Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কলারোয়া সীমান্ত পথে বিনা পাসপোর্টে ভারতে যাতায়াত

| প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কোটি কোটি টাকার পাসপোর্ট ফি ও ভ্রমণ কর ফাঁকি
কলারোয়া (সাতক্ষীরা) উপজেলা সংবাদদাতা : কলারোয়া সীমান্ত পথে শতশত মানুষ বিনা পাসর্পোটে ভারতে যাতায়াত করছে। ফলে সরকার প্রতি বছর পাসর্পোট ফি ও ভ্রমণ কর বাবদ কোটি কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সীমান্ত সুত্র জানায়, কলারোয়া সীমান্তের সোনাই নদী পারে ভারতের হাকিমপুর। সোনাই নদী থেকে কয়েক’শ মিটার পশ্চিমে গেলে সরাসরি কলকাতা যাওয়ার বাস পাওয়া যায়। আবার বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ৬৫ কিলোমিটার দূরত্বে কলকাতার অবস্থান। এই সীমান্তের সোনাই নদীর দু’পাশে ঘন জনবসতি রয়েছে। ফলে কারা স্থানীয় আর কারা ভারতে যাওয়ার অপেক্ষায় নদী পাড়ে রয়েছে তা বোঝা দূরহ। ভারতে যাওয়ার আগে ঘন জনবসতি ও ঝোপ জঙ্গলে লুকিয়ে থাকার সুযোগ রয়েছে। ভারতে যাওয়ার সোনাই নদীতে শতাধিক নৌকা রয়েছে। চুক্তির মাধ্যমে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নির্দেশনা মোতাবেক নৌকাগুলো বিনা পাসর্পোটের যাত্রী পারাপারের কাজ করে থাকে। তাই বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা, পিরোজপুর, বাগেরহাট, ফরিদপুর, নড়াইল, মাগুরা, ঢাকা, খুলনা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন এই রুটে ভারতে যাতায়াত করে। এজন্য কলারোয়া সীমান্তে অন্ততঃ ৮টি ভারতে যাওয়ার ঘাট চালু রয়েছে। এই ঘাটগলো হচ্ছে, কেড়াগাছি সীমান্তে চারাবাড়ি ঘাট, কেড়াগাছি রথখোলা ঘাট, গাড়াখালী ঘাট, দক্ষিণ ভাদিয়ালী ঘাট, উত্তর ভাদিয়ালী ঘাট, হিজলদী ঘাট, সুলতানপুর ঘাট, চান্দুড়িয়া ঘাট। সীমান্তের এই ঘাট গুলো দিয়ে ভারতে যাওয়ার জন্য পরিবেশ পরিস্থিতি বিশেষে মাথাপিছু ৫’শ টাকা থেকে হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। সীমান্তের ঘাট মালিকরা টাকার বিনিময়ে অসাধু সীমান্ত রক্ষীদের হাত করে নিরাপদে ভারতে পৌছে দেয় এবং ভারতীয়দের নিরাপদে দেশের অভ্যান্তরে বাস রুট সংলগ্ন ঘাটে পৌছে দেয়। আর কোন কারণে সীমান্তে বেশী কড়াকড়ি আরোপ হলে বিনা পাসর্পোটের লোকজন আশ্রায়ে রাখা ও থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা গভীর রাতে সীমান্ত অতিক্রমের ব্যবস্থা করে। এছাড়া দেশের অভ্যান্তর ভাগ থেকে বাসযোগে আসা লোকজন নিরাপদ স্থানে রাখা ও সীমান্তে পৌছে দেওয়ার জন্য ঢাকা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের বাগআঁচড়ায়, কাজিরহাট ঠাকুরবাড়ি ঘাট রয়েছে। অভ্যান্তর ভাগের এই ঘাটে মাথাপিছু ২’শ টাকা হারে আদায় করা হয়। কলারোয়া, ঠাকুরবাড়ি বা বাগআঁচড়া থেকে মটর সাইকেল, ইজ্ঞিনভ্যান বা নসিমন এবং থ্রিহুইলার যোগে বিনা পাসর্পোটের যাত্রীদের সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়। সুযোগ বুঝে কাকডাঙ্গা সীমান্ত ফাড়ির ৫০ গজ সামনের রাস্তা এবং মাদ্রা সীমান্ত ফাড়ির গেটের ৫/৭ হাত দূরের পাকা সড়কে বিনা পাসর্পোটের যাত্রীদের সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে সুত্র জানায়। আবার একই সড়কে বিনা পাসর্পোটের যাত্রীদের সীমান্ত থেকে নিয়ে বাস রুটে পৌছে দেওয়া হচ্ছে। আবার কখনো সীমান্তে বেশী কড়াকড়ি আরোপ হলে গ্রামগজ্ঞের ভিতর দিয়ে ভিন্ন রাস্তায় বিনা পাসর্পেটের যাত্রীদের সীমান্তে নিয়ে যাওয়া বা আসা হয়। এভাবে প্রতিদিন অবৈধ পথে অসংখ্য মানুষ বিনা পাসর্পোটে দু’দেশের মধ্যে যাতায়াত করছে। এভাবে অবৈধ পথে প্রবেশ করা লোকজন প্রায়শঃ ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীদের হাতে ধরা পড়ার পরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের বিজিবি’র কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। অবৈধ পথে যাতায়াতের জন্য সরকার প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার পাসর্পোট ফি ও ভ্রমণ কর থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারপরেও চোরাই পথে সরকারী কর ফাঁকি দিয়ে দু’দেশের মধ্যে বিনা পাসর্পোটে যাতায়াত রোধে বাস্তব সম্মত কোন কার্যকারী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ