Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঘুষ চাইলে ধরিয়ে দিন -শিক্ষামন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন কাজের জন্য ঘুষ চাইলে তাকে ধরিয়ে দিতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন কোন অধিদপ্তর বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন কাজে কোথাও ঘুষ দিবেন না। দালাল চক্রের কথা শুনবেন না। কেউ এ ধরনের কাজ করলে তাকে ধরিয়ে দিন। গতকাল (বুধবার) রাজধানীর শিক্ষাভবনে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)-এর শেখ রাসেল স্মৃতি সম্মেলন কেন্দ্রে অধিদপ্তরের ই-ফাইলিং ও গণশুনানী কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ঘুষ-দুর্নীতি করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি নেয়া হয়েছে। যারা ভাল কাজ করবে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে এবং দুর্নীতির সাথে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে তাদের সর্বনাশ হবে। তিনি বলেন, এখনও যারা দুর্নীতি করতে চান, তারা এ অধিদপ্তর ছেড়ে চলে যান। প্রযুক্তির প্রয়োগের মাধ্যমে কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ানোর নির্দেশ দিয়ে নাহিদ বলেন, ই-ফাইলিং ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। প্রযুক্তির ব্যবহারের ফলে কোথাও ফাঁকি দেয়া যাবে না। কাজে স্বচ্ছতা থাকবে। দেশের ৩৬ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর আওতায় আসবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিদর্শন কাজকে আরো গতিশীল করার আহবান জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, গত কয়েক বছরে আমরা ঘুষ-দুর্নীতি কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি।
১৯৮০ সালের ১ অক্টোবর যাত্রা শুরু করা পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরে ১৩০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকার কথা থাকলেও আছেন সব মিলিয়ে ৬৫ জন। এই জনবল দিয়ে ৩৬ হাজার প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন ‘অসম্ভব’ মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “আমরা ঠিক করেছি, উপযুক্ত যোগ্য শিক্ষকদের কাজে লাগাবো, সৎ ভাবে পরিদর্শন করতে হবে। ভুল হওয়া অপরাধ নয়, ইচ্ছাকৃতভাবে চুরি করা অপরাধ। পরিদর্শনে গিয়ে কেউ কেউ টাকা চেয়েছে এমনটি ঘটলে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। খাম রেডি হয়ে থাকে, অনেকে শুধু সেই খাম আনতে যায়। এটা যে হচ্ছে তা অস্বীকার করি না। পরীক্ষা নিয়ে ডিআইএর কর্মকর্তা বাছাই করা হবে জানিয়ে নাহিদ বলেন, যারা ঘুষ খান, ইজ্জত থাকতে চলে যান। যারা ভালো কাজ করবেন তাদের পুরস্কার দেব।
ডিআইএ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইন বলেন, এমন সফটওয়্যার করুন যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার দরকার না হয়। মাঝেমধ্যে যাবেন, তথ্যে ভুল পেলে ব্যবস্থা নেবেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে গিয়ে ডিআইএ কর্মকর্তাদের টাকা চাওয়ার ঘটনা তুলে ধরে সচিব বলেন, কোনো ধরনের অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে চরম অ্যাকশন নেওয়া হবে। তবে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান নিয়মমাফিক চলে না বলে তারাই ‘ঘুষ দেওয়ার জন্য বসে থাকে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটা দেখা দরকার কারা অনিয়ম করছে। শিক্ষায় অসততা হলে সারা জীবন দেশকে ভোগাবে। আইনে চললে এক পয়সাও দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এরপরেও টাকা দেওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে থাকে। পয়সা দিলেই এমপিও হয়ে যাবে- এখন কি আর সেই দিন আছে? এখন সব অটোমেশনে হয়। ডিআইএ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে সোহরাব বলেন, কোনো ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি দেখলে তারা যেন মন্ত্রণালয়ে জানান। যেসব বিষয় নিজেদের আওতার মধ্যে আছে, সেগুলোতে তারা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবেন।
ডিআইএ’র পরিচালক প্রফেসর আহাম্মেদ সাজ্জাদ রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কার্যালয়ের এটুআই প্রোগ্রামের পরিচালক (ই-সার্ভিস) ড. মো. আব্দুল মান্নান এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব আহমদ শামীম আল রাজী বক্তব্য রাখেন । ডিআইএ’র ই-ফাইল ও গণশুনানী বিষয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা করেন এর যুগ্ম পরিচালক বিপুল চন্দ্র সরকার।
পরে শিক্ষামন্ত্রী ই-ফাইল ও গণশুনানী কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন। এসময় তিনি দেশের বিভিন্ন জেলার ১১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলেন। এসব প্রতিষ্ঠানে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাজের মান সম্পর্কে জানতে চান। প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যসহ স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এসময় শিক্ষামন্ত্রীর সাথে কথা বলেন এবং তাদের মতামত জানান।###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিক্ষামন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ