পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতীয় গরুর প্রবেশ বন্ধে সচিবকে চিঠি দিয়েছেন প্রাণী সম্পদ মহাপরিচালক
আর্থিক অসচ্ছলতায় গৃহস্থ পরিবারগুলো জন্মাবার ছয়মাস থেকে এক বছরের মধ্যেই বেশীরভাগ বাছুর বিক্রী করে দেয়ায় এবার দক্ষিণাঞ্চলে কোরবানীর পশুর জন্য দেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের খামারী ও গরু ব্যবসায়ীদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে এবার প্রায় দুলাখ কোরবানীর পশুর ঘাটতি সৃষ্টি হতে পারে। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে ইতোমধ্যেই কুষ্টিয়া, মেহেরপুর সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে কোরবানীর গরু সংগ্রহ শুরু করেছে দক্ষিণাঞ্চলের বেপারীরা। ইতোমধ্যেই বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় সর্বত্রই ব্যবসায়ীরা গরুর মজুদ গড়ে তোলার কাজ শুরু করেছে। তবে মূল্য পরিস্থিতি কোন পর্যায়ে থাকবে তা নির্ভর করবে সরবারহের ওপর।
তবে কোন অবস্থাতেই সারা দেশের মত দক্ষিণাঞ্চলেও এবারো কোরবানীর পশুর কোন সঙ্কট হবে না বলে জানিয়েছে প্রাণী সম্পদ অধিদফ্তর সহ গরু ব্যবসায়ীগন। গত কয়েক বছর ভারতীয় গরু বিহীন কোরবানী পার করার অভিজ্ঞতার আলোকেই এবারো আসন্ন ঈদ উল আজহাতে পশু বেচাকেনায় প্রস্তুতি নিচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলের ব্যবসসায়ীরা। এবছরও ভারত থেকে কোন গরু না আসার বিষয়টি নিশ্চিত হয়েই সে আলোকে পশু সংগ্রহ করছেন ব্যবসায়ীগন। এমনকি ভারতীয় গরুর বৈধ-অবৈধ আমদানী বন্ধের ফলে দক্ষিণাঞ্চলে গত কয়েক বছরে গবাদী পশুর লালন ও বেচাকেনা কিছুটা বেড়েছে বলে দাবী প্রাণী সম্পদ অধিদফ্তরের। তবে এর পরেও দক্ষিণাঞ্চলের বেশীরভাগ বাছুর বিক্রী হয়ে যায় জন্মাবার ছয় মাসের মধ্যে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তরাঞ্চলের ব্যবসায়ী ও খামারীগন এ অঞ্চলের কতিপয় ব্যবসায়ীর মাধ্যমে গ্রামের হাট-বাজার থেকে সারা বছর ধরেই এসব বাছুর সংগ্রহ করে। কুষ্টিয়া-মেহেরপুর সহ উত্তরাঞ্চলের খামারীগন এসব বাছুর বিজ্ঞান ভিত্তিকভাবে লালন পালেন করে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যেই বিক্রী যোগ্য করে তুলে আবার দক্ষিনাঞ্চলের বেপারীদের কাছেই বিক্রী করছে।
তবে চর এলাকা সহ অপেক্ষাকত নিচু এলাকার কারনে এখনো দক্ষিণাঞ্চলে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে কাঙ্খিত গরুর খামার গড়ে ওঠেনি। এমনকি এঅঞ্চলের বেশীরভাগ গৃহস্থ পরিবারগুলোই বাছুর জন্মাবার কয়েক মাসের মধ্যেই তা বিক্রী করে ফেলছেন উন্নত লালন পালনের অভিজ্ঞতার অভাব সহ আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে। এর পেছনে উন্নত খাবারের অভাব সহ গবাদী পশুর স্বাস্থ্য পরিচর্যার জ্ঞানের অভাবকেও দায়ী করছেন পর্যবেক্ষক মহল।
পাণী সম্পদ অধিদফ্তরের মতে ২০১৫সালে দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলায় ৫লাখ ৪৫হাজার ও গতবছর ৫লাখ ৬০হাজার পশু কোরবানী হয়েছে। চলতি বছর তা পৌনে ৬লাখে উন্নীত হবার সম্ভবনা রেেছ। তবে অধিদফ্তরের মতে এ অঞ্চলের ৬টি জেলার পায় ৩৭হাজার খামারীর কাছে বর্তমানে হৃষ্টপুষ্ট গবাদী পশুর সংখ্যা সাড়ে ৩লাখেরও কম। এর মধ্যে ষাড়ের সংখ্যা ১লাখ ৩০হাজারের কিছু বেশী। বলদ প্রায় ৭০হাজার, প্রজননহীন গাভীর সংখ্যা প্রায় ৪৭হাজার। এছাড়া মহিষ ৯১হাজার ৫শ, ছাগল প্রায় ৬হাজার, ভেড়া ৭৩৫ ও অন্যান্য পশু রয়েছে আরো প্রায় ২শ।
সব মিলিয়ে দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় সাড়ে ৩লাখ উন্নতমানের বা হৃষ্টপুষ্ট গবাদী পশু থাকলেও কতৃপক্ষে মতে এর বাইরেও দক্ষিণাঞ্চলে প্রচুর গবাদী পশু রয়েছে। যার দ্বারা এ অঞ্চলে আসন্ন কোরবানীর চাহিদার পুরোটা না হলেও প্রায় সম্পূর্ণই মেটানো সম্ভব হবে বলে কতৃপক্ষ মনে করছেন। তবে প্রাণী সম্পদ অধিদফ্তরের মতে, দক্ষিণাঞ্চলে বর্তমানে প্রায় ৩৭হাজার খামারী উন্নতমানের ও হৃষ্টপুষ্ট গবাদী পশু লালন পালন করছে। তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করতে পারলে খুব দ্রুত এ অঞ্চলে গবাদীপশুর সংখ্যা বৃদ্ধি করা সম্ভব। তবে ওয়াকিবাহাল মহলের মতে, এঅঞ্চলের খামারীদের আর্থিক সীমাবদ্ধতার সাথে উন্নতমানের গবাদীপশুর বাচ্চার যোগান-এর পাশাপাশি তার লালন পালনে কারিগরি সহায়তার বিষয়টিও জড়িত রয়েছে। প্রাণী সম্পদ অধিদফ্তরের জনবল সংকটের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে যে কর্মীদের কাজের আন্তরিকতার ঘাটতির অভিযোগটিও ব্যপক। এসব মাঠ কর্মীরা খামারীদের সাথে তেমন কোন নিবিড় যোগাযোগ রাখেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি এঅঞ্চলে স্বাধিনতার আগে গাভীর কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম শুরু হলেও তার কাঙ্খিত স¤প্রসারন ঘটেনি। তবে এসব অভিযোগ পুরোপুরি অস্বিকার না করলেও বিভাগীয় প্রাণী সম্পদ অধিদফ্তরের দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, এখন মাঠ কর্মী থেকে জেলা ও উপজেলা প্রাণী সম্পদ অধিদফ্তরের প্রতিটি কর্মীর কাজের খোজ খবর রাখা হচ্ছে। আগামীতে তা আরো জোরদার করার কথা দাবী করে অদুর ভবিষ্যতেই দক্ষিণাঞ্চলে গবাদীপশুর সংখ্যা বৃদ্ধিরও দাবী করেছেন কতৃপক্ষ। তবে এক্ষেত্রে জনবল সংকট একটি বড় অন্তরায় বলেও কতৃপক্ষ মনে করছেন।
এদিকে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অতি স¤তার মন্ত্রনালয়ের সচিবকে লেখা এক চিঠিতে দেশে বর্তমানে বিক্রীর জন্য মজুদ বিভিন্ন ধরনের গবাদী পশুর সাহায্যেই আসন্ন ঈদ উল আজহার কোরবানী চাহিদা মেটান সম্ভব হবে বলে দাবী কেেছন। তিনি কোনভাবেই যেন পাশ্ববর্তি দেশ থেকে কোন গরু দেশে প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছেন। তার মতে সীমান্ত পথে ভারতীয় গরু প্রবেশ করলে তা আমাদের খামারীদের যথেষ্ঠ ক্ষতির কারণ হবে। এমনকি ভারত থেকে নিম্নমানের ও রোগ্রাক্রান্ত গরু দেশে প্রবেস করলে গত কয়েক বছর আমাদের গবাদী পশুর যে স্বাস্থ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে তা বিঘিœত হবারও আশংকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন। প্রাণী সম্পদ অধিদফ্তরের মহাপরিচালক তার চিঠিতে সীমান্ত পথে কোন ভীন দেশী গরু প্রবেশে কঠোর নজরদারীর জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষনেও তার মন্ত্রণালয়ের সচিবকে অনুরোধ করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।