পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : বগুড়ায় বহিষ্কৃত শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকারের দ্বারা ধর্ষণের ও তুফানের শ্যালিকা পৌর কাউন্সিলর রুমকির ভয়াবহ শরীরীক নির্যাতনের শিকার তরুণী সোনালী আকতার ও তার মা মুন্নীকে ১১ দিন ধরে বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার দেওয়ার পর গতকাল তাদের রিলিজ দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল থেকে রিলিজের পর পুলিশ তাদের পরবর্তী করনীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত দিতে বগুড়ার অতিরিক্তি জেলা ও দায়রা জজ আদালত -১ ( শিশু ) বিষয়ক আদালতের বিচারক এমদাদুল হকের আদালতে নিলে বিজ্ঞ বিচারক মোঃ ইমদাদুল হক এ ব্যাপারে দেওয়া এক আদেশে ধর্ষিতা সোনালীকে রাজশাহীস্থ সেফ হোমে এবং ধর্ষিতার মা মুন্নীকে ঢাকাস্থ ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠাবার নির্দেশ দিয়েছেন ।
আমি কি অপরাধি কেন সেফ হোমে যাব, শুনেছি ওটা কারাগারের মত
বগুড়ায় ধর্ষিতা তরুণী ও তার মাকে হাসপাতার কর্তৃপক্ষ তাদের দু’জনকে হাসপাতাল থেকে বিচারিক আদালতে উপস্থিত করলে যখন সে বুঝতে পারে তাকে রাজশাহীর সেফহোমে পাঠানোর আদেশ হতে পারে তখন সে কান্না জড়ানো কন্ঠে বলে, আমি কেন সেফহোমে যাব, ওটাতো কারাগারের মত, আমি তবে অপরাধি, কি অপরাধ অপরাধ আমার? আইনী বাধ্যবকতা ও বিকল্প না থাকায় সেই সাথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার স্বার্থেই আদালত যখন তাকে রাজশাহীর সেফহোমে এবং তার মাকে রাজধানী ঢাকার মিরপুর ভিকটিম সাপোর্ট সেনটারে পাঠানোর নির্দেশ ঘোষণা করলেন তখন কান্নায় ভেঙে পড়ে সে অশ্রু সজল হয়ে ওঠে সেখানে উপস্থিত সবার !
এনজিওরা কোথায় ?
নারীবাদী যেসব এনজিওরা নারীমুক্তি, নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে অহোরাত্রি চিৎকার, চেঁচামেচি, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ইত্যাদী করে বগুড়ার এই নির্যাতীতা তরুণীর পাশে তারা কেউ নেই কেন এই প্রশ্ন জোরে শোরে শোনা গেল বিচারিক আদালতের কক্ষে ্। বেশ কয়েকজন আইনজীবী ও মহিলা পুলিশ বিষয়টির প্রতি সাংবাদিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আজ যদি এনজিওরা এই মেয়েটির একটি নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতো তাহলে কি আজ মেয়েটিকে কাঁদতে হতো এভাবে ?
পুলিশী তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ ঃ আইও বদলের দাবি
দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী তরুণী ধর্ষণ ও শারীরীক নির্যাতন করে মাথা ন্যাড়া করা মামলায় গ্রেফতার ধর্ষণ তুফান সরকার, তার স্ত্রী আশামনি, শাশুড়ি রুমি খাতুন, শ্যালিকা ও পৌর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মারজিয়া হাসান রুমকি ঘটনার পরে প্রকাশ্যে ও মিডিয়ায় ঘটনার কথা স্বীকার করলেও পুলিশ রিমান্ডে যাওয়ার পরেই তারা বদলে যায় । ফলে তুফানকে চার দফা. রুমকিকে ৩দফা এবং অন্যদের একদফা করে রিমান্ডে নেওয়ার পরে আদালতে হাজির করলেও তারা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করতে রাজী হয়নি । ৪ দফা আদালতে হাজির করার সময় তুফান সরকার এমন ভাবে অভিনয় করে যেন মনে হয় পুলিশ তাকে পিটিয়ে তক্তা বানিয়েছে । তবে শেষ বার যখন আদালত তুফানের জামিনের আবেদন নাকোচ করে দেয় তখনই বদলে যায় তুফানের বডি ল্যাংগুয়েজ । আর যখন জেলখানায় নেওয়ার যখন পুলিশ ভ্যানের দিকে নেওয়া হয় তখন সে প্রায় দৌড়ে গিয়ে প্রিজন ভ্যানে গিয়ে ওঠে । রাজনৈতিক নেতার স্টাইলে হাত নেড়ে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বলে, মামারা চিন্তা করিসনা আবার দেখা হবে । এই দৃশ্য দেখে বিস্মিত কন্ঠে কয়েকজন আইনজীবী বলেন, পুলিশ্ই কি তবে তাদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী না দেওয়ার কথা বলে দিয়েছে। অনেকেই মামলার আইও বদলেরও কথা বলেছেন ।
প্রতিবাদ সমাবেশ জাসদের ঃ পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলী দাবি
বগুড়ায় ধর্ষকদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার এবং স্কুলছাত্র মাশুক হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবীতে বগুড়া শহর জাসদের পক্ষথেকে মানব বন্ধন ও সমাবেশ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে শহরের প্রাণকেন্দ্র সাতমাথায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়। শহর জাসদের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ দাস রঞ্জন এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখে কেন্দ্রীয় জাসদের অন্যতম নেতা এ্যাড. এমদাদুল হক ইমদাদ, বগুড়া জেলা জাসদের সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হোসেন খান রতন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক সরকার, জাহিদুল ইসলাম খান লজে, আব্দুল হাকিম বেগ, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাড. আব্দুল লতিফ পশারী ববি, জেলা জাসদ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক বুলু, ফারুক, শহর জাসদের সাংগঠনিক আতিকুজ্জামান তুহিন, জেলা যুবজোটের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক, শ্রমিক নেতা মকবুল হোসেন, আব্দুল মোমিন মন্ডল, আনছার আলী, আশরাফ আলী, খোকা, রায়হান প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন একটি সদ্য স্কুল জীবন শেষকরা মেয়েকে ধর্ষণ ও মা মেয়েকে মাথান্যাড়া করে দেওয়ার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীর পাশাপাশি স্কুলছাত্র মাশুক হত্যাকারিদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবী জানান। এই সভায় বক্তারা মাশুক হত্যাকান্ডের বেলায় দেখলাম বাদীর অজান্তেই একজনকে সাজানো কুনি বানিয়ে আটক করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেওয়ানো হলো । আবার তুফান গংদের বেলায় পুলিশ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী আদায়ে সম্পুর্ণ ব্যর্থ হর পুলিশ । এই ধরণের পুলিশের দরকার সেই বগুড়ায় ওদের অন্যত্র বদলী করা হোক ।
জেলা যৌন হয়রানি নির্মূলকরণ নেটওয়ার্ক, বগুড়ার আহŸায়ক এ্যাড: আল মাহমুদ, যুগ্ম আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান ফিজু, এ্যাড: আশরাফুন নাহার সপ্না ও সদস্য সচিব মো: জলিলুর রহমান গতকাল এক বিবৃতিতে বগুড়ায় ধর্ষণ এবং পরবর্তী সময়ে মা ও মেয়েকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় ধর্ষক তুফান সরকার এবং এহেন কাজের সহিত অন্যান্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।