Inqilab Logo

সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

একটি খাল খননে ২০ হাজার কৃষকের মুখে হাসি

| প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নড়াইল থেকে আতিয়ার রহমান : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নোয়াগ্রাম এলাকায় সমতল ভূমিতে খাল খনন করায় ৫টি ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটেছে। এতে এলাকার অন্তত ২০ হাজার কৃষক উপকৃত হয়েছে। এছাড়া গভীর নলকূপের ওপর নির্ভরশীলতা কমেছে। ধান ও সবজি উৎপাদন এবং পাট জাগ দেয়াসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত্রে এ খালের পানি ব্যবহার করা হচ্ছে। এলাকাবাসির দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে খালটি খনন করা হয়েছে। এর ফলে উপজেলার নোয়াগ্রাম, লাহুড়িয়া, নলদী, জয়পুর ও কাশিপুর ইউনিয়নের ১৫ গ্রামের অন্তত ২০ হাজার কৃষক উপকৃত হয়েছেন। এই পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় ১২ কিলোমিটার বিলের কৃষি জমিতে সেচ এবং পানি নিষ্কাষন সুবিধা পাবেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা।
জানা যায়, গত অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে লোহাগড়ার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের শামুখোলা-সুলটিয়া খালটি প্রায় ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে খনন করা হয়েছে। খালের দৈর্ঘ্য প্রায় তিন কিলোমিটার, প্রস্থ ৬০ ফুট ও গভীরতা ১২ ফুট। কাজটি চলতি বছরের মে মাসের প্রথম দিকে শুরু হয়ে ২০ জুনের মধ্যে শেষ হয়েছে। খালটি নবগঙ্গা নদীর ধোপাদাহ এলাকায় মিলিত হয়েছে। নামকরণ করা হয়েছে ‘দোদাড়িয়া খাল’।
নোয়াগ্রামের হারুন মোল্যা জানান, এলাকাবাসি স্বেচ্ছায় জমিদানের মধ্য দিয়ে দোদাঁড়িয়া খাল খনন করা হয়েছে। এতে এ অঞ্চলের হাজারো কৃষক উপকৃত হবেন। একই এলাকার সৈয়দ তসলিম উদ্দিন বলেন, এতোদিন এলাকার কৃষকেরা গভীর নলকূল থেকে পানি উত্তোলন করে ফসল ফলাত, এতে উৎপাদন খরচ বেশি হতো। খরা মওসুমে সেচ পাম্পে প্রয়োজন মতো পানি না পাওয়ায় অনেক জমি অনাবাদী পড়ে থাকত। এখন খালে পানি পাওয়ায় সেচ সমস্যার সমাধান হয়েছে।
শুলটিয়া গ্রামের শাহ নেওয়াজ হোসেন বলেন, খাল খননের আগে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে গিয়ে পাট জাগ দিতে হয়েছে। এতে ফসলের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়াসহ সময়ের অপচয় হতো। এ বছর আমরা এই খালে সহজে পাট জাগ দিতে পারব। এছাড়া এ বছর আগাম বৃষ্টি হওয়ায় খালে পুটি, টেংরা, কৈ, শিং, টাকিসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট ছোট দেশী মাছ দেখা যাচ্ছে।
নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের সদস্য (মেম্বার) আহাদ শেখ বলেন, খাল খননে পাঁচ ইউনিয়নের অন্তত ১৫ গ্রামের ২০ হাজার কৃষকের উপকার হয়েছে। এলাকাবাসির যাতায়াতের সুবিধার্থে খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
নড়াইলের ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা (দায়িত্বপ্রাপ্ত) এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, খননকৃত মাটি দিয়ে খালপাড়ে কৃষকদের চলাচলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি খাল পাড়ে তাল গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে তালগাছ লাগানো খুবই জরুরি বলে জানান তিনি। এছাড়া বিগত অর্থবছরে বরাদ্দকৃত গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) প্রকল্পে ২২৫টি প্রকল্পের বিপরীতে প্রায় এক কোটি ৪৫ লক্ষ ১৬ হাজার টাকার কাজ ও সংস্কার (কাবিখা) প্রকল্পে ১১০টি প্রকল্পের বিপরীতে ১০ কোটি ৬৮ হাজার টাকার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ