পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন এবং রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত দিক থেকে তিনি তার সম্পর্কে কিছু খোলামেলা মন্তব্য করেছেন। ইন্দিরা গান্ধী তার আত্মজীবনীমূলক ‘মাই ট্রুথ’ নামক বইতে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক মন্তব্যের মধ্যে একটিতে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সর্বজন শ্রদ্ধেয় নেতৃত্ব দেখে তিনি বিস্মিত হন। এটা জাতির জনকের অন্যান্য বিস্ময়কর বৈশিষ্টকে ছাপিয়ে যায়। ইন্দিরা গান্ধী তার বইতে লেখেন, ‘তিনি খুবই আবেগচালিত, ঊষ্ণ হৃদয়ের মানুষ, একজন আইন প্রণেতার চেয়ে বেশি সর্বজন শ্রদ্ধেয় নেতা।’ ১৯৭১ সালে এই দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় জনগণের প্রতি তার অকুণ্ঠ সমর্থন জ্ঞাপনের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে গান্ধী তার বইতে কিছু ঐতিহাসিক সত্য তুলে ধরেন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অবনতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে গান্ধী খোঁজ-খবর রাখছিলেন। কিন্তু ঢাকার দ্রæত পরিবর্তনশীল পরিস্থিতি সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য পাচ্ছিলেন না।
ইন্দিরা গান্ধী লেখেন, ‘প্রথমে আমরা জানতে পারি সেটা হলো নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মুজিবকে (শেখ মুজিবুর রহমান) মেনে না নিয়ে পাকিস্তানীরা যুদ্ধ করছে।’ এরপর দিন যেতে থাকল এবং সর্বশেষ তথ্য আসা শুরু হলো। বিশ্ব জানতে পারল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু করে দিয়েছে।
এই ইতিহাস উল্লেখ করে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার বইতে লেখেন, ‘তারা (বাংলাদেশের জনগণ) যাই-ই করেছে তা করেছে তার (মুজিব) নামে এবং তার (মুজিব) জন্য।’
গান্ধী অনুভব করেছিলেন যে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে অসাধারণ কিছু ঘটতে যাচ্ছে। তিনি তার বইতে লেখেন, ’৭১-এর যুদ্ধ কোন সাধারণ যুদ্ধ নয় এবং এটা ধর্মীয় নয় রাজনৈতিক বিষয়। তিনি লেখেন, ‘সম্ভাব্য কিছু না করা পর্যন্ত বিষয়টি আমরা আলাদা রাখি যদিও কিছু করার জন্য একটি অব্যাহত দাবি ছিল এবং কিছু লোক মনে করতেন সেখানে আমাদের সৈন্য মোতায়েন করা উচিত।’
গান্ধী তার বইতে স্মরণ করেনে যে, ২৫ মার্চ কালরাত্রির মাত্র এক সপ্তাহ আগে তিনি কংগ্রেস সংসদীয় দলের নেতা এবং তৃতীয় মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন।
১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরে ইন্দিরা গান্ধী মস্কো সফরে যান। এরপর তিন সপ্তাহের সরকারি সফরে যান ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। সেখানকার জনগণকে তিনি বলেন, পাকিস্তানীদের ওপর তাদের যদি কোন প্রভাব থাকে তাহলে তাদের চেষ্টা করা উচিত এবং তাদেরকে আরো যৌক্তিকভাবে পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
যুদ্ধের শুরু থেকেই গান্ধী বাংলাদেশের স্বাধীনতার ব্যাপারে নিশ্চিত ছিলেন, ‘আমার মনে সন্দেহ ছিল না যে বাংলাদেশীরা বিজয়ী হবে। সামান্যতম সন্দেহ ছিল না।’ ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে ইন্দিরা গান্ধীর রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত ভূমিকা এদেশের মানুষ ভালভাবেই মনে রেখেছে। তবে ২০১২ সালে দেশ যখন ৪০তম স্বাধীনতা বার্ষিকী উদযাপন করে তখন শেখ হাসিনার সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে তার (ইন্দিরা গান্ধী) ভূমিকাকে স্বীকৃতি দেয়।
পাকিস্তানের কাছ থেকে দেশের স্বাধীনতা অর্জনে ‘অনন্য সাধারণ অবদান’ রাখার জন্য সরকার তাকে (ইন্দিরা গান্ধী) মরনোত্তর বাংলাদেশ স্বাধীনতা সম্মাননা পদকে ভূষিত করে। ইন্দিরা গান্ধী মূলতঃ প্রথম বিদেশী যাকে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।