রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
আমিনুল হক, মীরসরাই (চট্টগ্রাম) থেকে : মধ্যম আকারের চিরসবুজ বৃক্ষটি উচ্চতায় সর্ব্বোচ্চ ২৫ থেকে ৩৫ ফুট হয়ে থাকে। পাতা, ফুল ও ফল সুগন্ধযুক্ত, আকারো মাঝারি মোটা এবং ডালপালা ছড়ানো থাকে। কাজুফল নামে পরিচিত একটি সুস্বাদু ফল এটি। যার মাংসল অংশের তুলনায় বাদামটি অধিক ক্ষুদ্রাকার হয়। মীরসরাই ও সীতাকুন্ড উপজেলার মধ্যবর্তী বারৈয়াঢালা রেঞ্জ এর অধিনে বনবিভাগের পাহাড়ী এলাকায় আশি ও নব্বই এর দশকে এই ফল বেশ ফলন হতো বলে প্রত্যক্ষদর্শী অনেকেই জানান। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, পর্তুগিজরা এই গাছ প্রায় ৪০০ বছর আগে আমাদের দেশে নিয়ে আসে। কাজুবাদাম দেখতে অনেকটা ডিম্বাকৃতির। তবে ছোট ফলের বর্ণ সবুজ। শক্ত আবরণের ভেতরেই থাকে খাবার অংশ। কাজুর রসালো অংশ যেটিকে আপেল বলা হয়, সেটিও বেশ সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। এই গাছে একই ফুলে একই ডাটায় দুটি ফল ধরে। আর দুটিই সুস্বাদু। প্রথমে নরম তুলতুলে কাজু আপেল জন্মে। এই আপেলের মাথায় জন্মে কাজু বাদাম। কাজু আপেল সবজি হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায়। অনেকে এর জুস খায়। আপেলের রঙ হয় হলুদ বা লাল। পাকলে এমনিতেই ঝরে পড়ে। আপেলের মাথায় বাঁকা ফলই কাজু বাদাম।
ফল ছাড়াও বাদামটি মিষ্টি। ফিরনি-পায়েস, পোলাও-কোর্মার সঙ্গে স্বাদ বাড়ানোর জন্য এ বাদাম ব্যবহার করা হয়। ভারতে প্রথম পর্তুগিজরা ভূমিক্ষয় রোধ করার জন্য কাজু বাদামের চাষ শুরু করে। মাঝারি আকৃতির গাছে প্রচুর ফল হয়। চারা রোপনের ৪/৫ বছরের মধ্যে গাছে ফুল-ফল আসে। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‹সি› ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ থাকে। আজকাল কাজু আপেল থেকে জ্যাম, জেলি, চাটনি ইত্যাদি তৈরি হচ্ছে। কাজুবাদাম গাছটি নানা ঔষুধি গুণসম্পন্ন। বীজের রঞ্জনসমৃদ্ধ রস মানসিক বৈকল্য, যৌন দুর্বলতা, হৃদপিন্ডে ধরপড়ানি এবং রিউম্যাটিক পেরিকার্ডাইটিসে ব্যবহার করা হয়। গুটি বসন্তের ফলে স্মৃতিশক্তি হারিয়ে গেলে এ ওষুধ উপকার করে। এর নির্যাস অ্যান্টি-হাইপারটেনসিভ গুণাবলিসম্পন্ন এবং মুখে গ্রহণ করা হলে রক্তে চিনির পরিমাণ কমিয়ে দেয়। কাজু আপেলের স্কার্ভি নিবারক বা আরোগ্যকারক গুণাবলি আছে। এর রস মূত্র বৃদ্ধিকারক, কিডনির গোলযোগ ও কলেরার চূড়ান্ত পর্যায়ে উপকারী। শুধু তাই নয় আরো অনেক ঔষধি গুণ সম্পন্ন এই কাজুফল গাছ বন বিভাগ ও কৃষি বিভাগের মাধ্যমে উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে বলে পরিবেশ পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন। বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের প্রবীণ চাষি শহিদুল হক জানান, ১০ বছর আগে ভারত থেকে সংগ্রহ করে একটি কাজু বাদামের চারা রোপণ করে পাঁচ বছর ধরে গাছটি থেকে নিয়মিত ফল সংগ্রহ করছেন। এখন একটি গাছেই প্রতি বছর ১০-১২ কেজি ফল হয়। নভেম্বর-ডিসেম্বরে ফুল আসে। বেশি যতেœর প্রয়োজন হয় না। বছরে একবার সার প্রয়োগ করা হলে ভালো ফল পাওয়া যায়। কাজুর সমস্যা হচ্ছে ফল ছাড়ানো। ফলের ওপরের খোসা মোটা। এতে এক ধরনের তেল থাকে। তেল মূল্যবান। তবে তেল খাওয়া যায় না। মীরসরাইয়ের ন্যাড়া পাহাড়ে কাজুফল চাষের উদ্যোগ নেয়া হলে আমাদের ঔষধি অনেক পুষ্টির অভাব পূরণ সহ অর্থকরি অবদান রাখতে পারবে এই ফলটি। মীরসরাই উপজেলা কৃষি অফিসার বুলবুল আহমেদ বলেন, এটি সত্যিই পুষ্টিকর ও অর্থকরি, আগামীতে সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচিতে এই গাছটি রোপনে উদ্বুদ্ধকরণের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।