Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতি বৈরী আচরণ করছে সরকার -সন্তু লারমা

| প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণাপত্রের এক দশক পেরিয়ে গেলেও তার বাস্তবায়ন না করে সরকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতি বৈরী ও দায়িত্বহীন আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা। জাতিসংঘ আদিবাসী বিষয়ক ঘোষণাপত্রের এক দশক ও আদিবাসী দিবস উদযাপন উপলক্ষে গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর সুন্দরবন হোটেলে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের ওপর নিপীড়নের নানা চিত্র তুলে ধরেন সন্তু লারমা নামে পরিচিত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অন্যতম এই নেতা। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উপর বৈরী আচরণের মাত্রা অতীতের সব রেকর্ড ভেঙেছে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভূমি নির্বিঘেœ অনায়াসে বেদখল হয়ে যাচ্ছে। অহঙ্কার ও ক্ষমতার দাপটে পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী আরো অসহায় হয়ে পড়ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো প্রতিকার নেই। যেন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও প্রান্তিক মানুষের জন্য কোথাও কেউ নেই। রাষ্ট্র ও সরকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর কাছ থেকে অনেক দূরে চলে যাচ্ছে।
আদিবাসী ফোরামের আয়োজনে এই সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে সন্তু লারমা বলেন, আদিবাসীদের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হিসেবে আখ্যা দেওয়ায় দেশের ৩০ লাখ আদিবাসী জনগণ মানবাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে আদিবাসী দিবসের বাণীতে আদিবাসী অধিকার ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের ঘোষণা দিলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি বলে অভিযোগ করেন সন্তু লারমা।
সম্পূর্ণ এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি ও জীবনধারাকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তাদের নিজভূমিতে সংখ্যালঘুতে পরিণত করা হয়েছে। নিজস্ব আত্ম পরিচয় ও সংস্কৃতি নিয়ে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। সন্তু লারমা বলেন, জাতীয় শিক্ষা নীতি, নারী উন্নয়ন নীতি, ষষ্ঠ ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উন্নয়ন ও অধিকারের কথা বলা হলেও বাস্তবতা ভিন্ন কথা বলছে।
২০০৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে আদিবাসী অধিকার ঘোষণাপত্র গৃহীত হয়। এতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মৌলিক অধিকার, আত্ম নিয়ন্ত্রণ অধিকার, ভূমি, অঞ্চল বা টেরিটরি ও প্রাকৃতিক সম্পদের উপর পূর্ণ অধিকার, ভূমির উপর ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক উন্নয়ন, শিক্ষাসহ নিজস্ব ভাষা ও জীবনধারা সংরক্ষণের স্বীকৃতি দেয় জাতিসংঘ। সংবাদ সম্মেলন থেকে আদিবাসী দিবস উদযাপনের ঘোষণায় জানানো হয়, আগামী ৯ অগাস্ট সকাল সাড়ে ৯টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হবে আদিবাসী ফোরামের মূল অনুষ্ঠান। এতে বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার পাশাপাশি লেখক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল উৎসব উদ্বোধন করবেন বলে কথা রয়েছে। সেদিন দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলাতেও আদিবাসী দিবস উদযাপিত হবে। এ বছরের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘জাতিসংঘ আদিবাসী অধিকার বিষয়ক ঘোষণাপত্রের এক দশক’।
দিবসটি উপলক্ষে জাতিসংঘ ঘোষিত ৯ অগাস্টকে আদিবাসী দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করাসহ বেশ কয়েকটি দাবি জানান সন্তু লারমা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, কলামনিস্ট লেখক সৈয়দ আবুল মুকসুদ, ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য এবং মানবাধিকার কর্মী নুমান আহম্মেদ খান উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ