Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

আওয়ামী লীগই পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে -মির্জা ফখরুল

খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় দোয়া ও মিলাদ

| প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি নয়, আওয়ামী লীগই পেছনে দরজা দিয়ে আবারও ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা বরাবরেই দেখেছি, বাংলাদেশে ক্ষমতায় আসার জন্য এই দলটি (আওয়ামী লীগ) পেছন দরজা দিয়ে চেষ্টা চালায়। এবারো তারা জনগনকে ভুল বুঝিয়ে আবারো পেছনে দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে। তারা(সরকার) মনে করেছে আবারো ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো একটি একতরফা একদলীয় নির্বাচন করে তারা ক্ষমতায় আসবে। আমরা আবারো বলছি, ২০১৪ সালে যে নির্বাচন হয়েছে, সেটা ২০১৮ সালে হবে না। এদেশের মানুষ তা মেনে নেবে না।
গতকাল শুক্রবার বিকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিচ তলায় লন্ডনে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য কামনায় দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। গত ৮ জুলাই পূর্ব লন্ডনের মুরফিল্ড চক্ষু হাসপাতালে বেগম খালেদা জিয়ার ডান চোথে সফল অস্ত্রোপচার হয়। দোয়া মাহফিলে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবাদুল কাদেরের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
লন্ডনে বেগম খালেদা জিয়ার চোখে সফল অস্ত্রোপচারের পরবর্তি অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, তাঁর সফল অস্ত্রোচার হয়েছে। আল্লাহ অশেষ রহমতে তিনি এখন সুস্থ আছেন। আমরা আজ ও কাল কেন্দ্রীয়ভাবে দুইদিন সারাদেশে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডায় আমাদের দেশনেত্রীর দ্রæত আরোগ্য লাভের জন্য প্রার্থনা জানাতে কর্মসূচি নিয়েছি। আসুন আমরা আল্লাহতালার কাছে দোয়া করি, তিনি যেন অতি দ্রæত আমাদের দেশনেত্রীকে সুস্থ করে আমাদের মাঝে নিয়ে আসেন এবং একই সঙ্গে দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে সুস্থ করে আমাদের মাঝে নিয়ে আসেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন সফর নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের অপপ্রচারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেশনেত্রী চিকিৎসার জন্যে লন্ডনে যাওয়ার পরে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল অনেক নাটক সাজিয়েছে। তারা দেশনেত্রীর এই লন্ডন সফরকে হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিভিন্নভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছে এবংকি ষড়যন্ত্রের সফর বলেও আখ্যায়িত করেছেন। আমরা একথার প্রতিবাদে অবশ্যই জানিয়েছি, দেশনেত্রীর বিদেশে গিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র করতে হয় না। দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তিনি দীর্ঘকাল গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন এবং দেশের মানুষকে সঙ্গে নিয়েই তার এই সংগ্রাম অব্যাহত রয়েছে।
ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর ক্ষমতাসীন দল ‘তেলে-বেগুনে’ জ্বলে উঠেছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রায় ঘোষণার পরে আওয়ামী লীগ তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠেছে এবং তারা এমন সব মন্তব্য করেছে যে মন্তব্য শুধু অশালীনই নয়, তা আদালত অবমাননার শামীল। গতকাল একজন মন্ত্রী যিনি নিজে হাইকোর্ট দ্বারা সাজাপ্রাপ্ত, তার মন্ত্রিত্ব থাকা উচিৎ নয়, তিনি আবার প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ দাবি করেছেন। খুব চিৎকার করে কথা বলছেন। আমি বলতে চাই, আগে নিজের মুখের দিকে তাঁকান। নিজেদের চেহারা আয়নাতে দেখুন। আপনারা যেসমস্ত কথা বলছেন, কোথায় নিয়ে গেছেন রাষ্ট্রকে, কোথায় নিয়ে গেছেন দেশকে। সত্য কথা বেরিয়ে এসেছেন আপীল বিভাগের রায়ের মধ্য দিয়ে। যে একটা দাণবীয় সরকারের পরিণত হয়েছেন আপনারা, দানবের মতো সব কিছুকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন, গণতন্ত্র ধ্বংস করছেন, প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধবংস করছেন, মানুষের মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দিচ্ছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী বলেছেন, আমরা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই এবং নির্বাচনকালীন সময়ে একটি নিরপেক্ষ সহায়ক সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় আমরা সেই নির্বাচন চাই। দেশনেত্রী সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন, অতি দ্রæত দেশে ফিরে আসবেন। তিনি যে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন, সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা দেশে একটি নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে সহায়ক সরকারের অধীনে এই সরকারকে নির্বাচন দিতে বাধ্য করবো।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদেরকে কোনো কাজই করতে দেয়া হবে না, আমাদেরকে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো প্রয়োগ করতে দেয়া হবে না, আমাদেরকে আমাদের দলের আর্দশ প্রচার করার জন্য কোনো সুযোগ দেয়া হবে না, কোথাও সভা করতে দেয়া হবে না, কোথাও সমিতি করতে দেয়া হবে না, কোথাও র‌্যালী করতে দেয়া হবে না। এমনকি এই যে সদস্য সংগ্রহ অভিযানের মতো প্রোগ্রাম করতেও সব জায়গায় বাঁধা দিচ্ছে।
শুধু ক্ষমতাসীনরাই হেলিকপ্টারে করে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। সকলের জন্য লেভেল প্ল্যায়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে, সমান্তরাল ভুমি তৈরি করতে হবে। তাহলেই নির্বাচনের একটা সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি হবে, আমরা নির্বাচনে যাওয়ার একটা পথ খুঁজে পাবো।
দোয়া মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ আবদুল মালেক প্রমুখ।

 



 

Show all comments
  • masud sikder ১২ আগস্ট, ২০১৭, ১২:৪৬ পিএম says : 0
    inkilab jonogoner kotha bole
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ