Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪, ০৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

মানিকগঞ্জে সভাপতির ভয়ে শিক্ষকদের স্কুল বর্জন

| প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মানিকগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা : মানিকগঞ্জে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি (এসএমসি) সভাপতির দ্বারা লাঞ্ছিত হওয়ার ভয়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। নিরাপত্তাহীনতায় সোমবার স্কুলে না গিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার অফিসে গিয়ে হাজিরা দেন শিক্ষকরা। নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত তারা স্কুলে যাবেন না বলে জানিয়েছেন তারা। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে।
জানা গেছে, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা নতুনবস্তী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ে ৩শ’৮৯জন শিক্ষার্থী এবং ৮জন নারী শিক্ষক রয়েছে। ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সেলিম মিয়া এসএমসি’র সভাপতি হওয়ার পর থেকেই শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণ করে আসছে। বিভিন্ন সময় হুমকি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও অসাধারন আচরণ করেন তিনি। বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা সেলিম মিয়ার বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রর্দশন ও হুমকির অভিযোগ এবং নিরাপত্তা চেয়ে উপজেলা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন। এরপর কর্তৃপক্ষ সোমবার শিক্ষকদেরকে উপজেলা শিক্ষা অফিসে সংযুক্ত করেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষকরা জানান, গত ২৬ এপ্রিল ম্যানেজিং কমিটির সভায় সদস্য সচিব ও প্রধান শিক্ষক শাহানা আক্তারকে ধমক দিয়ে চেয়ার থেকে উঠিয়ে দিয়ে সেই চেয়ারে সেলিম মিয়া বসে সভা করেন। নিয়মানুযায়ী সভা শুরু না করে হাঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষককে স্কুল থেকে সাত দিনের মধ্যে বদলি হয়ে যেতে বলেন। এছাড়া সভাপতি স্কুল পিয়নকে দিয়ে তাদের হাজিরা খাতা চেক করানোর সম্মানহানীকর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা বলেন সভাপতি তাদের সাথে চরম অভদ্র আচরণ করেন।
প্রধান শিক্ষক শাহানা আক্তার বলেন, গত অর্থ বছরে রাজস্ব বিভাগ থেকে স্কুল মেরামত বাবদ এক লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া যায়। ব্যক্তিগত এবং স্কুল ফান্ডের ¯িøপ মানি থেকে তিনি স্কুল মেরামত করে বিল ভাউচার দেয়ার পর গত ২০ জুন চেক পান। সভাপতি জোর করে চেকে প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষর নিয়ে টাকা উত্তলোন করেন। কিন্তু সেই টাকা এ পর্যন্ত ফেরৎ দেননি। টাকা চাইলে সভাপতি বলেন তাকে কোন টাকা দেয়া হবেনা। প্রধান শিক্ষক আরও জানান, রাতে স্কুলের ক্লাস রুমে বসে সভাপাতি মাদক সেবন করেন বলে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এমন তথ্য দিয়েছেন বলে সভাপতি অভিযোগ তুলে সে আমার প্রতি ক্ষুদ্ধ।
সভাপতি সেলিম মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে প্রাইভেট পাড়ন এবং বিভিন্ন ভুয়া বিল-ভাউচার করে টাকা পয়সা আত্মসাত করছেন। এসবের হিসাব চাওয়ার কারণেই তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। স্কুল মেরামতের টাকা উত্তোলন করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন তার কাছে টাকা জমা রয়েছে। হিসাব করে টাকা ফেরৎ দেয়া হবে। স্কুলে বসে মাদকের আড্ডার বিষয়টিও তিনি অস্বীকার করেন।
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা প্রথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সায়েম মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন এব্যপারে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অচিরেই বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ