Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাড়ছে না ঈদুল আজহার ছুটি

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

তিন মন্ত্রণালয়ে কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের অনেকেই আশা করেছিলেন এবারের ঈদে সরকারি ছুটি তিনদিন থেকে বাড়িয়ে ছয়দিন করা হবে। গতকাল সোমবার মন্ত্রীসভায় এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে এমনও গুঞ্জন ছিল। কিন্তু ঈদের ছুটি বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভায় কোনো আলোচনা হয়নি। আগের নিয়মে ঈদুল আজহার ছুটি তিনদিনই বহাল থাকছে।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহার আগে আগামী ২৮ আগস্ট মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক হওয়ার কথা আছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রিসভায় এক অতিরিক্ত সচিব বলেন. দেশের ভায়াবহ বন্যা চলছে। এ কারণে দেশের সড়ক পথ এবং রেল যোগাযোগের অবস্থা খুবই করুণ এ বিষয় বিবেচনা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আগামী সোমবার ঈদুল আজহার ছুটি বাড়াতে পারেন। এমন সম্ভবনা উড়ে দেয়া যায় না। এদিকে দেশে ভয়াবহ বন্যার কারণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঈদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া ডিসি ও উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত সভা হয়। ঈদুল আজহার ছুটি বাড়ছে কিনা, তা নিয়ে গুঞ্জন থাকলেও এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভায় কোনও আলোচনা হয়নি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ঈদে সরকারি ছুটি ছয় দিন করাসহ অন্যান্য ধর্মীয় উৎসবে ছুটি বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রস্তাব দেয়া হয়।। গতকাল প্রধানমন্ত্রী যদি সম্মতি দেনি। ফলে বিষয়টি এখনো অনিশ্চয়তার মধ্যেই আছে। তবে সরকারি কর্মকতারা অচ্ছিক ছুটি নিতে পারবে এমন গুনঞ্জন উঠেছে প্রশাসনে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য পাওয়া গেছে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২ সেপ্টেম্বর ঈদ হতে পারে। বর্তমানে ঈদের সরকারি ছুটি তিন দিন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ইনোভেশন ইউনিটের প্রস্তাবনা অনুযায়ী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ছুটি বাড়াতে গত জুলাই মাসে এই প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। প্রস্তাবে ইনোভেশন ইউনিটের দেওয়া বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরে বলা হয়, পবিত্র ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার ছুটিতে ঢাকাসহ অন্য বড় শহরগুলো থেকে সরকারি- বেসরকারি চাকরিজীবীসহ বেশির ভাগ মানুষ ঈদ উদ্যাপনের জন্য গ্রামের বাড়ি বা নিজ শহরে যান। কিন্তু ছুটি সীমিত থাকায় পরিবহনের ওপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ, দুর্ঘটনা বৃদ্ধিসহ দূরপাল্লার যাত্রাপথে দীর্ঘ জটের সৃষ্টি হয়। এতে মানুষকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। মারাত্মক দুর্ঘটনায় অনেক প্রাণহানিও ঘটে। আবার ঈদ শেষে অফিস খোলার পরবর্তী দু-এক দিন সরকারি- বেসরকারি কার্যালয়ে কর্মচারীরাও ঠিকমতো উপস্থিত থাকেন না। সার্বিক বিবেচনায় বিভিন্ন প্রধান ধর্মীয় উৎসবের সময় সরকারি ছুটি বাড়ানো হলে জনদুর্ভোগ লাঘব হবে। পাশাপাশি ছুটি বাড়লে উৎসবের আগে ও পরে যাত্রাপথে জনদুর্ভোগ ও দুর্ঘটনায় প্রাণহানি কমবে। উৎসব পালনও স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে।
এসব বিবেচনায় নৈমিত্তিক ছুটি বিদ্যমান ২০ দিন থেকে কমিয়ে ১৪ দিন করে বাকি ছয় দিন দুই ঈদের ছুটির সঙ্গে তিন করে সমন্বয় করতে প্রস্তাব করা হয়। তবে সে ক্ষেত্রে ঈদের সঙ্গে ঐচ্ছিক ছুটি বাতিল হবে। এ ছাড়া অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের প্রধান দুটি ধর্মীয় উৎসবের সরকারি ছুটির সঙ্গে দুদিন করে চার দিন ঐচ্ছিক ছুটির প্রস্তাব করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো প্রস্তাবে যুক্তি হিসেবে আরও বলা হয়, পবিত্র ঈদে ছুটি বাড়ানো হলে মোট ছুটির সময় ঠিক থাকবে। ফলে সরকারি কার্যক্রমের জন্য সময় কমবে না। এতে সরকারি কাজেরও ক্ষতি হবে না। অন্য ধর্মের মানুষদের জন্যও ছুটির ভারসাম্য থাকবে।
মন্ত্রিপরিষদ সভায় বিষয়টি এজেন্ডাতেই ছিল না বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সংস্কার ও সমন্বয়) এম এন জিয়াউল আলম। তিনি বলেন, ঈদআসন্ন ঈদুল আজহার ছুটি বাড়ছে কিনা, তা নিয়ে গুঞ্জন থাকলেও এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভায় কোনও আলোচনা হয়নি। সচিব বলেন, নির্বাহী আদেশে ঈদের ছুটি বাড়ানো নিয়ে মন্ত্রিপরিষদের সভায় কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা। জবাবে সচিব জিয়াউল আলম বলেন, ঈদের ছুটির বিষয়টি সভার এজেন্ডায় ছিল না। ফলে সরকারি ছুটি বাড়ানো-কমানোর নির্বাহী আদেশ নিয়ে সভায় কোনও ধরনের আলোচনা হয়নি। সচিব আরো বলেন, দেশের চলমান বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও মন্ত্রী বা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে আলাদা কোনও নির্দেশনা দেননি প্রধানমন্ত্রী। আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহার আগে আজ সোমবার ও ২৮ আগস্ট মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক হওয়ার কথা আছে। গত কয়েক বছর ধরেই ঈদের ছুটি বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। এর আগে ২০১০ সালেও একবার ঈদের ছুটি পাঁচ দিন করার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু পরে তা নাকচ হয়ে যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ