Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গঙ্গাচড়ায় নিম্নমানের পাট উৎপাদন লোকসানে কৃষক : রিবন রেটিং পদ্ধতিতে কাজ হচ্ছে না

| প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোহাঃ ইনামুল হক মাজেদী, গঙ্গাচড়া (রংপুর) থেকে : পাট জাগ দেয়ার স্থান ও সচেতনার অভাবে রংপুুর জেলার গঙ্গাচড়ায় নিম্নমানের পাট উৎপাদন হচ্ছে। এ ছাড়া রেবন রেটিং পদ্ধতি কোনো কাজে আসছে না। ফলে পাট চাষিরা প্রকৃত দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সোনালি আঁশ বলে খ্যাত পাটের আবাদে গঙ্গাচড়ায় কৃষকদের আগ্রহ কমছে। গত বছর পাটের দাম প্রকৃত কৃষকরা কম পাওয়ার কারণে পাট চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। তার ওপর কৃষকরা সনাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দেয়ার কারণে পাটের আঁশের গুণগতমান দিন দিন কমছে। কৃষকরা আজও আবদ্ধ ও নোংরা পানিতে পাট জাগ দিয়ে থাকেন। পরে মাটিতে পাট শুকাতে দিচ্ছেন। এ সব কারণে পাটের মান খারাপ হচ্ছে। আর মান খারাপ হওয়ার কারণে দাম পাচ্ছে কম।
কৃষকরা ও ব্যবসায়ীরা জানান, পাটের মান খারাপ হলে কমপক্ষে মণ প্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কম হবে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কৃষকরা আজও সেই পুরাতন পদ্ধতিতে পাট জাগ দিচ্ছেন। পাট জাগ দেওয়ার জায়গা না থাকার কারণে বাধ্য হয়ে কৃষকরা নোংরা আবদ্ধ পানিতে কাদা দিয়ে জাগ দিচ্ছে। চেংমারী গ্রামের কৃষক হামিদ বলেন, এ বছর আমি ৭৭ শতক জমিতে পাট আবাদ করেছেন। উৎপাদন খরচ হয়েছে ৩৮ হাজার টাকা। বর্তমান বাজার অনুযায়ী পাট বিক্রি করে হয়তো পাবো ৩৩ হাজার টাকা। ৫ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হবে। তবে তিনি বলেন, লাভের মধ্যে পাট কাঠিটাই লাভ। তিনি জানান, পাট চাষে আগ্রহ কমছে। লালচাঁদপুর গ্রামের মোঃ আব্দুল মতিন এ বছর ৩০ শতক জমিতে পাট আবাদ করেছেন। পাট কেটে পাশে একটি পুকুরে জাগ দিয়েছেন।
উপজেলার কোলকোন্দ, বেতগাড়ী, খলেয়া, গজঘণ্টা, ল²ীটারী ও বিভিন্ন এলাকায় চোখে পড়ে পাট জাগ দেয়ার দৃশ্য। গঙ্গাচড়া হাটে গিয়ে দেখা যায়, ‘এ’ ও ‘বি’ গ্রেডের এক মণ পাট বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩০০ টাকা থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা। সেখানে ‘সি’ গ্রেডের এক মণ পাট বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১শ টাকা। শুধু সঠিক নিয়মে জাগ না দেওয়ার কারণে পাটের মান খারাপ হওয়ায় মণ প্রতি কৃষকরা ২০০ থেকে ৩০০ টাকা কম পাচ্ছে। ফলে কৃষকদের উৎপাদন খরচ উঠছে না।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় ২ হাজার ২’শ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। এর মধ্যে তোষা পাট ১ হাজার ৭শ হেক্টর এবং দেশি জাত ৫০০ হেক্টর।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুলুল্লাহ আল মামুন বলেন, রেবন রেটিং পদ্ধতিতে পাটের আঁশ ছাড়ানো হলে পাটের মান ভালো হয়। দামও বাড়ে। তবে লেবার একটু বেশি লাগে। তবে পানি কম থাকলে রেবন রেটিং পদ্ধতি খুবই ভালো ফলাফল দিবে। কৃষকরা আজো পাট জাগ দিতে পুরাতন পদ্ধতি ব্যবহার করছে। পাটের গুণগত মান বাড়ানোর জন্য খোলা জায়গায় স্রোতযুক্ত পানিতে পাট জাগ দেয়ার নিয়ম। তবে পাট জাগ দেয়ার সময় কখনোই কাদা ব্যবহার করা ঠিক নয়। এতে পাটের মান খারাপ হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ