Inqilab Logo

রোববার, ১৬ জুন ২০২৪, ০২ আষাঢ় ১৪৩১, ০৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

জঙ্গিবাদ নির্মূলে প্রয়োজন সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গীকার আইজিপি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পুলিশের মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে সামাজিক অঙ্গীকারের পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গীকারও প্রয়োজন ।
গতকাল দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে ৮ম জাতীয় বিতর্ক বিকাশ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আইজিপি বলেন, হলি আর্টিজানের ঘটনার পর সারাদেশে জঙ্গিদের সঙ্গে আরও ২৩টি সম্মুখ যুদ্ধের ঘটনা ঘটলেও এখনও জঙ্গিবাদ নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। জঙ্গিবাদ নির্মূলে শুধু আইনের ব্যবহার নয়, একই সঙ্গে ব্যাপক সামাজিক সচেতনতা তৈরির প্রয়োজন রয়েছে। নতুন করে যাতে আরও জঙ্গি তৈরি না হয়, সেজন্য পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন সবাইকে কাজে লাগাতে হবে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অন্যরকম সিগন্যালের কারণেই এর আগে ‘জজ মিয়া’ নাটক তৈরি হয়। ফলে মূল ঘটনা উদঘাটিত হয়নি। যা জঙ্গিবাদকে আরও উৎসাহিত করেছে।
আইজিপি আরও বলেন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে শুধু সামাজিক অঙ্গীকার নয়, রাজনৈতিক এবং সামাজিক এই দুটো অঙ্গীকারকেই কাজে লাগাতে হবে। রাজনৈতিক অঙ্গীকার কাজে না লাগানো গেলে প্রশাসনযন্ত্র অচল হয়ে যাবে। যারা ক্ষমতায় থাকবে এবং যারা ক্ষমতার বাইরে থাকবে, তাদেরও প্রেসার গ্রæপ হিসেবে জঙ্গি প্রতিরোধে এগিয়ে আসতে হবে। যারা ক্ষমতায় থাকবে, তাদের আন্তরিকতা থাকলে প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনী যথাযথ ভূমিকা পালন করে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে সক্ষম হবে।
আইজিপি বলেন, জঙ্গিবাদকে উসকে দেওয়ার ক্ষেত্রে কোরআন ও হাদিসের অপব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে। এটি প্রতিরোধে তরুণদের সামনে সঠিক ব্যাখ্যা তুলে ধরা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে পারিবারিক, সামাজিক অঙ্গীকার ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো বড় ভূমিকা রাখতে পারে। যে কারণে আমরা কেবল আইনশৃঙ্খলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকিনি। ধর্মীয় নেতাদেরও পরামর্শ নিয়েছি। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, শিক্ষক সবাইকে সম্পৃক্ত করে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জঙ্গিবাদ নিরসনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহযোগিতা করা নাগরিক দায়িত্ব। একইসঙ্গে জঙ্গিবাদ নির্মূল করতে গিয়ে যাতে কোনও নিরাপরাধ ব্যক্তি বা তাদের পরিবার হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
তিনি বলেন, জঙ্গিদের দমনে গ্রেফতার, জেলহাজত বা হত্যা কোনও সমাধান নয়। জঙ্গিবাদ থেকে ফিরিয়ে আনতে বিপদগামী তরুণদের কাউন্সিলিং, সৃজনশীলতা, বৃত্তিমূলক শিক্ষা, খেলাধূলা, বিতর্ক প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে তাদেরকে নিয়োজিত রাখতে হবে। ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে দারিদদ্র কিংবা বেকারত্বের সুযোগ নিয়ে যাতে কেউ তরুণদের আত্মঘাতী পথে নিয়ে যেতে না পারে, তার জন্যে পিতা-মাতা, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম, ইসলামি স্কলার, জনপ্রতিনিধিসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফাইনালে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ করিমউদ্দিন পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় শেরপুরের নকলার নয়াবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়কে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। শ্রেষ্ঠ বক্তা হন আফিয়া জাহিন। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলসহ অংশগ্রহণকারীদের ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, এবারের ৮ম জাতীয় বিতর্ক বিকাশ প্রতিযোগিতায় ৩ হাজার ৫০০টি স্কুল অংশগ্রহণ করে। এছাড়া গত ৯ বছরে সারাদেশের ১৬ হাজার ৫শ’ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ২ লাখ ২০ হাজার বিতার্কিক অংশগ্রহণ করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইজিপি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ