Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বঙ্গবন্ধু গৃহীত কৃষিনীতি বাংলাদেশকে বিশ্বের রোল মডেলে পরিণত করেছে

| প্রকাশের সময় : ১২ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম


স্টাফ রিপোর্টার : খাদ্যশস্যর উৎপাদনে বাংলাদেশ গত কয়েক দশকে উল্লেখযোগ্যভাবে অগ্রগতির কারণে বিশ্বে ‘রোল মডেলে’ পরিণত হয়েছে। এই কয়েক দশকে দেশকে খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তুলতে পেরেছে বাংলাদেশ। এছাড়াও শাক-সবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে তৃতীয় এবং মাছ উৎপাদনে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উদ্দীপনামূলক আকর্ষণীয় উন্নয়ন নীতিমালা গ্রহণ করেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিগত বছরগুলোতে সেই নীতিমালা অনুসরণ করে কৃষি খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে আসছেন।
স্বাধীনতার পরে ৪৫ বছরে প্রায় ৩০ শতাংশ আবাদি ভূমি কমে যাওয়া সত্তে¡ও ধানসহ খাদ্যশস্য উৎপাদন ১৯৭২ সালের ১ দশমিক ১০ কোটি মেট্রিক টন থেকে বেড়ে প্রায় ৪ কোটি মেট্রিক টনে দাঁড়িয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, কৃষিখাতে বঙ্গবন্ধুর অবদান ছিল বিস্ময়কর। তখনকার প্রচলিত চাষাবাদ পদ্ধতির ক্ষেত্রে কৃষির আধুনিকায়নে জাতির পিতা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। সে সময়ে কৃষকদের খাদ্যশস্যের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু কিছু দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, যাতে কৃষকরা ভালোভাবে জীবনযাপন করতে পারে। বঙ্গবন্ধু কৃষিখাতের মাঠ কর্মী, সরকারি কর্মকর্তাদের মর্যাদা বৃদ্ধি করেন।
১৯৭৫ সালের ২৫ মার্চ এক সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের কথা তুলে ধরে ‘বঙ্গবন্ধুর কৃষি ভাবনা’ শীর্ষক এক নিবন্ধে এ্যাড. এম রহমত আলী বলেন, বঙ্গবন্ধু চাষাবাদের জন্য এবং দেশে আরো শস্য উৎপাদনে সহযোগিতার জন্য শিক্ষিত লোকদের তাদের গ্রামে ফিরে যাওয়ার আহŸান জানান।
রহমত আলী লিখেছেন, বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে বলেছেন, যদি আমরা একই জমিতে দু’বার শস্য উৎপাদন করতে পারি তাহলে দেশে খাদ্যশস্যের কোন ঘাটতি থাকবে না। ‘স্বাধীনতার পরে কৃষকদের উন্নয়নে এবং খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বঙ্গবন্ধু কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।’
রহমত আলী বলেন, খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে বঙ্গবন্ধু উন্নত এবং স্বল্প মেয়াদী চাষাবাদ পদ্ধতি, মানসম্মত বীজ সরবরাহ, সেচ এবং অন্যান্য কৃষি উপকরণ সহযোগিতার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন । প্রান্তিক চাষীদের কৃষি ঋণ মওকুফ, তাদের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলা প্রত্যাহার এবং ভূমিহীনদের মাঝে খাস জমি বণ্টন করেন।
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, কৃষি ডিপ্লোমাধারীদের প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড কর্মকর্তার মর্যাদা দেয়ার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কৃষি খাতের পুনরুজ্জীবন ঘটান।
ভিসি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এখন কৃষিখাত এগিয়ে নিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন এবং বঙ্গবন্ধু গৃহীত নীতিমালা অনুযায়ী কৃষিখাতে পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (বিআরআরআই) সাবেক মহাপরিচালক ড. জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস বলেন, ১৯৭৩ সালের ১৩ ফেব্রæয়ারি কৃষি ডিপ্লোমাধারীদের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তার মর্যাদা দান দেশের কৃষিখাতের উন্নয়নে আরো কাজ করার উদ্দীপনা জুগিয়েছে।
বিএআরসির সাবেক পরিচালক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বঙ্গবন্ধু যদি দেশে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান চাষের সুযোগ প্রসারিত না করতেন তাহলে বাংলাদেশ কখনোই খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ন হতে পারতো না।
আলম বলেন, বাংলাদেশ উচ্চ ফলনশীল প্রায় ৭০ জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে এবং শাক-সবজি ও মাছসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদনে টেকসই অবস্থান নিশ্চিত করেছে। বঙ্গবন্ধু কৃষি গবেষণা ব্যবস্থা এবং দেশে প্রযুক্তি নির্ভর আধুনিক কৃষি পদ্ধতি চালু করার ফলে এটা সম্ভব হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ