখলে তা বুঝা যায়। অথচ আমাদের টাকা ছিল, অভিজ্ঞ লোক ছিল। প্রয়োজনে প্রবাসীদের উদ্যোগী করতে পারলে বিনোদন নগরী হতে পারতো সিলেটে। সিলেটে বসে বিশ্ব মানের রাইডসহ নানা রকম স্বাপ্নিক বিনোদন উপভোগ করতে পারতাম আমরা। রাগিব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা: রুহুল আমীন বলেন, মানুষ যদি বিনোদন বঞ্চিত হয়, তাহলে তার মানসিক রোগ স্বাভাবিক। আমরা সেই অবস্থায় আছি। অবস্থা উত্তরনে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ খুবই দরকার। শুধু অন্য কিছুর মতো হাসপাতাল, ক্লিনিক গড়ে উঠছে সিলেটে, কিন্তু মানুষকে ভালো করা নয়, ভালো রাখার উদ্যাগ বড়ই অপ্রতুল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।