পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় শোক দিবসের দিনে ভুয়া জন্মদিন পালন না করায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে সাধুবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
গতকাল মঙ্গলবার মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস এন্ড সার্জন্স মিলনায়তন জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সাধাবাদের কথা জানান। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দেশের মানুষ জানে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বিএনপির জন্ম হয়েছিল বলেই তারা এই দিন তথাকথিত জন্মদিন পালন করতে চায়। কিন্তু তারা এই ধরনের অপচেষ্টার মধ্য দিয়ে মানুষের কাছে ঘৃণা কুড়াচ্ছে।
বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের বাংলাদেশে ফিরিয়ে দিতে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহŸান জানিয়ে নাসিম বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রায় আংশিক কার্যকর হয়েছে। এখনো কিছু খুনি দেশের বাইরে পালিয়ে আছে। যে সকল দেশে এসব খুনিরা পালিয়ে আছে, সে রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহŸান জানাবো খুনিদের বিচারের রায় কার্যকর করার জন্য তাদের যেন দ্রæত বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়।
তিনি বলেন, ২১টা বছর যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার বিচার হয়নি, খুনিরা যখন পার্লামেন্টে ছিল, তখন তো কেউ বলেনি এই পার্লামেন্টের লোকগুলো অযোগ্য। সে দিন কোথায় ছিল আদালত?
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খানের সভাপতিত্বে সভায় স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মহাপরিচালক কাজী মোস্তফা সারোয়ার, বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে মোহাম্মদ নাসিম বঙ্গবন্ধুর ৪২তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত আলোচনা সভায় যোগদেন।
এ সময়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ সময়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, যারা ক্ষমতায় ছিল ২১ বছর ধরে তারা কোনো দিনও এই ন্যায়বিচার করেনি। কোনো সরকার উদ্যোগ নেয়নি আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার করার। এমনকি তাদের পার্লামেন্টে বসিয়ে পার্লামেন্ট কলঙ্কিত করেছিল। আরও দুঃখ লাগে এই কারণে যে, যখন দেখি আদালত নির্দেশ দিচ্ছেন, প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ করছে, তখন আমরা বলতে বাধ্য হই, কোথায় ছিল আপনাদের ন্যায়বিচার এই ২১টা বছর।
‘যখন কালো আইন সংবিধানে লেখা হয়ে গেছে, হত্যার বিচার হবে না। তখন কেন হস্তক্ষেপ করলেন না? কেন বললেন না? কেউ রুল জারি করলেন না? কেন নির্দেশ দিলেন না হত্যার বিচার করতে হবে, এ আইন বেআইনি। খুনিরা যখন পার্লামেন্টে ছিল, তখন কেন বললেন না এ পার্লামেন্টের লোকগুলো অযোগ্য। তখন তো কোন বিচারককে কথা বলতে দেখিনি। কোনো বিচারক তো সাহস করে কথা বলেননি। বরং দেখেছি সামরিক শাসনকে বৈধ করেছেন আপনারা। সামরিক শাসকের পক্ষে ওকালতি করেছেন আপনারা’ বলেন নাসিম।
তিনি বলেন, কোথায় ছিল সেদিন আদালত? শেখ হাসিনাকে লড়াই করে, সংগ্রাম করে ২১টা বছর রক্ত, ঘাম মাথায় ফেলে, বিএনপির নির্যাতন সহ্য করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার করতে ইনডেমনিটি আইন বাতিল করেছি। তারপর আবার ওরা (বিএনপি) ক্ষমতায় এসে এটি আপিলে নিষ্পত্তি করে দিল। তখন তো একজন বিচারককেও দেখলাম না এতো বড় বড় রায় দিতে। এতো বড় বড় পর্যবেক্ষণ দিতে।
নাসিম বলেন, ভয় পাওয়ার লোক আমরা নই। আমরা লড়াই করে, রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছি। ন্যায্য কথা বলব, কারও সাহস নেই, ন্যায্য কথা বন্ধ করতে পারে। কোনো আদালতই বন্ধ করতে পারবে না। কারণ যে মানবতা লঙ্ঘিত হয়েছে, সেই মানবতার পক্ষে আমরা কথা বলছি।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) দাবি তুলেছে সংবিধানের বাইরে নির্বাচন করতে হবে। কেন করব? নেভার, কোনো দিন করব না, প্রশ্নই উঠে না। সংবিধানের বাইরে একচুলও আমরা যেতে পারব না। যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। সংবিধানের আলোকে শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে।
বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদকে উদ্দেশ করে করে নাসিম বলেন, মওদুদ আহমেদ যখন আইনমন্ত্রী ছিলেন, ৫টি বছর আপিল আদালতে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হতে দেননি। বারবার বলত বিচারক পাওয়া যাচ্ছে না। খালেদা জিয়ার নির্দেশে এই মওদুদ আহমেদ ৫টি বছর বিচারক দেননি। আজ প্রতিদিন দেখি এই লোকটি ন্যায় বিচারের কথা বলেন।
এছাড়াও মোহাম্মদ নাসিম পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর আয়েজিত শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে যোগদান করেন। পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী মোস্তফা সারোয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪২তম শাহাদত বার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর ও তাঁর পবিবারের শহীদ সদস্যদের আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়।
এদিকে বেলা ১১ টায় মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ্য থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।