Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৪ জুলাই ২০২৪, ২০ আষাঢ় ১৪৩১, ২৭ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

টাঙ্গাইলের সখিপুরে ৬ মাস আটক রেখে ভাতিজিকে ধর্ষণ

টাঙ্গাইলের সখিপুরে ৬ মাস আটক রেখে ভাতিজিকে ধর্ষণ | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০১৭, ৫:৪১ পিএম

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা
টাঙ্গাইলের সখিপুরে কলেজ ছাত্রীকে তার প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার কথা বলে ৬ মাস ১৭ দিন আটক রেখে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেছে তার চাচা দুই সন্তানের জনক বাদল মিয়া (৩৮)। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষক বাদল মিয়াকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। গ্রেফতারকৃত বাদল পুলিশের কাছে পাশবিক এ ঘটনার সত্যতাও শিকার করেছে। পুলিশ তার কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে। শনিবার সকালে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মাহবুব আলস আরো জানান, সে এ ঘটনার সাথে সম্পূর্ণভাবে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বিস্তারিত বর্নণা করেছেন। পরে তাকে আদরতে প্রেরণ করা হয়। এদিকে আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিকেলে ধর্ষক বাদল মিয়া টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাসুমের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
জানা যায়, টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলার হাতিবান্ধা ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের কলেজ ছাত্রীর সাথে এক ছেলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ছেলেটিকে বিয়ে করতে মেয়েটি সহযোগিতা চায় তার সম্পর্কিত চাচা বাদল মিয়ার কাছে। বাদল চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি এলাকায় নির্জন একটি স্থানে পরিত্যক্ত বাড়িতে আসতে বলে মেয়েটিকে। তার কথামত মেয়েটি ওই বাড়িতে যায়। মেয়েটিকে ঘরে আটকে রেখে বাদল ওই ছেলেটিকে নিয়ে আসার কথা বলে চলে যায়। সন্ধ্যার দিকে কিছু খাবার নিয়ে আসে বাদল। মেয়েটিকে বলে আগামীকাল ছেলেটি আসবে। রাতের খাবার খেয়ে মেয়েটি অচেতন হয়ে পড়ে। পরের দিন সকালেও একই কথা বলে বাদল মিয়া। এভাবে বিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেখিয়ে খাবারের সাথে নেশা জাতিয় দ্রব্য খাইয়ে মেয়েটিকে অচেতন করে দীর্ঘ দিন ধর্ষণ করে।
গত (৩০ জুলাই) কয়েকজন শিশু খেলতে গিয়ে কান্নার শব্দ শুনে বিষয়টি স্থানীয়দের জানালে পরিবারের লোকজন ঘরের তালা ভেঙে জীর্ণশীর্ণ অসুস্থ্য অবস্থায় ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে সখিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। তার অবস্থার অবনতি হলে টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। ভিকটিমের ভাই সুমন মিয়া বাদী হয়ে গত ৩১ জুলাই সখিপুর থানায় বাদল মিয়াকে আসামী কওে একটি মামলা দায়ের করে। পরে টাঙ্গাইল হাসপাতালে ভিকটিমের ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়েছে। এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার বিকেলে টাঙ্গাইল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ভিকটিমের ২২ ধারা জবানবন্দি প্রদান করেছেন। আদালতে ভিকটিমের ২২ ধারা জবানবন্দি গ্রহণ শেষে টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রেরণ করেন। বর্তমানে ভিকটিম টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ভিকটিম জানান, তাকে পরিত্যক্ত একটি ঘরে আটক রেখে খাবারের সাথে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে বাদল মিয়া তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। তাকে ঠিকমত খাবার দেয়া হতো না। শারীরিক ও মানসিকভাবে সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পরে পরিবারের লোকেরা তাকে উদ্ধার করে। তার মত এরকম নির্যাতনের শিকার আর যেন কেউ না হয় সেজন্য ভিকটিম আসামীর ফাঁসি দাবি করেন।
ভিকটিমের বড় ভাই সুমন মিয়া ও মামলার বাদী বলেন, আমার বোনের মত এ ধরনের অমানুষিক নির্যাতনের শিকার আর কেউ যেন না হয় সে জন্য আসামীর দৃষ্ট্রান্তমুলক শাস্তির দাবি করেন।

শনিবার টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন এ ঘটনায় নির্যাতিতার ভাই সুমন মিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা করা হলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল গত শুক্রবার মির্জাপুর থেকে বাদল মিয়াকে গ্রেফতার করে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে সে ধর্ষনের ঘটনা শিকার করেছে বলে জানান তিনি।



 

Show all comments
  • S. Anwar ৫ আগস্ট, ২০১৭, ৮:১৭ পিএম says : 0
    দেশে এসব কি হচ্ছে? আবার সরকার দলীয় নেতা-মন্ত্রীদের মুখে বড় বড় চাপাবাজি শুনলে গায়ে জ্বালা ধরে যায়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ