Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পানিবন্দী ৩ স্কুলের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী পানি নিষ্কাশনের দাবিতে মানববন্ধন

| প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) উপজেলা সংবাদদাতা : কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে পানিবন্দী ৩ স্কুলের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী পড়া লেখা নিয়ে চরম সংকটে রয়েছে। দীর্ঘ প্রায় দুই মাস ধরে স্কুল ৩টি পানিবন্দী থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়া লেখার এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিদ্যালয় কতৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষকে জানিয়েও কোন সুরাহা হয়নি বলে তারা জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার সরোজমিনে ওই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ৬ষ্ঠ শ্রেনির বর্ষা নামে এক ছাত্রী, পিঠে বইয়ের ব্যাগ আর হাতে স্যান্ডেল আর হাটুর উপরে জড়ানো পায়জামা। এভাবেই স্কুলে যাচ্ছে। সে জানায়, স্কুলের চত্বরের পুরো এলাকা পানিতে ডুবে থাকায় প্রতিদিনই তাকে এভাবে স্কুলে যেতে হয়। যেন শিক্ষা যুদ্ধে যাওয়ার অমানবিক প্রস্তুতি। একই অবস্থা অন্য শিক্ষার্থীদের। এ দৃশ্য হোসেনাবাদ আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হোসেনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শাহ আজিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। বিদ্যালয় তিনটিতে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। বছরের প্রায় নয় মাস বিদ্যালয়ের খেলার মাঠসহ আশেপাশের পুরো এলাকা কাঁদা পানি থাকলে গত দুই মাস ধরে বিদ্যালয় ৩টি পানিবন্দী রয়েছে। ফলে একদিকে এই তিন বিদ্যালয়ের লেখাপড়ার পরিবেশ যেমন নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে শিক্ষার্থী এসব পঁচা পানিতে হাটা চলা ফেরা করার করাণে নানা চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
গতকাল বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয় তিনটি পাশাপাশি প্রায় একই চত্বরে অবস্থিত। স্কুলে যাওয়ার রাস্তা থেকে শুরু করে স্কুলের ভবনের চারদিকে হাটু পানি জমে রয়েছে। দীর্ঘদিন পানি জমে থাকার কারনে সাপ, ব্যাঙসহ পোকামাকড় ও বিভিন্ন ময়লা পঁচে তা থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। এর মধ্যে দিয়েই শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া আসা করছে। এক যুগ ধরে বছরের প্রায় পুরো সময় জুড়ে এ অবস্থা চলে আসছে।
এদিকে স্কুলের পানি নিস্কাষণ করে লেখাপড়ার স্বাভাবিক পরিবেশ ফেরানোর দাবিতে গতকাল বেলা ১১টায় ওই তিনটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে মানবববন্ধন করে। স্কুলের সামনে কুষ্টিয়া-প্রাগপুর সড়কে এ মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ছাড়াও অভিভবক ও স্থানীয় সচেতন মহল অংশ নেন। দুপুর বেলা ১২ টা এ মানববন্ধন পর্যন্ত চলে।
হোসেনাবাদ আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সজিব জানায়, পানির মধ্যে সাপসহ অন্যান্য পোকামাকড় থাকায় তারা স্কুলে আসতে ভয় পায়। এতে পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা জানান, স্কুলের খেলার মাঠ ব্যবহার করা যায় না। শ্রেণিকক্ষের বাইরে তারা বের হতে পারে না। তারা এ দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ চায়।
হোসেনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোতাছিম বিল্লাহ জানান, স্কুলগুলোর এ সমস্যা প্রায় এক যুগ হতে চললও এ দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ হয়নি। দ্রæত এ সমস্যার সমাধার করে এক হাজার শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার স্বাভাবিক অবস্থা ফেরাতে সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
হোসেনাবাদ আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক রেজাউল করিম জানান, একটি ড্রেন তৈরী করে পানি নিস্কাষণের ব্যবস্থা করে এ সমস্যার সমাধান করা যায়। কিন্তু ড্রেন তৈরী করতে যে পরিমান অর্থ লাগবে তা স্কুল কর্তৃপক্ষের নাই।
এবিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌফিকুর রহমান বলেন, এটি এক দিনে তৈরী হয়নি, দীর্ঘদিনের সমস্যা। এ সমস্যা সমাধান করতে ইতোমধ্যে একটি ড্রেন তৈরীর করে পানি নিস্কাষনের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে কাজ শুরু করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ