রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে: কুরবানীর ঈদের পশুর চামড়ার কেনাবেচা নিয়ে এবারো লোকসানের মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন কুমিল্লার মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়িরা। গতবছর চামড়া বেচাকেনায় মূল ব্যবসায়িরা ভালো মুনাফা করলেও লাভের মুখ দেখেননি মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়িরা। কুরবানীর পশুর চামড়ার মূল্য নিয়ে এরিমধ্যে সিন্ডিকেটের লোকজন সক্রিয় হয়ে উঠেছে। সিন্ডিকেটের হাবভাবে এবারের কুরবানীতেও মুনাফা বঞ্চিতের আশঙ্কা করছেন কুমিল্লার ক্ষুদ্র ও মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়িরা।
প্রতিবছর কুরবানী এলেই কুমিল্লাতে সিন্ডিকেটধারি ব্যবসায়িরা চামড়ার বাজার বেসামাল করে তোলে। আর তখন চামড়ার ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়িরা লোকসানের মুখে পড়েন। যার প্রভাব স্থানীয় বড়মাপের চামড়া ব্যবসায়িদের ওপর পড়ে। গতবছর চামড়া কেনাবেচা নিয়ে কুমিল্লায় একাধিক সিন্ডিকেটের অপতৎপরতায় চামড়ার নির্ধারিত দর ঠিক থাকেনি। চামড়া কেনাবেচা নিয়ে দেখা দেয় হযবরল অবস্থা। কুমিল্লায় চামড়া ব্যবসায়িদের সাইনবোর্ড সর্বস্ব সমিতি থাকলেও হযবরল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তারা কোন পদক্ষেপ নিতে পারেনি। যার ফলে ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়িদের অনেকেই চামড়া কিনে লাভের মুখ তো দূরের কথা লোকসানে পড়ে রাগে ক্ষোভে সিন্ডিকেটধারিদের গালমন্দ করেছেন। এবারেও চামড়া কেনা বেচার মূল্যদর নিয়ে মৌসুমী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়িরা দোটানায় পড়েছেন, তারা চামড়া ব্যবসার জন্য প্রস্তুতি নেবেন কিনা সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারছেন না। তবে ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়িরা এবারে সিন্ডিকেটের হাঁড়ির খবর বের করার জন্য নিজেরাই সংঘবদ্ধ হচ্ছেন।
কুমিল্লা জেলায় চামড়া বেচাকেনার অন্যতম এলাকা হলো নগরীর গাংচরের ঋষিপট্রি ও লাকসাম উপজেলার দৌলতগঞ্জ বাজার। এছাড়াও বুড়িচংয়ের ময়নামতি বাজার, বুড়িচং বাজার, সদর দক্ষিণের সুয়াগঞ্জ, চৌদ্দগ্রামের মিয়াবাজার, চৌদ্দগ্রাম বাজারে চামড়া বেচাকেনার ব্যবস্থাস্থল গড়ে উঠেছে। ঢাকার চামড়া ব্যবসায়িদের তিনটি সংগঠন কুরবানীর গরুর লবণযুক্ত চামড়ার দাম রাজধানীর বাইরে প্রতি বর্গফুট কতো টাকা হবে তা প্রতিবছর নির্ধারণ করে দিলেও এধরণের দাম মূলত মানা হয়না। কারণ ঈদের দিন সকাল থেকেই চামড়ার বাজার মূল্য নিয়ে কারসাজি শুরু করে সিন্ডিকেট। ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়িরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে কুরবানীদাতাদের কাছ থেকে সিন্ডিকেটের ফাঁদে পড়ে গরুর চামড়া বেশিদামে কিনে এনে স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়িদের কাছে হয় ক্রয়মূল্যে নয়তো লোকসান দিয়ে বিক্রি করতে হয়। কুমিল্লার কয়েকজন চামড়া ব্যবসায়ির সাথে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকার আড়তদাররা ঈদের আগে প্রতি বর্গফুট চামড়ার বাজার দর যা নির্ধারণ করে দেন ঈদের পরে সেই দর কমে যায়। তখন ঢাকার আড়তে চামড়া বিক্রি করার ক্ষেত্রে দরদাম নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় স্থানীয় ব্যবসায়িদের। গতবছর কুমিল্লার চামড়া ব্যবসায়িরা নিজেদের মতো দরদাম ঠিক করে ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়িদের কাছ থেকে চামড়া কিনেছেন। যার ফলে পরবর্তীতে লবণযুক্ত চামড়া ঢাকায় আড়তে বিক্রি করে মুনাফা গুনেছেন। স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়িদের অভিযোগ ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়িরা চামড়ার বাজারদর সম্পর্কে কোন খোঁজখবর না নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে বা দাদন বসিয়ে বেশিদামে চামড়া কিনেছে। কিন্তু স্থানীয় ব্যবসায়ি বা আড়তদাররা নিজেদেরকে লোকসান থেকে রক্ষা করতে গতবছর হিসেবনিকেশ করেই চামড়া কিনেছে। অন্যদিকে ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, স্থানীয় ব্যবসায়ি ও আড়তদাররাই সিন্ডিকেট করে গতবছর চামড়ার বাজারদর কমিয়ে ক্ষুদ্র ও মৌসুমী ব্যবসায়ীদের মধ্যে হাহাকার ফেলেছে। এবারো তারা আগের ফন্দি আঁটছে।
এদিকে এবারো সক্রিয় হয়ে উঠেছে চামড়া পাচার সিন্ডিকেট। প্রতিবছরই ভারতীয় চামড়া ব্যবসায়ি সিন্ডিকেট এখানকার সিন্ডিকেটের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে আত্মীয়স্বজন বা পরিচিতিদের মাধ্যমে চামড়া সংগ্রহের জন্য কোটি কোটি টাকা লগ্নি করে থাকে। এবারেও এধরণের চামড়া পাচারের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়িরা। অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চামড়া পাচার সিন্ডিকেট ইতিমধ্যে সীমান্ত ঘেঁষা ও আশপাশের এলাকা থেকে চামড়া ক্রয়ের জন্য দালাল নিয়োগের প্রক্রিয়া অনেকটা সম্পন্ন করেছে। এখানকার বাজারের চেয়ে ভারতের বাজারে চামড়ার দর বেশি হয়ে থাকে বলেই চামড়া পাচার সিন্ডিকেট প্রতিবছর কুরবানী এলেই বাজারদর বেসামাল করার পায়তারায় লিপ্ত হয়ে থাকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।