Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলে আবার ভারী বর্ষণের সতর্কতা আউশ আমনের এখনো কোনো ক্ষতি হয়নি

| প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : গতমাসে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪০ভাগেরও বেশী বৃষ্টির পরে মধ্য শ্রাবন থেকে কয়েকদিনের ভরা বর্ষা মওশুমে শরতের আকাশের সাদা মেঘপুঞ্জের ভেলা ভেসে বাড়ানোর পরে গতকাল সকাল ১০টার পরেই দক্ষিণাঞ্চলে আবার মূলধারার বর্ষণ শুরু হয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে বরিশালসহ উপক’লীয় এলাকায় হালকা থেকে মাঝারী বর্ষণসহ কোথাও কোথাও ভারী বর্ষণের সম্ভবনার কথাও বলা হয়েছে। এমনকি আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণের সম্ভবনার কথাও বলা হয়েছে। পাশাপাশি দিন ও রাতের তাপমাত্রা হ্রাসসহ পরবর্তি ৪৮ঘন্টায়ও দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাতের প্রবনতা বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ। দক্ষিণাঞ্চলের সবকটি নদী বন্দরকে ১নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
গতমাসে বরিশালে স্বাভাবিক ৫১৯মিলিমিটারের স্থলে ৭৭২মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। যা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ৪০.২% বেশী। এসময় সারা দেশের গড় বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল ৩২.৭% বেশী। চলতি মাসেও বরিশালে স্বাভাবিক ৪৩৩-এর স্থলে ৩৯০Ñ৪৭৫মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের সম্ভবনার পূর্বাভাষ দিয়ে রেখেছে আবহাওয়া বিভাগ। তবে গতকাল বিকেল পর্যন্ত মাসের প্রথম ১০দিনে বরিশালে প্রায় ১৩৭মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ২১.৭ মিলিমিটার। তবে সামনে ভাদ্রের অমাবশ্যার আরো ভরা কোটালে ভারি বর্ষনের সম্ভবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না আবহাওয়াবীদগন। চলতি মাসে সারা দেশেই স্বাভাবিক অপেক্ষা কিছুটা বেশী এবং মাসের প্রথমার্ধে ভারি বর্ষনের সম্ভবনার সতর্কতা জারি রেখেছে আবহাওয়া বিভাগ। এবারে গত তিনটি মাসের অতি বর্ষণে দক্ষিণাঞ্চলে শাক-সবজিজ বেশ কিছুটা ক্ষতি হলেও এখনো আমন বীজতলা ও রোপা আমনের তেমন কোন সমস্যা সৃষ্টি হয়নি বলে কৃষি স¤প্রসারন অধিদফ্তর-ডিএই’র বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক শেখ ওমর আলী জানিয়েছেন। পাশাপাশি উঠতি আউশের ওপরও কোন বিরূপ প্রভাব পড়েনি বলে তিনি জানান। মাঠ পর্যায়ে ডিএই’র প্রতিটি কর্মীকে সতর্ক রাখা হয়েছে। চলতি খরিপ-২ মওশুমে দক্ষিনাঞ্চলের জেলাগুলোতে ৭লাখ ৪০হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষে মাঠে কাজ করছেন কৃষকরা। অপরদিকে লক্ষমাত্রা অতিক্রম করে এবার দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ২.১০লাখ হেক্টরে আউশের আবাদ হয়েছে। যা সারা দশের মোট আবাদকৃত জমির ২০%। চলতি মওশুমে আমনের উৎপাদন বিঘিœত না হলে প্রায় ১৬লাখ টন চাল পাওয়া যেতে পারে দক্ষিণাঞ্চল থেকে।
গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে দক্ষিণাঞ্চলে স্বাভাবিকের চেয়ে যথাক্রমে ১৫২% ও ১৬০%-এর মত বেশী বৃষ্টি হয়েছে। তবে মে মাসে বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৫.৯% কম । আবার জুনমাসে তা ৫% বেশী হবার পরে জুলাই মাসে বরিশাল অঞ্চলে ৪০.২% বেশী বৃষ্টি হয়েছে। এবারের অতিবর্ষণ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলেই শাক-সবজির আবাদসহ এর উৎপাদনকে চরম বিপর্যয়ের কবলে ফেলেছ। ফলে বাজারে সরবারহ হৃাসের পাশাপাশি এখন ৫০টাকা কেজির নিচে কোন সবজি মিলছে না। তবে সদ্য সমাপ্ত পূর্ণিমার জোয়ারে দক্ষিণাঞ্চলের ফসলী জমির খুব কোন ক্ষতি না হলেও আসন্ন ভাদ্রের অমাবশ্যায় কৃষকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এসময়ে আউশে ফুল আসা সহ অনেকে ধানের থোর আসবে। কোন কোন এলাকায় আউশ কর্তন্রও শুরু হতে পারে। কিন্তু কোন অবস্থায় তা নিমজ্জিত হলে উৎপাদনে চরম বিপর্যয় নেমে আসার আশংকা রয়েছে। আবহাওয়া বিভাগের মতে, মওশুমী বায়ুর বর্ধিতাংশের অক্ষ ভারতের পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার ও হিমালয়ের পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মওশুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং বঙ্গোপসাগরে মাঝারী অবস্থায় রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ