পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উত্তর-পূর্ব ভারতে অতি বর্ষণ অব্যাহত
শফিউল আলম : উজানভাগে ভারতে মূল অববাহিকায় নদ-নদীর পানি বাড়ছে। এর প্রভাবে নদ-নদীগুলোর ভাটিতেও বাড়ছে পানি। প্রধান দুই অববাহিকায় অবস্থিত ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ এবং গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীসমূহে পানি ক্রমেই বৃদ্ধির দিকে রয়েছে। অন্যদিকে হিমালয় পাদদেশীয় অঞ্চলসহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম এবং আসাম, অরুণাচল, মেঘালয়সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলব্যাপী ভারী থেকে অত্যধিক ভারী বর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। একই সাথে সেসব অঞ্চলে বন্যাজনিত সম্ভাব্য দুর্যোগের চূড়ান্ত সতর্কতা রেড অ্যালার্ট এবং কতিপয় অঞ্চলে চূড়ান্ত প্রস্তুতি সতর্কতা বা অরেঞ্জ অ্যালার্ট বলবৎ রাখা হয়েছে আগামী ১৩ আগস্ট রোববার পর্যন্ত।
গতকাল (বুধবার) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সর্বশেষ তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, দেশের মোট ৯০টি নদ-নদীর পানির সমতল স্টেশনের মধ্যে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৪৩টিতে এবং হ্রাস পায় ৪৬টিতে। ৩টি নদী ৪টি পয়েন্টে বিপদসীমায় রয়েছে। এরমধ্যে সিলেটের সুরমা নদীর পানি কিছুটা হ্রাস পেয়ে কানাইঘাট পয়েন্টে ঠিক বিপদসীমার বরাবর (১৩ দশমিক ২০ মিটার) এবং কুশিয়ারা নদীর পানি অমলশীদ পয়েন্টে হ্রাস পেয়ে বিপদসীমার ৫ সেমি উপরে ও শেওলা পয়েন্টে ২১ সেমি উপর দিয়ে প্রবাহিত প্রবাহিত হচ্ছিল। যশোরের ঝিকরগাছায় কপোতাক্ষ নদীর পানি আরও হ্রাস পেয়ে বিপদসীমা বরাবর (৪ দশমিক ১১ মিটার) প্রবাহিত হচ্ছিল।
তবে উজানে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের পানি ভাটিতে গড়াতে শুরু করলে আগামী সপ্তাহ নাগাদ বৃহত্তর সিলেটের সুরমা-কুশিয়ারাসহ বিভিন্ন নদ-নদী আবারও ফুঁসে উঠতে পারে। অথচ উজানভাগে ভারতে সর্বাত্মক বন্যা প্রস্তুতি ও সতর্কতা থাকলেও দেশে বিশেষ করে সিলেট, মৌলভিবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা জেলাসমূহে পানি উন্নয়ন বোর্ড তথা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তেমন কোন প্রস্তুতি তৎপরতা এখনও শুরু করা হয়নি।
নদ-নদীর প্রবাহের সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীসমূহের পানির সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদের পানির সমতল বৃদ্ধি আগামী ২৪ ঘণ্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। অপরদিকে গঙ্গা-পদ্মা নদ-নদীর পানির সমতল বৃদ্ধি আগামী ২৪ ঘণ্টায়ও অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানির সমতল স্থিতিশীল এবং কুশিয়ারা নদীর পানির সমতল হ্রাস পেতে পারে।
যদিও উত্তর-পূর্ব ভারতে অতিবৃষ্টি-জনিত ঢল-বন্যার পানি ভাটির দিকে ধেয়ে আসলেই পাল্টে যেতে পারে এখনকার পরিস্থিতি। যমুনা-ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা-পদ্মা এবং মেঘনা (সুরমা-কুশিয়ারা) এই তিনটি প্রধান অববাহিকার নদ-নদীসমূহের উৎসে মূল অববাহিকা বা ক্যাচমেন্ট এরিয়া ভারতে বিশেষ করে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। ভাটিতে বাংলাদেশে এসব নদ-নদীতে পানির ৭০ থেকে ৯০ ভাগ উৎস ভারতের উজান অববাহিকা থেকেই উৎসারিত।
ভারতে অতিবৃষ্টি ও রেড অ্যালার্ট অব্যাহত
ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে রেড অ্যালার্ট অব্যাহত রয়েছে। ভারী থেকে অত্যধিক বর্ষণে ভারতে উজানভাগে নদ-নদীর অববাহিকায় পানি ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের উজানভাগে অনেকটা লাগোয়া প্রধানত পার্বত্য উত্তর-পূর্ব ভারতে গত ৩-৪ দিন ধরে বর্ষণের মাত্রা বেড়েই চলেছে। সেখানকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল আবারো ভয়াবহ বন্যার প্রায় মুখোমুখি। সাব-হিমালয় পাদদেশীয় অঞ্চলসহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম, অরুণাচল, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মনিপুর রাজ্যগুলোতে অবিরাম ভারী থেকে অত্যধিক ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। অতি বর্ষণের কারণে পাহাড়ি ঢল এবং বন্যাজনিত সম্ভাব্য দুর্যোগের ভারতীয় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার সতর্কতা বলবৎ রেখেছে।
গতকাল সর্বশেষ তথ্য-উপাত্ত ও পূর্বাভাসে জানা গেছে, ভারী থেকে অতিভারী এমনকি অত্যধিক বর্ষণের কারণে আসাম, মেঘালয়, অরুণাচল, ত্রিপুরা, মিজোরাম রাজ্যগুলোতে ‘রেড অ্যালার্ট’ অর্থাৎ বন্যা, পাহাড়ি ঢল-জনিত সম্ভাব্য দুর্যোগের চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়। একইভাবে আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে আগামী রোববার (১০, ১১, ১২ ও ১৩ আগস্ট) পর্যন্ত পরবর্তী ৪ দিনে ভারী থেকে অত্যধিক ভারী বর্র্ষণের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এ কারণে এসব অঞ্চলজুড়ে বলবৎ থাকবে বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে দুর্যোগের চূড়ান্ত সতর্কতার লক্ষ্যে ‘রেড অ্যালার্ট’। অঞ্চলগুলো হলো সাব-হিমালয়ান গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিম এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম, অরুণাচল, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও মনিপুর রাজ্য। সাব-হিমালয়ান গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয় রাজ্যে আগামী ১৩ আগস্ট জারি থাকবে সম্ভাব্য দুর্যোগের পূর্ব-প্রস্তুতি সতর্কতা বা ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট’। ভারী থেকে অত্যধিক ভারী বর্ষণ এভাবে অব্যাহত থাকলে ভারতীয় উজানভাগে সম্ভাব্য দুর্যোগের সতর্কতা আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।