পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের অপতৎপরতা রাষ্ট্রদ্রোহীতার সামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, রায় নিয়ে প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীসহ আইনমন্ত্রী ও অ্যাটর্নি জেনারেলের সাক্ষাত নজিরবিহীন ঘটনা। বিশেষ করে এই রায় নিয়ে প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ জাতিকে উদ্বিগ্ন করেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে শঙ্কিত। গতকাল (বৃহস্পতিবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘আবদুস সালাম স্মৃতি সংসদ’ আয়োজিত বিএনপির সাবেক মহাসচিব আবদুস সালাম তালুকদারের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার যেভাবে ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়, বিচার বিভাগ এবং প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে কথা বলছে, তাতে দেশ বলতে কিছু আছে বলে মনে হয় না। যে রায় হয়ে গেছে, সুপ্রিম কোর্ট সর্বোচ্চ আদালত রায় দিয়ে দিয়েছে, সেই রায়ের বিরুদ্ধে তারা (সরকার) অবস্থান নিয়ে প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। আমরা এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করছে অভিযোগ করে এর বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে করা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় গত ১ অগাস্ট প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট। ওই রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি দেশের রাজনীতি, সামরিক শাসন, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি, সুশাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন।
রায় নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে বুধবার সন্ধ্যায় সরকার প্রধান শেখ হাসিনা বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপ্রধান মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে যান। তার সঙ্গে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও ছিলেন। এই সাক্ষাৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এই সাক্ষাৎ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে, নিঃসন্দেহে সমগ্র জাতিকে, সমগ্র মানুষকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। যেটা হওয়ার কথা নয়, নজিরবিহীন।
বিষয়টি নিয়ে কয়েক দিন আগে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং মন্ত্রী-এমপিদের প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা,‘অশ্লীল-অশ্রাব্য’ কথাবার্তা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় চলতে পারে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। বিএনপি মহাসচিব বলেন, আশঙ্কা করছি নতুন করে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে, গণতন্ত্র যেটুকু অবশিষ্ট আছে সেটুকুকে ধ্বংস করে দেওয়ার। বিচার বিভাগের ক্ষমতা হরণ এবং তার স্বাধীনতা হরণের যেকোনো চেষ্টার বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানান তিনি।
‘গণতন্ত্র রক্ষায়’ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে শুধু বিএনপি নয়, সমস্ত রাজনৈতিক দল, সমস্ত সংগঠন, ব্যক্তি, সুশীল সমাজ সকলের এগিয়ে আসা উচিৎ বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য, তার সংবিধানকে রক্ষা করার জন্য, তার গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য। আজকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপশক্তিকে প্রতিরোধ করতে হবে ও গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে হবে।
ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডের অভিযোগ তুলে এজন্য ভবিষ্যতে তাদের বিচারের মুখোমুখি করার হুঁশিয়ারি দেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, আজকে যারা এই রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছেন, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছেন তাদের ভবিষ্যতে জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। কারণ আপনারা রাষ্ট্রকে ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন, এটা নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপের ভেতরে পড়ে। আপনারা কথায় কথায় আমাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী মামলা দেন। আরে প্রকাশ্যে তো আপনারা রাষ্ট্রবিরোধী কাজ করছেন, দেশকে ধ্বংস করছেন, সংবিধানকে ছিন্ন-ভিন্ন করে ফেলছেন। এসব প্রত্যেকটির বিচার আজকে হোক, কালকে হোক জনগণ করবে। ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোয় আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল। তত্ত¡াবধায়ক সরকার বাতিলের রায় নিয়ে তার বিচার হওয়া উচিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, যে অন্যায় তিনি করেছেন...যে শর্ট রায় তিনি দিয়েছেন, সেটাকে ১৬ মাস পরে পরির্বতন করে আরেকটা ভিন্ন রায় দিয়েছেন। এটা নিঃসন্দেহে আমরা মনে করি, আইনজীবীরা মনে করেন, দিস ইজ অ্যা ক্রিমিনাল অফেন্স। সংগঠনের সভাপতি প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ও সুজাত আলীর পরিচালনায় সভায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুজ্জামান দুদু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ফজলুল হক মিলন, কামরুজ্জামান রতন, সিরাজুল হক, এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, ওয়ারেস আলী মামুন, সাঈদুর রহমান সাঈদ, আনোয়ার হোসাইন, শফিউল বারী বাবু, নিলোফার চৌধুরী মনি, এটিএম আবদুল বারী ড্যানি, শামসুজ্জামান মেহেদি, হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন, সাদিয়া হক, মরহুম সালাম তালুকদারের জামাতা এম হাসান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।