বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মিজানুর রহমান তোতা : পৃথিবীর সব দেশেই জীবনযাত্রা গতিশীল হওয়ায় জ্বালানী তেল পুড়ছে অতিমাত্রায়। তাতে বাতাসে বাড়ছে কার্বনডাই অক্সাইডের পরিমাণ। বাড়ছে গেøাবাল ওয়ামিংএর বিপদ। যার জন্য এখন বায়োডিজেল বা গ্রীন ফুয়েলের উৎপাদনের দিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে সবচেয়ে বেশী। বাংলাদেশে বায়ো ডিজেল বা গ্রীন ফুয়েল উৎপাদনের বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেই। সুন্দরবন ও বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় অঞ্চলসহ দেশের মাটি, আবহাওয়া ও পরিবেশ গাছপালা এবং জীববৈচিত্রের জন্য অনুকুল হওয়ায় প্রাকৃতিকভাবে বহু প্রজাতির গাছপালা, গুল্ম লতা জন্মায়। যার মধ্যে রয়েছে ‘জাট্রোফা কারকাস’। যা কোন কোন এলাকায় কচা গাছ, ঢাকিভেন্না ও জামালগোটা নামে পরিচিত। ওই গাছের পাতা বিষাক্ত হওয়ায় গরু-ছাগলে খায় না। যার জন্য প্রায় সবখানেই আবাদী জমি কিংবা বাড়ীর আইলে বেড়া হিসেবে ব্যবহার করা হয় ‘জাট্রোফা কারসাস’। অযতœ ও অবহেলায় বেড়ে উঠা ওই গাছ বিপুল সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র জানায়, জাট্রোফার জাত রয়েছে অন্তত ১শ’৭৫টি। জাট্রোফা কারকাস তার মধ্যে একটি। কয়েকজন কৃষি বিজ্ঞানী ও বন বিভাগের কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পার্শ্ববর্তী ভারত ও মায়ানমারে জাট্রোফা কারকাস সীড দিয়ে বায়ো ডিজেল উৎপাদনের পরীক্ষা করে সফল হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, প্রতি হেক্টরে উৎপাদিত জাট্রোফা কারকাস সীড প্রক্রিয়াজাত করে ১ দশমিক ৬১ মেট্রিক টন বায়ো ডিজেল পাওয়া যায়। বন বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে পরিকল্পিত ও বাণিজ্যিকভাবে চাষের প্রয়োজন নেই। কারণ দেশে পর্যাপ্ত জাট্রোফা কারকাস সীড রয়েছে। দরকার শুধু উদ্যোগের। এটি বাস্তবায়ন হলে দেশে নতুন এক যুগের সৃষ্টি হবে নিঃসন্দেহে। গড়ে উঠবে দেশে জ্বালানী তেল শিল্প। দেশ আর্থিকভাবে বিরাট লাভবান হবে। জাতীয় অর্থনীতি হবে সমৃদ্ধ। এই বক্তব্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীদের।
সুত্র জানায়, ইতোমধ্যে ফিলিপাইন, আফ্রিকা ও থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে জাট্রোফা কারকাস থেকে জ্বালানী তেল উৎপাদন হচ্ছে। সেখানে জাট্রোফা কারসাস সীড এক্সপেলার করে ট্রান্সএন্ট্রারিফিকেশন মাধ্যমে ট্রাইগ্লিসারওয়েট তারপর মেথানলে পরিনত করা হয়। তৈরী হয় বায়ো ডিজেল। যা গ্রীন ফুয়েল নামে পরিচিত। সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র ও বিশেষজ্ঞ বিজ্ঞানীদের কথা, দেশের মাটি, মানুষ, পরিবেশ ও মৎস্য সম্পদের স্বার্থে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা ভেবে বন বিভাগ, সড়ক ও জনপথ, রেল, খাস, পাহাড়, টিলা, চরাঞ্চল, সাগরপাড়সহ সব পতিত জমিতে যদি জাট্রোফা কারকাস চাষকে বাধ্যতামূলক করা যায় তাহলে জ্বালানী তেলের পেছনে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ও কমবে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের দেয়া তথ্যানুযায়ী দেশে প্রায় ২ লাখ হেক্টর পতিত জমিতে জাট্রোফা গাছ লাগানোর মাধ্যমে প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন বায়োডিজেল উৎপাদন করার সুযোগ বর্তমানে বিদ্যমান।
জ্বালানী তেল ছাড়াও জাট্রোফা কারকাসে প্রায় ৮ লাখ মেট্রিক টন সুষম জৈবসার তৈরী হবে খৈল হতে। যা উত্তম সুষম জৈব সার। যাতে প্রায় ৫% নাইট্রোজেন, ২.৫% ফসফরাস এবং ২% পটাশসহ মাটি ও ফসলের অন্যান্য সকল পুষ্টি উপাদান আছে। সুত্রমতে, জাট্রোফা গাছের বীজ হতে উৎপাদিত বায়োডিজেল খনিজ ডিজেলের তুলনায় ৮০% কম কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস নির্গত করে। ফলে, জাট্রোফা গাছ বাংলাদেশের পরিবেশ বান্ধব পরিচ্ছন্ন জ্বালানী বা বায়োডিজেল ও সার সংকটের নিরসন ঘটাতে পারে খুব সহজেই। দেশে বর্তমানে বছরে ৪০ লক্ষাধিক মেট্রিক টন জ্বালানী তেলের চাহিদা রয়েছে। জাট্রোফা এর একটা অংশ পুরণ করতে সক্ষম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।