Inqilab Logo

শুক্রবার, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ২৮ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁঁকিতে দেশের অর্ধেক মানুষ

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক জাতীয় কনভেনশন

| প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক, অর্থাৎ আট কোটি মানুষই ভ‚মিকম্পের উচ্চমাত্রায় ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে দেশের দুই প্রধান নগরী ঢাকা ও চট্টগ্রামে ৮০ মিলিয়ন মানুষের জীবন ঝুঁঁকির মধ্যে রয়েছে। আর বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর এলাকাসহ সারাদেশে দুই কোটি ৮০ লাখ মানুষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক জাতীয় কনভেনশনের মূল প্রবন্ধে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এই প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। জাতীয় এই কনভেনশনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। মূল প্রবন্ধে জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ভ‚মিকম্প থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে বাংলাদেশ জাতীয় বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ করতে হবে। এটি বাস্তবায়নে বাধ্য করতে হবে। তা না হলে ভ‚মিকম্প ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না। শুধু বিল্ডিং কোড মেনে ভবন করলেই হবে না, যেই মাটিতে ভবন নির্মাণ করা হবে; সেই মাটিও সহনীয় হতে হবে। কারণ অনেকেই জলাশয় ভরাট করে ভবন নির্মাণ করেন। এটা ঠিক নয়। কারণ ওই জলাশয়ের উপর ভবন নির্মাণ করলে ভ‚মিকম্প হলে এটি ঝুঁঁকির মধ্যে থেকে যায়।
প্রস্তুতি এবং বিল্ডি কোড মেনে ভবন নির্মাণ করলে অনেক ঝুঁঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। তিনি ২০১০ সালের হাইতি এবং চিলির ভ‚মিকম্পের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে হাইতি সাত দশমিক শূন্য মাত্রার ভ‚মিকম্প হয়। তাতে তিন লাখ মানুষ প্রাণ হারায়। একই বছরের ফেব্রæয়ারিতে চিলিতে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভ‚মিকম্প হয়। কিন্তু সেখানে মাত্র ৫৬২ জন মানুষ প্রাণ হারায়। পরিকল্পিত ভবন নির্মাণের কারণেই চিলিতে মানুষ মুত্যু অনেক কম হয়। কারণ ১৯৬০ সালে চিলিতে ৮ দশমিক ৬ মাত্রার ভ‚মিকম্প হয়েছিল। সেই থেকে তারা মাস্টার প্ল্যান করে বিল্ডিং কোড মেনে ভবন নির্মাণ করেছে। এ কারণে হাইতির চেয়ে অনেকগুণ কম মানুষ মারা গেছে। এভাবে আমরাও যদি প্রস্তুতি না নেই, তাহলে ঝুঁকি থেকে যাবে।
জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষায় আমাদের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। ১৯৭০ সালের ভোলা বন্যায় আমাদের পাঁচ লাখ মানুষ মারা গেছে। ১৯৮৫ সালের উরির চর বন্যায় ১১ হাজার মানুষ মারা গেছে। ১৯৯১ সালের বন্যায় এক লাখ ৩৮ হাজার মানুষ মারা গেছে। এরপর আমরা আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণে মাস্টার প্ল্যান করি। এর ফলে ২০০৭ সালে সিডরে আমাদের মানুষ মৃত্যুর হার অনেক কমে আসে। যদি আমাদের লক্ষ্য শূন্য নামিয়ে আনা। এরপর ২০০৯ সালের আয়লায় ৪০০ মানুষ মারা গেছে। এভাবে আমাদের অগ্রগতি আছে। তবে আমাদের অনেক দূর যেতে হবে। ১৯৯২ সালের মাস্টার প্ল্যানকে হালনাগাদ করতে হবে। এটাকে যুগোপযুগী করে তৈরি করতে হবে। সিপিপি ভলানটিয়ারকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। তিনি বলেন, খুব অল্প সময়ের মধ্যে আমাদের দুর্বল যে ভবন রয়েছে সেগুলোতে চিহ্নিত করতে হবে। এগুলো চিহ্নিত করে ফিট করে তৈরি কর হবে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রথম জাতীয় কনভেনশনের উদ্বোধন করেন মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, দুযোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, স্থায়ী কমিটির সদস্য শফিকুল ইসলাম ও আব্দুর রহমান বদি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভূমিকম্প

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ