Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

শৈলকূপায় থানা হাজতে আটক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ১১ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা : ঝিনাইদহের শৈলকূপা থানা হাজতে শুক্রবার সকালে শরিফুল ইসলাম ওরফে কাজল মন্ডল (৩৫) নামে এক ব্যক্তির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নির্যাতনে তার মৃত্যু হয়েছে নাকি তিনি আসলেই আত্মহত্যা করেছেন তা নিয়ে পুলিশ ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিচ্ছে। ফলে এই মৃত্যু নিয়ে নানা সন্দেহ ঘুরপাক খাচ্ছে। শৈলকূপা থানা থেকে মোমিনুল পরিচয়দানকারী এক পুলিশ সদস্য জানান, তিনি গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। নিহত কাজল মন্ডল কুষ্টিয়ার ইবি থানার হাসানবাগ রাজাপুর গ্রামের জুলহক মন্ডলের ছেলে বলে শৈলকূপা থানা থেকে নিশ্চিত করা হয়। তবে শৈলকূপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহিবুল ইসলাম বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, কাজল মন্ডল অন্য একটি বাড়িতে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে পুলিশ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে। কার বাড়িতে এবং কেন আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে তা ওসি জানাতে পারেনি। অন্যদিকে শৈলকূপা থানার এএসআই আজাদ হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার রাতে কাজল মন্ডলকে আমিই গাজাসহ শৈলকুপার ভাটই বাজার থেকে আটক করে থানা হাজতে রাখি। আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে হাজত খানার বাথরুমে গলায় রশি দিয়ে কাজল মন্ডল আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। তার লাশ যখন মর্গে, তখনও সুস্থ এবং বেঁচে আছে বলে এএসআই আজাদ সাংবাদিকদের জানান। শৈলকূপা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ ফাহমিদা হক জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে শৈলকূপা থানা পুলিশ গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী কাজল মন্ডল নামে এক আসামীকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসে। এ সময় কাজল মন্ডল খুবই মুমুর্ষ ছিল। তাকে দ্রুত (ভর্তি নং ৩৫৪২/১৮) চিকিৎসা দেওয়া হয়। কিন্তু রোগীর হার্টবিট কম থাকায় তাকে আবার পুলিশের গাড়িতেই ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। শৈলকূপা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জরুরী বিভাগের রেজিস্টারে হ্যংগিং রোগীর কথা উল্লেখ আছে। এদিকে দুপুর ১২.২৫ টার দিকে কাজল মন্ডলকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ শামরিন আহম্মেদ তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ডাঃ শামরিন আহম্মেদ জানান, অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তিনি আরো জানান, লাশের শরীরে আত্মহত্যার কোন চিহ্ন বা আলামত নেই। তাই ময়না তদন্ত ছাড়া মৃত্যুর কারণ বলা যাচ্ছে না। তিনি জানান, এমনও হতে পারে কোন আঘাতে আভ্যন্তরীণ ক্ষত সৃষ্টির কারণে রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে কাজল মন্ডলের আত্মহত্যার গল্প, স্থান ও মৃত্যুর সময় নিয়ে ওসি মহিবুল এবং এএসআই আজাদের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। অনেকের ধারণা নির্যাতনে থানা হাজতেই কাজল মন্ডলের মৃত্যু হয়। বিষয়টি পুলিশ ধামাচাপা দিতে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজহাবার আলী শেখ জানান, আমি একটি জরুরী মিটিংয়ে আছি। থানা হাজতে গলায় রশি দিয়ে মৃত্যুর কোন তথ্য আমার জানা নেই। নিহত কাজলের গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ার ইবি থানার রাজাপুরে যোগাযোগ করে জানা গেছে, তিনি পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন ছিলেন। তার বাবা জুলহক মন্ডল ছেলের কোন খোজ খবর রাখতেন না। ছোটখাট চুরির সাথে কাজলের সম্পৃক্ততার কথা গ্রামবাসী জানান। তবে শৈলকূপা থানায় কাজলের বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ