পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীতে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ছোট থেকে বড় সব ধরনের গরু উঠেছে। ক্রেতাদেরও কমবেশি ভিড় রয়েছে। সবচেয়ে বড় হাট গাবতলীতে গরুর দাম ৪০ হাজার থেকে ৩০ লাখ টাকা দাম হাঁকা হচ্ছে। তবে বিক্রেতারা বলছেন, হাটে এখনো ক্রেতাদের তেমন ভিড় নেই। এবার গরুর দামও কম। ফলে অনেককেই লোকসান গুণতে হবে। এছাড়া ঈদের আরও দুই দিন বাকি থাকলেও অনেককেই কোরবানির গরু কিনতে দেখা গেছে। তবে হাসিল পরিশোধের বুথে ভিড় নেই।
গতকাল রাজধানীর গাবতলী, শনিরআখড়া, তিনশ ফিট, কমলাপুর গরুর হাট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। পশুর হাটগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত হলেও ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন কোরবানির পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম কার্যক্রম শুরু করেছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৮টি মনিটরিং টিম গঠন করেছে। প্রত্যেক টিমে মন্ত্রণালয়ের একজন করে উপ-সচিবকে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
গাবতলীর হাটে জামালপুরের জাকারিয়া অ্যাগ্রো ফার্মের ৮১টি গরু তোলা হয়েছে। ফার্মের দেখভালের সঙ্গে জড়িত মো. দুদু মিয়া জানান, ইতোমধ্যে আমরা পাঁচটি গরু বিক্রি করেছি। আড়াই থেকে ৪ লাখ টাকায় গরুগুলো বিক্রি হয়েছে। এতে আমাদের কিছুটা লাভ থাকবে। তবে অন্যবারের চেয়ে এবার লাভ কম হচ্ছে বলে জানালেন তিনি। এই ফার্মের সবচেয়ে বড় গরুর ওজন ১৮ মণ। ৫ লাখ টাকা দাম চাওয়া হলেও ক্রেতারা বলছেন ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে দুটি ছোট গরু নিয়ে এসেছেন করিম নামের এক খামারি। বাড়িতে লালন পালন করা গরু দুটি বছর খানেক আগে লাখ টাকায় কেনেন। তিনি জানান, গতকাল বিকেল পর্যন্ত গরু দুটির দাম লাখ টাকায় উঠেনি। দাম আর বেশি না উঠলে তাকে লোকসান গুণতে হবে।
একইভাবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আরেক খামারি অব্দুল জলিল জানান, তার গরু দুমাস আগে ৪০ হাজার টাকায় কেনা ছিল। এখন বাজারে গরুটির দাম ৩৫ থেকে ৩৬ হাজার টাকা বলা হচ্ছে। এই দামে গরু বিক্রি করতে হলে তাকে অন্তত ১৫ হাজার টাকা লোকসান গুণতে হবে।
কিশোরগঞ্জ থেকে ৫টি গরু নিয়ে তিনশ’ ফিট হাটে এসেছেন সোহেল রানা। তিনি জানান, হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে। মুখে মাস্ক পড়া ছাড়া ক্রেতাদের হাটে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। তবে গরুর দাম কম। গতবার যে গরু এক লাখ টাকা বিক্রি করেছেন; এবার সে গরুর দাম ৮০ হাজারের বেশি উঠছে না। তিনি বলেন, আশা করছি ঈদের আগের দুদিন গরুর দাম উঠবে এবং বিক্রিও বাড়বে।
রাজধানীর খিলক্ষেত বনরূপা আবাসিক প্রকল্পের সিটি কর্পোরেশনের অস্থায়ী হাটের পশু বিক্রেতা সালমান ফারুক বলেন, লোকজন মাঝে মধ্যে আসে, দর-দাম করে। কিন্তু এখনো কেউ কিনছে না। ঈদের দু’একদিন আগ থেকে পুরোদমে পশু বিক্রি হবে।
শনিরআখড়া বাজারে তিন চারদিন থেকে দেখা যায় গরুর সংঘ্যা বাড়ছে। হাট ছেড়ে অলিগলিতে গরু দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। বৃষ্টিতে ভিজে রাস্তাঘাট একাকার হয়ে গেছে। কিন্তু বিক্রেতারা দাম ছাড়ছেন না। ক্রেতাও তেমন নেই। একজন বিক্রেতা জানান, তিনি নরসিংদী থেকে ৬টি গরু নিয়ে এসেছেন। কিন্তু দুদিনে একটি গরুও বিক্রি করতে পারেননি। মানুষ আসছে গরু দেখে দাম জিজ্ঞাস করে চলে যাচ্ছে। শনিরআখড়ার মুক্তি সরণি রোড-আদর্শ নগর রোড-গোয়ালবাড়ি মোড়-বর্ণমালা স্কুলসংলগ্ন ফাঁকা জায়গায় প্রচুর গরু। কিন্তু বিক্রেতারা জানান, বেচাকেনা খুবই কম।
রাজশাহীর পবা থেকে মাঝারি আকারের ৪টি গরু নিয়ে এসেছেন কৃষক মো. জসিম মন্ডল। তিনি জানান, তার ৭ থেকে ৮ মন ওজনের গরুগুলোর দাম বলা হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। জসিম বলেন, লস হলেও গরু তো বেঁচতে হবে। ঢাকার চেয়ে গ্রামে গরুর দাম আরও বেশি।
রাজশাহী থেকে ১৫ মণ ওজনের একটি গরু নিয়ে এসেছেন মো. বাবু। অস্ট্রেলিয়ান এই গরুটির দাম বলা হচ্ছে সাড়ে ৩ লাখ টাকা। বিক্রেতা বাবু বলছেন, এটি আমাদের নিজস্ব খামারের গরু। বয়স তিন বছর। বাজারে ক্রেতা নেই। গতবছর এই সময়ে অনেক ক্রেতা ছিল।
কমলাপুর গরুর হাটে টাঙ্গাইলের চকদার গরুর ফার্ম ৫৩টি গরু তুলেছে। এর মালিক দুলাল হোসেন চকদার বলেন, আমাদের আটটি গরু এরই মধ্যে বিক্রি করে দিয়েছি। সবগুলো গরুর দামই ৩ লাখ টাকার ওপরে। ফার্মের সবচেয়ে বড় গরুটির ওজন প্রায় ৩০ মণ। দাম চাওয়া হচ্ছে ১২ লাখ টাকা। ক্রেতারা এখন পর্যন্ত সাড়ে ৭ লাখ টাকা দাম বলেছে। মহারাজা নামের এই গরুটি ২ বছর আগে আড়াই লাখ টাকা দিয়ে কিনে ফার্মে তুলেছিলেন। গরুর বাজার খুব একটা খারাপ না। তবে বাজারে এখনো ক্রেতা কম।
ঝিনাইদহ থেকে ট্রাক ভর্তি করে দুই ডজন ১০টি দেশীয় শঙ্কর জাতের গরু নিয়ে রাজধানীর খিলগাঁও মেরাদিয়া বাজারের পশুর হাট এসেছেন নবীর মিয়া। তার দাবি তিনি গরু প্রাকৃতিকভাবে বড় করেছেন। তাই দামও বেশি আশা করছি। বেচা-বিক্রি শুরুই হয়নি। ক্রেতা এসে অনেক কম দাম বলে যায়।
এদিকে কোরবানির পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিক্যাল সেবা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন হাটগুলোতে গতকাল বুধবার সকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু করেছে প্রাণিসম্পদ অধিদফতর গঠিত ১৮টি ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম ও একটি বিশেষজ্ঞ ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম। আগামীকাল শুক্রবার পর্যন্ত এই ভেটেরিনারি মেডিক্যাল সেবা প্রদান করবে। অন্যদিকে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের উদ্যোগে সারা দেশের কোরবানির পশুর হাটগুলোতেও কাজ শুরু করছে ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম বলে জানা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।