Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সন্ধ্যার পর শীতলক্ষ্যায় রাজত্ব বাল্কহেডের দখলে ছোট বালু নদী

| প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা : প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা নৌপথে আনে নিরাপত্তা শীর্ষক নৌ বিভাগের নানা কর্মসূচিই ভেস্তে যাচ্ছে। নৌ পুলিশের টহল না থাকা ও বাল্কহেড চলাচল বিধি প্রয়োগ না করায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে যাত্রী ও বালুবাহী নৌযানের শ্রমিক। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শ্রমিক, মালিক, যাত্রী ও ক্ষুদ্র নৌপরিবহনে ব্যবহৃত যানের। নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকার জেলা প্রশাসন বারবার সন্ধ্যার পর শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীতে বালিবাহী বাল্কহেড চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও মানা হচ্ছে না এ আইন। তাই বাঁধা ডিঙ্গিয়ে অবাধে চলছে মরনঘাতি এসব যান। দু-একটি দুর্ঘটনার পর প্রশাসন নড়েচরে বসলেও ফের বালিবাহী অবৈধ ফিটসেনবিহীন যান অহরহ চলাচল করছে। এমনকি রাতের বেলায় চলাচল করলেও প্রশাসন নির্বিকার থাকে বলে রয়েছে অভিযোগ।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, শীতলক্ষ্যার বিভিন্ন পয়েন্টে শহর এলাকায় নৌ ফাঁড়ির সদস্যরা ব্যবস্থা নিলেও উপজেলা এলাকায় রাতের বেলায় নির্ধারিত চাঁদা আদায় করে এ বাল্কহেড চলাচল অব্যাহত রেখেছেন। অভিযোগ রয়েছে পুলিশ বাঁধা দিলেই ৩শ’ থেকে ১ হাজার টাকা দিলেই রাতের বেলায় চলতে দেয়া হয় এসব মালবাহী নৌযান। এদিকে এ নদীতে চলাচলরত সাধারন নৌযানের মালিক পক্ষের দাবি প্রশাসনের নীরবতার সুযোগে উভয় নদীতে বেপরোয়া বালিবাহী বাল্কহেডগুলো চলছে। তাতে সাধারণ যাত্রী ও শ্রমিক শ্রেণিরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সূত্র জানায়, বালু নদীটি রাজধানীর ডেমরা ও নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের চনপাড়া পুনবার্সন এলাকা থেকে শুরু হয়ে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন ও রূপগঞ্জ সদও এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদীতে মিলেছে। নদীটির প্রসস্থতা কম থাকার পরও পূর্বাচল উপশহর ও এর আশপাশ এলাকায় আবাসন কোম্পানীর বালি বহনের কাজে এসব মালবাহী বাক্লহেড ব্যবহার হচ্ছে। ফলে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়াও এসব নৌযান চলাচল অব্যাহত থাকায় প্রশাসন নির্বিকার রয়েছেন। এমনই এক ঘটনায় সম্প্রতি উপজেলার ইছাপুরা এলাকার বালু নদীতে বালুবাহী বলগেটের ধাক্কায় সাক্কাত আলী (৪৫) নামে এক মাটিকাটার শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এসময় আহত হয়েছেন, আরো পাঁচ জন। রূপগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জুবায়ের মৃধা জানান, ইছাপুড়া বাজার এলাকার বালু নদীর এক পাশে মাটিবাহী ট্রলার থেকে মাটি নামাচ্ছিলেন মাটি শ্রমিকরা। এসময় বালুবাহী একটি বলগেট নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিবাহী ট্রলারের উপরের উঠিয়ে দেয়। এতে মাটিবাহী ট্রলারটি ধুমরে-মুচড়ে গিয়ে পানিতে তলিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই মাটিবাহী ট্রলারে থাকা শ্রমিক সাক্কাত আলী ট্রলার ও বলগেটের চাপায় নিহত হন।
শীতলক্ষ্যা নদীর রূপগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গীর, পিতলগঞ্জ ও হাটাব ত্রিশকাহনিয়া এলাকায় বিভিন্ন আবাসন কোম্পানীতে ফেলা বালুবাহী বাল্কহেডগুলো রাতের বেলায় চলাচল করায় স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। একইভাবে বালু নদীর ইছাপুরা, ছনি, কায়েতপাড়া ও ডেমরা এলাকায় ছোট্ট বালু নদীতে এসব যান চলাচলে আরো ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার হচ্ছেন স্থানীয় লোকজন। ভারী নৌযানগুলো যত্রতত্র চলাচল করায় সাধারন নৌযান এ নদীতে চলাচল করতে অসুবিধা হচ্ছে। এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়া বলেন, রাতের বেলায় বালু ও শীতলক্ষ্যায় বাল্কহেড চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। ফলে রাতের বেলায় কোন যান পেলে আইন শৃঙ্খলা বাহীনি ব্যবস্থা নিয়ে থাকেন। টাকার বিনিময়ে রাতের বেলায় সুযোগ দেয়া হয়ে থাকলে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ