Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খসড়া বিধিমালা ফেরত

বিচারকদের শৃঙ্খলা বিধি নিয়ে আপিল বিভাগের অসন্তোষ

| প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এই যদি করবেন তাহলে হাইকোর্ট উঠিয়ে দেন -প্রধান বিচারপতি
পার্লামেন্ট বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করলে বাকি কি থাকে -ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন : গেজেট প্রকাশে মন্ত্রণালয়ের এতো সময় নেয়া দুঃখজনক -ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ : নিম্ন আদালতের নিয়ন্ত্রণ সরকার হাতছাড়া করতে চায় না -ড. শাহদীন মালিক : বিচার বিভাগ স্বাধীন হোক প্রশাসন চায় না -খন্দকার মাহবুব হোসেন
স্টাফ রিপোর্টার : ‘বিচার বিভাগের সঙ্গে নির্বাহী বিভাগের কোনও যুদ্ধ চলছে না’ গতকাল আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের এ বক্তব্যে প্রকাশ পায় বিচার বিভাগ ও আইন মন্ত্রণালয়ের বর্তমান অবস্থা। কোন পরিস্থিতির মধ্যে আইনমন্ত্রীকে ‘যুদ্ধ’ শব্দটি ব্যবহার করতে হয় তা সহজেই অনুমেয়। মাসদার হোসেন মামলার রায় বাস্তবায়নে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধিমালা বিষয়ে দীর্ঘ ২২ দফা সময় পেছানো পর ২৭ জুলাই আইনমন্ত্রী খসড়া জমা দেন। সেই খসগায় সুপ্রিম কোর্টের সুপারিশ মানা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা। গতকাল ৬ সদস্যের আপিল বিভাগে শুনানি শেষে আইন মন্ত্রণালয়ের সুপারিশ ফিরিয়ে দেয়ার পর বিরক্তি প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেছেন, ‘বিচার বিভাগ থেকে যে বলা হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ের এই খসড়া সুপারিশ তার উল্টো। এই যদি করবেন তাহলে হাইকোর্ট রাখবেন কেন, উঠিয়ে দেন।’ বিচার বিভাগ আর আইন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে যখন বিপরীতমুখী অবস্থা তখন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন, বিচারিক আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নে আইন মন্ত্রণালয় তাঁর (অ্যাটর্নি জেনারেল) কোনো পরামর্শ নেয়নি।
মাসদার হোসেন মামলার রায়ের প্রায় ১৬ বছর পর নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধিমালা নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের দেয়া খসড়া এবং বিচার বিভাগের অবস্থান নিয়ে দেশের সংবিধান বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করতে আগ্রহী নন। তবে যারা মন্তব্য করেছেন তাদের কেউ বিষয়টিকে বিচার বিভাগ ও আইন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি, কেউ সরকার নিম্ন আদালতকে তাদের নিয়ন্ত্রণ এবং হাত ছাড়া করতে চাচ্ছেন না বলে মন্তব্য করেছেন। সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সংবিধান বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, যেখানে বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পালামেন্টে বিল পাস করে সেখানে বাকি থাকে কি? সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ বলেন, টানাপোড়েন নয়; গেজেট প্রকাশ নিয়ে নির্বাহী ও বিচার বিভাগের মধ্যে এক ধরনের ভুল বোঝাবুঝি। ড. শাহদীন মালিক বলেন, এটা স্পষ্ট যে সরকার নিম্ন আদালতকে তাদের নিয়ন্ত্রণ এবং হাত ছাড়া করতে চাচ্ছেন না। এজন্য মাসের পর মান নানা তালবাহনা চলছে। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেযারম্যান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, রাজনৈতি অশুভ হস্তক্ষেপের জন্য প্রশাসন বা সরকার কখনো বিচার বিভাগের গেজেট দিতে চায় না।
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ মাসদার হোসেন মামলায় ১২ দফা নির্দেশনা দিয়ে রায় দেয়। ওই রায়ের আলোকে নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা দেয়া হয়। আপিল বিভাগের নির্দেশনার পর ২০১৬ সালের ৭ মে আইন মন্ত্রণালয় বিধিমালার একটি খসড়া তৈরি করে সুপ্রিম কোর্টে পাঠায়। ওই বিধিমালা সংশোধন করে তার খসড়া মন্ত্রণালয়ে পাঠায় আপিল বিভাগ। এরপর ওই বিধিমালা গেজেট আকারে জারি করে আদালতে দাখিল করতে আপিল বিভাগ ওই বছরের ২৮ আগস্ট আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই খসড়া বিধিমালা গেজেট আকারে জারির জন্য ২২ বার সময় নেয় মন্ত্রণালয়। জানা যায়, আইন মন্ত্রণালয়ের প্রণীত বিধিমালার অনুসন্ধান ও বিভাগীয় মামলা রুজু, সাময়িক বরখাস্তকরণ ও তার অবসান, দন্ডসমূহ, তদন্ত ও দন্ড আরোপের পদ্ধতির অধ্যায়সূমহে সংশোধনী এনে সুপ্রিম কোর্ট বেশ কিছু বিধান যুক্ত করে দেয়। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দেয়। ওই মতপার্থক্য নিরসনে চলতি মাসে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে কয়েক দফায় বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী। গত ২০ জুলাই প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বৈঠক শেষে আইনমন্ত্রী জানান বিধিমালার যেসব ব্যাপার নিয়ে দ্বিমত ছিল সেগুলো অনেকাংশেই দূর হয়েছে। সেই বিধিমালার গেজেট প্রধান বিচারপতির কাছে আইনমন্ত্রী হস্তান্তর করেন ২৭ জুলাই। গতকাল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মন্ত্রণালয়ের দেয়া খসড়া বিধিমালা ফেরত দেয়ার আদেশ দেয়। একই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসার আহ্বান জানায়। এ আলোচনা রোববার বেলা দুইটা থেকে আগামী বৃহস্পতিবার রাত ১২টার মধ্যে যেকোনো সময় হতে পারে জানানো হয়। এতে আপিল বিভাগের বিচারপতিরা, আইনমন্ত্রী, অ্যাটর্নি জেনারেলসহ আইন বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে ওই বৈঠক করার কথা বলেছেন আপিল বিভাগ।
আইন মন্ত্রণালয়ের বিধিমালার ফেরত দেয়ার পর প্রধান বিচারপতি স্পষ্টতই তার অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘আইনমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হলো। উনি খসড়া দিয়ে গেলেন। আমি তো খুশি হয়ে গেলাম। যদিও খুলে দেখিনি। কিন্তু এটা কী। এখানে বলা হলো ‘উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ’। এটার মানে কী? সব আইনে ব্যাখ্যা থাকে। কিন্তু এখানে কোনো ব্যাখ্যা নেই।’ অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, খসড়ায় বলা হয়েছে সরকার নির্ধারিত তারিখে বিধিমালার গেজেট কার্যকর হবে। অথচ মাসদার হোসেন মামলার রায়ে আদালত বলেছে, সুপ্রিম কোর্টে পরামর্শ মোতাবেক গেজেট হবে। কিন্তু আমরা কী দেখলাম? আমরা যেটা বলেছি তার উল্টোটা খসড়া করে পাঠিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। মাসদার হোসেন মামলার রায়ের ১৬ বছরে এটা হয়নি। আর সরকারের নির্ধারিত তারিখে গেজেট না হলে এটি ১৬শ’ বছরেও হবে না। এখানে বলা হলো, কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত হবে। তাহলে হাইকোর্টের তো কিছু থাকলো না; সব ক্ষমতা মন্ত্রণালয়ের। ১৮৬১ সালে কলকাতা হাইকোর্ট হয়েছে। তখন থেকে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকরা নিম্ন আদালত পরিদর্শন করেন। এ ব্যবস্থা চলে আসছে। মন্ত্রণালয় যা করেছে, তাতে এখন যদি কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে; সে বিষয়ে প্রধান বিচারপতির কোনো ক্ষমতা নেই। বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধিমালা নিয়ে আর রশি টানাটানি নয়। আইনমন্ত্রীসহ সরকারের যেকোনো এক্সপার্ট আসবেন, বৈঠকে বসব। অ্যাটর্নি জেনারেল আপনিও থাকবেন। এরপর আগামী ৬ আগস্ট পরবর্তী শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন।
মন্ত্রণালয়ের খসড়া সুপারিশ ফিরিয়ে দেয়ার ঘটনাকে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ‘মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিচার বিভাগের য্দ্ধু’ মনে করছেন না। বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সমুন্নত রেখে এ বিধিমালা করা হবে। আমি সেই আলোচনার মধ্যেই আছি। আমি যখন খসড়া জমা দিয়েছিলাম, তখনই তো বলেছি এরপরও কিছু থেকে থাকলে আলোচনা করা যাবে। এত বড় করে এজলাসে বসে বলার কিছু নেই। কারো সঙ্গে কোনও দূরত্ব সৃষ্টির সুযোগ নেই। ভবিষ্যতে যাতে আইনের ট্যাম্পারিং করতে না পারে, সেই বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেছেন, বিচারিক আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়নে আইন মন্ত্রণালয় অ্যাটর্নি জেনারেলের পরামর্শ নেয়নি। নিম্ন আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণ বিধিমালার বিষয়ে কয়েকদিন আগে আইনমন্ত্রী প্রধান বিচারপতির কাছে একটা খসড়া দিয়েছেন। আজকে প্রধান বিচারপতি ওই খসড়ার কয়েকটি ধারা সম্পর্কে ওনাদের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। এ ব্যাপারে আমাকে আদালত জানিয়েছেন, আপিল বিভাগের বিচারপতিরা আইনমন্ত্রী, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা বা যাদেরকে সরকার পাঠাতে চান তাদের সঙ্গে বসতে চান এ ব্যাপারটা সুরাহা করতে। বৈঠক করার ব্যাপারে আমি আইন মন্ত্রণালয়কে জানাবো।
এ প্রসঙ্গে সাবেক তত্ত¡াবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, যেখানে বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পালামেন্টে বিল পাস করে সেখানে বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণের কিছু কি আর বাকি থাকে? বঙ্গবন্ধুও চেয়েছিলেন বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করতে। বর্তমান সরকারও তাই করছেন। তবে তারা সফল হবেন না। সেই সময় এখন আর নেই। আইন মন্ত্রণালয় ও বিচার বিভাগের মধ্যে টানাপোড়েন বিষয়ে সরাসরি কোন মন্তব্য করেননি তিনি। সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, গেজেট প্রকাশ নিয়ে নির্বাহী ও বিচার বিভাগের মধ্যে এক ধরনের ভুল বোঝাবুঝি। এটা কে টানাপোড়েন বলা যাবে না। মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পর নিম্ন আদালতের বিচারকদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্নভাবে সুপ্রিম কাউন্সিলের অধীনে চলে যায়। তারা এসব নিয়োগ প্রক্রিয়া দেখেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত নিম্ন আদালতের বিচারকদের আচরণবিধি ও শৃঙ্খলা বিধি প্রণয়ন করা হয়নি। যেটি অতীব জরুরী। সুপ্রিম কোর্ট এই আচরণ বিধি প্রণয়নের চেষ্টা চালায়। এটা নিয়ে এতটা মতানৈক্য হওয়া উচিত নয়। উভয়পক্ষকে সমঝোতা করতে হবে। দ্রæত নিম্ন আদালতের গেজেট প্রণয়ন করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। গেজেট তো মূলত; আইন মন্ত্রণালয় পাঠাবে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সেখান থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন হওয়ার পর সেটি প্রেসিডেন্ট সই করবেন। গেজেট প্রকাশ নিয়ে সরকার এতবার সময় নেয়াটা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটা ঠিক হয়নি। গেজেটের খসড়া নিয়ে আইন মন্ত্রণালয় অ্যাটর্নি জেনারেল এর কোন ধরনের পরামর্শ নেয়া হয়নি। এটা কি সমন্বয়হীনতার অভাব কিনা এর জবাবে তিনি বলেন, উচিত ছিল পরামর্শ করে খসড়া চূড়ান্ত করা। আমার মনে হচ্ছে এজন্য হয়তো আগামী বুধবার আপিল বিভাগের বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, সিনিয়র আইনজীবীরা বসবেন।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সাবেক ভাইস চেযারম্যান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, প্রশাসন কখনো চাই না বিচার বিভাগ স্বাধীন হোক। স্বাধীন থাকলে মানুষ ন্যায় বিচার পাবে এবং বিচারগণ রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে বিচার কার্য পরিচালনা করতে পারতেন। রাজনৈতি অশুভ হস্তক্ষেপের জন্য প্রশাসন বা সরকার কখনো বিচার বিভাগের গেজেট দিতে চায় না। বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায়। আদালতের বিচারকগণকে রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত করার জন্য প্রশাসনের কর্তৃত্ব হতে রক্ষা করা দরকার। বর্তমান বিচার বিভাগ কাগজে কলমে স্বাধীন হলেও নিম্ন আদালতের বিচারকদের বদলি, পদোন্নতি আইন মন্ত্রণালয় সুপারিশ করে সুপ্রিম কোর্ট পাঠায়। সুপ্রিম কোর্ট নিজেস্ব কোন জনবল এবং সরকার কর্তৃক কোন নীতিমালা না থাকায় কারণে সুপ্রিম কোর্ট অনেক ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে অসহায় হয়ে পড়ে। সেই জন্যই সুপ্রিম কোর্টে নিম্ন আদালতের বিচারকদের আচরণবিধি প্রয়োজন মনে করছেন। যাতে করে সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে দ্রæত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সরকারের গেজেট প্রকাশের জন্য নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত দাবি জানিয়ে আসছে। সরকারের উচিত সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে গেজেট প্রকাশ করা। কিন্তু তা না করে বার বার সময়ক্ষেপণ করে আসছে এটা স্বাধীন বিচার বিভাগের জন্য দুঃখজনক এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পরিপন্থী। আইন মন্ত্রণালয় পাঠানো খসড়া বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট মনে করেন মাসদার হোসেন মামলার রায়ের উল্টো খসড়া করা হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাহী ও বিচার বিভাগের নানা বক্তব্য এক ধরনের রেষারেষি কিনা এ বিষয়ে জানেত চাইলে তিনি বলেন, দুই বিভাগের এক ধরনের মত বিরোধ। এটা সমন্বয়হীনতার অভাব বলেও মনে। এ বিষয়ে জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট বিশিষ্ট্য আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক ইনকিলাবকে বলেন, এটা স্পষ্ট যে, সরকার নিম্ন আদালতকে তাদের নিয়ন্ত্রণ এবং হাত ছাড়া করতে চাচ্ছেন না। এজন্য মাসের পর মান নানা তালবাহনা চলছে। সংবাদ মাধ্যমে জানলাম অ্যাটর্নি জেনারেলের বলেছেন, আইন মন্ত্রণালয়ের সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো ওই খসড়ার ব্যাপারে তাকে কিছু জানানো হয়নি। আইনজীবী যদি তার মক্কেলের পক্ষে কোন বক্তব্য না বুঝে না জেনে তাহলে আদালতে কিভাবে উপস্থাপনা করবে তা আমার বোধগম্য নয়। পরিষ্কার একটি বিষয় বিধি চূড়ান্ত করতে গিয়ে নানাভাবে তালবাহনা করছে। আরো বহু দিন সময়ক্ষেপণ করবে। অথচ তিন পৃষ্ঠার একটি গেজেট করতে তিনদিনের বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না। প্রকৃতপক্ষে সরকার এটা করতে চায় না। এটা কি বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে এক ধরনের টানাপোড়েন কিনা জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করেনি।



 

Show all comments
  • তানবীর ৩১ জুলাই, ২০১৭, ১১:২৩ এএম says : 0
    পার্লামেন্ট কর্তৃক বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করা ঠিক হবে না
    Total Reply(0) Reply
  • কাউয়ুম ৩১ জুলাই, ২০১৭, ১২:৩৯ পিএম says : 0
    বিষয়টি খুবই দৃষ্টিকটু ........................ কারণ এই দু’টি রাষ্ট্রের মুল তিনটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম।
    Total Reply(0) Reply
  • মানসুর ৩১ জুলাই, ২০১৭, ১২:৪০ পিএম says : 1
    উভয় পক্ষে মধ্যকার আলোচনার মাধ্যমে একটি বিধিমালা হতে পারে।
    Total Reply(0) Reply
  • সজিব ৩১ জুলাই, ২০১৭, ১২:৪২ পিএম says : 0
    গেজেট প্রকাশে মন্ত্রণালয়ের এতো সময় নেয়া দুঃখজনক। আরো দায়িত্বশীল হওয়া জরুরী
    Total Reply(0) Reply
  • নাসির ৩১ জুলাই, ২০১৭, ১২:৪৩ পিএম says : 0
    দেশে আইনের শাসনের জন্য বিচার বিভাগ স্বাধীন হওয়া দরকার
    Total Reply(0) Reply
  • Md.Arifur Rahaman ৩১ জুলাই, ২০১৭, ৬:৫৫ পিএম says : 0
    পার্লামেন্ট কর্তৃক বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করা ঠিক হবে না |দেশে আইনের শাসনের জন্য বিচার বিভাগ স্বাধীন হওয়া দরকার |
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধান বিচারপতি

২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ