Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কোটা পদ্ধতির সংস্কার চাই

| প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোহাম্মদ অংকন : বর্তমানে দেশের অধিকাংশ মানুষ কোটা পদ্ধতি সংস্কারের পক্ষে। সবার মুখে একই কথা, কোটা পদ্ধতি নিয়ে নতুন করে ভাবনা করার দিন এসেছে। বর্ধিত জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করতে কোটা পদ্ধতির পরিবর্তন, পরিমার্জন এখন বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আবার কেউ কেউ কোটা পদ্ধতি একদম বিলোপ করে দেয়ার কথাও বলছে। তবে আপাতত কোটা পদ্ধতির সংস্কার আবশ্যক। কারণ হিসেবে বলব, সরকার এবং জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারক শ্রেণি যদি জাতির নেতৃত্ব থেকে যোগ্যদের দূরে রাখতে না চান তবে জাতীয় স্বার্থে তাদের কোটা পদ্ধতির সংস্কার করতে হবে। দেশের মেধাবীদের সুযোগ করে দিতে এবং আন্তর্জাতিক পরিসরে দেশের ভাবমর্যাদা রক্ষা করতে মেধাবীদের সুযোগ দেয়া আবশ্যক। কোটা পদ্ধতির কারণে মেধাবীরা আজ হতাশ। মেধাবীদের সুযোগ দানে কোটা পদ্ধতির সংস্কার করে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জন্য অনধিক ১০ শতাংশ কোটার সুযোগ রেখে সর্বমোট ২০ শতাংশ কোটার ব্যবস্থা রাখা হোক। অর্থাৎ সাধারণ প্রার্থীদের জন্য ৮০ শতাংশ বহাল রাখা হোক। বাকী ২০ শতাংশ বিভিন্ন কোটায় বণ্টন করা হোক। দেশে বিগত কয়েক বছরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় শিক্ষার্থীর পাসের হার ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্লাস প্রাপ্তির হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে অনেকেই মনে করছে, পাসের হার বৃদ্ধির সাথে মেধাবী ও মানসম্পন্ন শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে না। এর প্রমাণ পাওয়া যায়, বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বুয়েট ও মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পাওয়া অসংখ্য শিক্ষার্থীর অস্বাভাবিক হারে চান্স না পাওয়া থেকে। আবার এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই কোটা পদ্ধতির কারণে সুযোগ পেয়ে যাচ্ছে জিপিএ ৫ না পাওয়া কিংবা কম মেধাবী অনেক শিক্ষার্থী। ফলে পরীক্ষায় ভালো করেও যেসব মেধাবী শিক্ষার্থীর সুযোগ পাওয়ার কথা, তারা বঞ্চিত হচ্ছে। উন্নত বিশ্বসহ অনেক দেশেই কোটা পদ্ধতি রয়েছে। তবে তা বাংলাদেশের মতো এতো বেশি নয়। যুক্তরাষ্ট্রে কোটাধারীদের আগেই একটি নম্বর দিয়ে দেয়া হয়। তারপর প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে তা অর্জন করেত হয়। ভর্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে সরকারি চাকরি পাওয়া পর্যন্ত ধারাবাহিক যে কোটা সুবিধা রয়েছে, তা কমানো দরকার। একবার যে কোটার সুবিধা পাবে, সে আর কখনো এ সুবিধা পাবে না। অর্থাৎ বাবা কোটা সুবিধা পেয়ে থাকলে, সন্তান এ সুবিধা পাবে না। কেউ কোটা দিয়ে স্কুল বা কলেজে ভর্তি হলে, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে সে এ সুবিধা পাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটায় ভর্তি হলে, চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে এ সুবিধা ভোগ করতে পারবে না। যারা উচ্চ আয়ের মানুষ তাদের কোটার সুবিধা বাতিল করা উচিত। দেশের দ্রæত সমৃদ্ধি ও উন্নয়নে কোটা পদ্ধতির ক্ষেত্রে সংস্কার অপরিহার্য। কোটা দিয়ে যারা সহজে সুযোগ পেয়েছে বা পাচ্ছে, তারা প্রায়ই অযোগ্য ও কম মেধাসম্পন্ন। তারা যদি সত্যিকার অর্থে মেধাবী হয়ে থাকে, তবে তাদের তো কোটা পদ্ধতির আশ্রয় নেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। যথাযথ প্রতিযোগিতার মাধ্যমেই মেধার পরিচয় দেয়া বাঞ্ছনীয়। তা না করে উত্তরাধিকার সূত্রে বা অন্য কোটার ভিত্তিতে সহজে সুযোগ পাওয়া নিশ্চিতভাবেই তাদের মেধার প্রতি অবিচারের শামিল এবং অসম্মানও বটে। সরকার দেশের মেধাবীদের মেধার মান ধরে রাখতে কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ করুক সেটাই সকলের কাম্য।
লেখক :শিক্ষার্থী



 

Show all comments
  • Babul aktar ৪ মার্চ, ২০১৮, ৩:১০ পিএম says : 0
    We want no kuta system. Immediately Government will ban kutta system
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোটা

২৩ ডিসেম্বর, ২০২১
১৭ নভেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন