পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নিন্ম আদালতের দেয়া দন্ড উচ্চ আদালতে বহাল থাকবে -রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী
বহুল আলোচিত নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলায় নিম্ন আদালতের দেয়া রায় বহাল থাকবে কি না তা জানা যাবে (মঙ্গলবার) ১৩ আগস্ট। মামলার বিষয়ে এ দিন হাইকোর্টের রায় ঘোষণা করা হবে। বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিং ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করবেন। এদিকে রাস্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেছেন, দিনে দুপুরে মানুষকে অপহরণ করে নিয়ে যেভাবে মেরে ফেলা হয়েছে, যে কায়দায় মারা হয়েছে তার দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যাবে না।
এটা ক্ষমার অযোগ্য। আমি আশা করব নারায়ণগঞ্জের বহুল আলোচিত সাত খুনের মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া দন্ড হাইকোর্টে বহাল থাকবে। এই শাস্তিটা বহাল থাকা প্রয়োজন্ জনগণ বুঝবে আইনের উর্ধ্বে কেউ না। এসব আদালতে উপস্থাপনা করেছেন বলে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন। আসামিদের ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদন্ড অনুমোদন) ও আপিলের ওপর শুনানি শেষে গত ২৬ জুলাই রায় ঘোষণার জন্য ১৩ আগস্ট দিন ধার্য করে আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। তবে সেদিন রায় ঘোষণা না করে নতুন এ দিন ধার্য করেন।
সাত খুন মামলায় নিন্ম আদালতের মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামিদের নথিপত্র হাইকোর্টে এলে প্রধান বিচারপতির নিদের্শে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই মামলার পেপারবুক প্রস্তুুতসহ বিচারকার্য সম্পন্ন করা হয়। প্রধান বিচারপতি অনুমোদন দিয়ে হাইকোর্টে একটি বেঞ্চে পাঠানো হয়। সেখানেই এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে দ্রত সময়ের মধ্যে বিজি প্রেস থেকে এই পেপার বুক সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো হয়। পেপার বুকটি প্রায় ছয় হাজার পৃষ্ঠার। সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মো. সাব্বির ফয়েজ এস তথ্য জানান।
এর আগে গত ৩০ ও ৩১ জানুয়ারি নূর হোসেন, তারেক সাঈদসহ আসামিরা খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন। চলতি বছর ৮ ফেব্রুয়ারি সাত খুন মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত নূর হোসেনসহ আসামিদের নিয়মিত ও জেল আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। এসময় একই সঙ্গে নূর হোসেন ও আরিফের আইনজীবী এস আর এম লুৎফর রহমান আকন্দ বলেন, শুনানির জন্য আপিল গ্রহণ করেছেন আদালত। আদালত বলেছেন, আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের ওপর একসঙ্গে শুনানি হবে। গত ২২ মে সাত খুন মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়। শুনানি শুরু হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েক দিন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাদের যুক্তি উপস্থাপন করেন। গত ১৩ জুলাই রাষ্ট্রপক্ষের আনা যুক্তি উপস্থাপন শেষ করে। পরে রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। শুনানিতে অ্যাটর্নি বিচারিক আদালতের দেয়া রায় বহাল রাখার আর্জি জানিয়েছেন। তিনি আদালতে বলেন, এই হত্যাকান্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত। তাই মামলার রায়ের মধ্য দিয়ে যেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি মানুষের আস্থা ফিরে আসে। তিনি আরও বলেন, এ হত্যাকান্ডের নাটের গুরু নূর হোসেন। তাই তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হতে হবে। তিনি এ হত্যাকান্ডের রায়ে দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রত্যাশা করেন।
সাত খুনের মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া দন্ড হাইকোর্টে বহাল থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, আদালতে বলেছি-যে ধরনের খুন এরা করেছে এটা ক্ষমার অযোগ্য। দিনে দুপুরে মানুষকে অপহরণ করে নিয়ে যেভাবে মেরে ফেলা হয়েছে, যে কায়দায় মারা হয়েছে তার দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যাবে না। বস্তাবর্তি ইট, বালু লাশের সাথে বেধে তাদের ডুবিয়ে দেয়া হয়েছে। এই উদ্দেশ্যে যেন এই হত্যাকান্ডের যাতে কোন নিশানাও না পাওয়া যায় এবং লাশ যাতে কোনভাবে ভেসে না উঠে। এ ধরনের প্রিপ্ল্যান এবং সিস্টেমেটিক মার্ডার বাংলাদেশে এ রকম হয়েছে বলে তার জানা নেই। শুনানি শেষে গত ২৬ জুলাই অ্যাটর্নি জেনারেল নিজ কার্যালয়ে এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, এদেরকে মারতে হবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে সাত দিন আগে। টিম ঠিক করা হয়েছে সাত দিন আগে। যে দিন তাদের মারার জন্য ধরা হবে সে দিন যে সমস্ত নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের দিয়ে কাজ করানো হবে তাদের নিয়ে গাড়ি রওয়ানা হয়েছে। তিনি বলেন, এই শাস্তিটা বহাল থাকা প্রয়োজন্ জনগণ বুঝবে আইনের উর্ধ্বে কেউ না। সে যে বাহিনীরই হোক, যে লোকই হোক না কেন। এটা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার একটি প্রথম পদক্ষেপ। আইনের চোখে সবাই সমান। সে যেই হোক।
২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নাসিক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজন। তিনদিন পর ৩০ এপ্রিল শীতলক্ষ্যা নদীতে একে একে ভেসে ওঠে ছয়টি মরদেহ। পরদিন মেলে আরেক জনের মরদেহ। নিহত অন্যরা হলেন নজরুলের বন্ধু মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম, লিটন, গাড়িচালক জাহাঙ্গীর আলম ও চন্দন সরকারের গাড়িচালক মো. ইব্রাহীম। ঘটনার একদিন পর নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বাদী হয়ে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা নূর হোসেনসহ ছয়জনের নাম উল্লেখ করে ফতুল্লা মডেল থানায় মামলা করেন।
গত ১৬ জানুয়ারি সাত খুন মামলার রায় দেন নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন। মামলার প্রধান আসামি নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর নূর হোসেন ও র্যাবের বরখাস্তকৃত তিন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাসুদ রানাসহ ২৬ জনকে মৃত্যুদন্ড দেন আদালত। এ মামলার ৩৫ আসামির মধ্যে বাকি ৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড দেয়া হয়। সাজাপ্রাপ্ত ৩৫ আসামির মধ্যে ১২ জন পলাতক। গ্রেফতারকৃত ২৩ জনের মধ্যে ১৮ জনকে নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে ও পাঁচজনকে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ২৬ জনের মধ্যে গ্রেফতার ও আত্মসমর্পণ করে কারাগারে থাকা ২০ জন নিয়মিত জেল আপিল করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।