পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : রাজধানীর যানজটের প্রধান কারণ হিসেবে প্রাইভেটকারকেই দায়ী করেছে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা)। গতকাল শনিবার পবা আয়োজিত ‘যাতায়াতে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প,বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ: সরকারের ভূমিকা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা যানজটের জন্য ব্যক্তিগত গাড়িকেই দায়ী করেন। বক্তারা বলেন, ব্যক্তিগত গাড়িতে মাত্র চার শতাংশের যাতায়াত হয়, কিন্তু এটি সড়কের ৭০ শতাংশ স্থান দখল করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিটি প্রাইভেটকার যাত্রী বহন করে গড়ে মাত্র দেড় জন। অথচ একই পরিমাণ জায়গা ব্যবহার করে একেকটি বাস গড়ে ৫০ জন যাত্রী পরিবহন করে। দেড়টি প্রাইভেট কার ও ঢাকার একটি সাধারণ বাসের প্রায় সমান জায়গা লাগে। অথচ গড় হিসেবে দেড়টি ব্যক্তিগত গাড়িতে যাত্রী থাকে দু’জনের মতো। বিপরীতে ৫০ জন যাত্রী বহন করে একেকটি বাস। অর্থাৎ, ঢাকার সড়কে একই পরিমাণ জায়গা দখল করলে প্রায় এক হাজার ২৫০ শতাংশ বেশি যাত্রী বহন করে বাস।
পবা’র চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় গোলটেবিল বৈঠকে বক্তব্য রাখেন পবা’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সোবহান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. লেলিন চৌধুরী,সম্পাদক সৈয়দ মাহাবুবুল আলম তাহিন,পবা’র সহ-সম্পাদক স্থপতি শাহীন আজিজ, এম এ ওয়াহেদ, নিশাত মাহমুদ, সদস্য রাজিয়া সামাদ, ক্যামেলিয়া চৌধুরী, সাগিরুজ্জামান শাকীক, অমূল্য কুমার বৈদ্য, বানিপা’র সভাপতি আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
সভায় আবু নাসের খান বলেন যানজটকে প্রাধান্য দিয়ে যাতায়াত ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রথমে সমন্বিত যোগাযোগ নীতিমালা অনুসারে যাতায়াত পরিকল্পনা করতে হবে। ঢাকায় অধিকাংশ মানুষ দুই কিলোমিটারের মধ্যে চলাচল করেন। তাই প্রথমে পথচারীদের যাতায়াত ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিতে হবে। পরের ধাপে সাইকেল চলাচলের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। নাসের খান বলেন, নগরে বাস চলাচলের ক্ষেত্রে মাফিয়া বা অনৈতিক ব্যক্তিদের দৌরাত্ম্যের কারণে পাবলিক বাস ব্যবসায় নিজেদের সম্পৃক্ত করতে অনেক মানুষই আগ্রহী হন না। নগর কর্তৃপক্ষের অধীনে পৃথক লেনে পাবলিক বাস চলাচল এবং রেল ও নৌপথের সঙ্গে নগরের পাবলিক বাসের সমন্বয় রাখার পরামর্শ দেন তিনি। এছাড়া, সুষ্ঠু যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য জনগণ, চালক, পথচারী, যানবহন ব্যবহারকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি, রেলকেন্দ্রিক সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, সড়কের অব্যবস্থাপনাগুলো নিরসন, নৌবন্দর, রেল স্টেশন, বাস টার্মিনাল ও বিমান বন্দরের মধ্যে সহজে যাতায়াতের ব্যবস্থা করারও তাগিদ দেন তিনি। পবা’র চেয়ারম্যান বলেন, ঢাকার চারিদিকে সার্কুলার ট্রেন চালু ও ঢাকার আশেপাশের শহরগুলোর সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপন ও উন্নয়ন প্রয়োজন।
বক্তারা বলেন,এইচডিআরসির একটি গবেষণায় দেখা যায়, ঢাকায় ৭৬ শতাংশ যাতায়াত স্বল্প দূরত্বে হয়। আর পথচারী ও জ্বালানিমুক্ত যান মিলে ৮৪ শতাংশ ট্রিপ যাতায়াত সংঘটিত হয়ে থাকে। ঢাকা ইন্টিগ্রেটেড ট্রান্সপোর্ট স্টাডি (ডিআইটিএস) অনুযায়ী, ঢাকায় মোট চলাচলের ৬২ শতাংশ পায়ে হেঁটে হয়। অথচ পরিকল্পনায় শুধু জ্বালানিনির্ভর যানবাহনকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, স্বাভাবিক সময়ে রাজধানীতে দৈনিক প্রায় তিন কোটি ট্রিপ হয়। এর মধ্যে ৩৮ দশমিক ৩ শতাংশ রিকশায়, ২৮ দশমিক ৩ শতাংশ বাসে ও ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ হেঁটে যাতায়াত। অর্থাৎ, ৮৬ দশমিক ৪ শতাংশ যাতায়াতকারীই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে ফ্লাইওভারের সুবিধা পায় না। বক্তারা আরও বলেন, হাজার কোটি টাকার যাতায়াত প্রকল্পের পরও গত ১০ বছরে যান্ত্রিক যানবাহনের গতি ঘণ্টা প্রতি ২১ কিলোমিটার থেকে ৭ কিলোমিটারে নেমে এসেছে। যানজটে প্রতিদিন নাগরিকের ৩২ লাখ কর্মঘণ্টা নষ্ট হয়,যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। এ হিসেবে মানুষের স্বাস্থ্য,পরিবেশ ও ভোগান্তির কথা ধরা হয়নি। হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের পরও ঢাকা যাতায়াত ব্যবস্থার এ অবস্থার কারণ খোঁজা জরুরি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।