বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সরকার আদম আলী, নরসিংদী থেকে : ছোট বড় অসংগতি নিয়েই যুগ থেকে যুগান্তরে এগিয়ে চলছে সমাজ। যখনই অসংগতিগুলো অস্বাভাবিক হয়েছে তখনই এই অস্বাভাবিকতাকে ঘিরে রচিত হয়েছে প্রবাদ। দুধের চেয়ে শুটকির দাম বেশী ইত্যাদি। অস্বাভাবিক অসংগতি সৃষ্টি হয়েছে গমের ভুষি ও গমের আটা এবং দুধ ও শুটকির মূল্য নিয়ে। বাজারে বর্তমানে গমের আটার চেয়ে গমের ভুষি বিক্রি হচ্ছে কয়েকগুন বেশী দামে। এক কেজি গমের আটা বিক্রি হচ্ছে ২৩ থেকে ২৫ টাকা দরে। পক্ষান্তরে এক কেজি গমের ভুষি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা দরে। গ্রামের খুচরা বাজারে এক কেজি গমের ভুষি ৪০ টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। পাশাপাশি এক কেজি দুধ বিক্রি হচ্ছে বাজার ভেদে ৬০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে এবং ১ কেজি শুটকি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১২শত টাকা কেজি দরে। সচেতন ক্রেতারা জানিয়েছে, গমের আটা হচ্ছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান খাদ্য। এক সময় বাঙ্গালীরা গমের আটা খুবএকটা খেতো না। ১৯৮২ সালের পর আটা বাংলাদেশে দ্বিতীয় প্রধান খাদ্যে মর্যাদায় উন্নীত হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশের মানুষ আটার রুটি খেতো শখ করে। তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আটা নিয়ে রাজনীতিও হয়েছে প্রচুর। এরশাদ শাসনামলে আটা বাংলাদেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে শুরু করে। এর প্রধান একটি কারণ ছিল ডাক্তারদের উপদেশ। ডাক্তাররা রোগীদেরকে উপদেশ দিতো ভাতের বদলে আটা খাওয়ার জন্য। ভাত বেশী খেলে শরীর মোটা হয়ে যায়। ওজন বেড়ে যায়। ওজন বেড়ে গেলে ডায়াবেটিকস সহ বিভিন্ন রোগ বাসা বাধে শরীরে। এই ভয়ে মানুষ আটার দিকেই ঝুকে পড়ে বেশী। সরকারী কর্মচারীদের রেশনিংয়ে গম ও আটা সরবরাহ শুরু হয়। এমনইভাবে একদিন যে বাঙালীরা আটা খাওয়ার সমালোচনা করতো, সেই বাঙালীর কাছে আটা জনপ্রিয় খাবারে পরিনত হয়েছে। এখন আম বাঙালীরা ভাত, চিড়া-মুড়ির বদলে রুটিই খায় বেশী। ব্যাপক চাহিদার কারণে আটার দাম বাড়তে বাড়তে এখন প্রতি কেজি আটা ২৫ টাকা দরে এসে দাড়িয়েছে। পক্ষান্তরে গমের ভূষির দাম বেড়ে গেছে অস্বাভাবিকভাবে। বর্তমান বাজারে ১ কেজি গমের ভূষি বিক্র হচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ ১ কেজি আটার চেয়ে ১ কেজি ভূষির দাম ১১ টাকা বেশী। এব্যাপারে খুচরা বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ১ বছর ধরে গমের আটা ও গমের ভূষি দামে তারতম্য বিরাজ করছে। এক বছর আগে থেকেই আটার দামের চেয়ে গমের ভূষির দাম ৫/৬ টাকা বেশী দরে বিক্রি হয়ে আসছে। গত ১ মাসে কেজি প্রতি ভূষির দাম বেড়েছে আরো ৫/৬ টাকা। এর কারণ হিসেবে তারা জানিয়েছে সামনে কুরবানীর ঈদ। দেশে প্রচুর সংখ্যক গরু মোটা-তাজাকরণ প্রকল্প রয়েছে। এসব গরুর খামারীদের কাছে ভূষির চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাজারে ভূষির দামও অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। এছাড়া গমের আটার চেয়ে গমের ভূষির সরবরাহ কম থাকায় দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এই ঘটনাটি একটি বিশাল অসংঘতি। মানুষের চেয়ে গুরু ছাগলের সংখ্যা বেশী নয়। দেশের মানুষ যত বেশী আটা ভক্ষণ করে গরু ছাগলরা তত পরিমান ভূষি ভক্ষণ করে না। এরপরও গমের আটার চেয়ে গমের ভূষির দাম বৃদ্ধি নিছক একটি মুনাফাখুরী ছাড়া আর কিছুই নয় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন সচেতন গ্রাহকরা। এছাড়া গত কয়েক বছর ধরেই দুধের দামের চেয়ে শুটকির দাম বেড়েছে ৮ থেকে ১১শতগুন বেশী। শুটকি এক সময় বাঙালীর একটি প্রধান খাদ্য ছিল। যখন বাঙালীকে মাছে ভাতে বাঙালী বলে পরিচয় দেয়া হতো। দুধের দাম বরাবরই বেশী ছিল। শুটকির দাম ছিল অত্যন্ত কম। বর্তমানে শুটকির দাম বেড়ে এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে, ১ কেজি শুটকি কিনতে ১১ কেজি দুধ বিক্রি করতে হয়। অথচ বলাই বাহুল্য যে, দেশীয় গাভীর মধ্যে এমন গাভীর সংখ্যা খুবই কম যেসব গাভী ১১ কেজি দুধ দেয়। বিদেশী গাভী ছাড়া ১১ কেজি দুধ পাওয়া একেবারেই দুরাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।