Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাহিদার অর্ধেকেরও বেশি বিদ্যুৎ ঘাটতি দেশের পশ্চিম জোনের ২১ জেলায়

| প্রকাশের সময় : ৩০ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : শ্রাবনের ধারায় তাপমাত্রার পারদ ৩০ডিগ্রী সেলসিয়াসের কাছে পিঠে ওঠা-নামার মধ্যেই চাহিদার অর্ধেকেরও বেশী বিদ্যুৎ ঘাটতিতে দেশের পশ্চিম জোনের ২১জেলার সুস্থ্য জনজীবন বিপর্যস্ত। বরিশাল গ্যাসটাবাইন, ভোলার ২২৫মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল এবং গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুরের গ্যাসটার্বাইন ছাড়াও পশ্চিম জোনের সরকারিÑবেসরকারি পাওয়ার স্টেশনগুলোর উৎপাদন ঘাটতির পাশাপাশি পূর্বজোন থেকে সরবারহ হৃাসের ফলে পরিস্থিতর উন্নতি ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুতের অভাবে জরুরী পানি সরবারহ সহ স্বাস্থ্য পরিসেবা পর্যন্ত মারাত্মক বিপর্যয়ের কবলে। শহরের চেয়ে গ্রামে পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহকদের দুর্দশা আরো অনেক বেশী।
বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ১৬টি এবং ফরিদপুর অঞ্চলের ৫টি জেলা সহ পশ্চিম জোনের ২১জেলায় সান্ধ্যকালীন পিক আওয়ারে প্রায় সাড়ে ১২শ’ মেগাওয়াট ও ডে-পীক আওয়ারে সাড়ে ৮শ’ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরিতে গত দু’দিন ধরে সরবারহ যথাক্রমে সাড়ে ৬শ’ ও ৫শ’ মেগাওয়াটের নিচে। গত বুধবার দুপুরে গোটা পশ্চিম জোনে জাতীয় গ্রীড ব্যবস্থা ভয়াবহ বিপর্যয়ের কবলে পরার সাথে ভোলার ২২৫ কম্বাইন্ড সাইকেল, বরিশালের ১১০ মেগাওয়াটের সামিট পাওয়ার সহ এ অঞ্চলের ছোট ও বড়মাপের সবগুলো উৎপাদন ইউনিট একযোগে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে পশ্চিম জোনের ২১টি জেলা একই সাথে বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পরে।
পরিস্থিতি সামাল দিয়ে সীমিত কিছু এলাকায় সরবারহ পুনরুদ্ধার করতে প্রায় দু’ঘন্টা সময় লেগে যায়। পরবর্তীতে বরিশাল গ্যাস টার্বাইন ও সামিট পাওয়ার স্টেশন চালু করে ক্রমান্বয়ে ছোট ও মাঝারি মাপের পাওয়ার স্টেশনগুলো উৎপাদনে ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু ভোলা কম্বাইন্ড পাওয়ায়র স্টেশনটি গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্ণ উৎপাদনে আনা সম্ভব হয়নি। ৭৫মেগাওয়াট ক্ষমতার ৩টি ইউনিটের মধ্যে মাত্র ১টি চালু করা সম্ভব হলেও সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল মাত্র ৪৫মেগাওয়াট। স্বাভাবিক অবস্থায় পাওয়ার স্টেশনটি থেকে যে ২শ’ মেগাওয়াটের মত বিদ্যুৎ পাওয়া যেত, সেখানে গতকাল দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৪৫মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রীডে সরবারহ করা হচ্ছিল।
এদিকে জাতীয় গ্রীড থেকে সরবারহ ঘাটতিরে কারণে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলায় সান্ধ্যকালীন পিক আওয়ারে দেড় শতাধিক মেগাওয়াট চাহিদার বিপরিতে সরবারহ মাত্র ৭৫-৮০মেগাওয়াটের মধ্যে হ্রাস করা হয়েছে। এমনকি গত দু’দিন সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়া সত্বেও বরিশাল অঞ্চলে সরবারহ ছিল চাহিদার প্রায় অর্ধেক।
ভড়া বর্ষার শ্রাবনে বিদ্যুতের এ নজিরবিহীন ঘাটতি শিল্প ও ব্যবসা বানিজ্যেও চরম বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। স্থানীয় শিল্প ও বনিক মহল এ বিদ্যুৎ ঘাটতিতে ক্ষুদ্ধ। তাদের মতে, ‘এবার শীত মওশুমেও বিদ্যুৎ ঘাটতি থেকে রেহাই মেলেনি। বছরের কোন সময় যে বিদ্যৎ সংকট থেকে রেহাই মিলবে’ তা এখন সবারই অজানা। তবে পিডিবি এবং তাদের বিতরন কোম্পানী ওজোপাডিকো’র দায়িত্বশীল মহল যথারিতি ‘সঙ্কট উত্তরণের চেষ্টা চলছে’ বলে জানিয়ে কবে নাগ্দ বিদুৎ সংকট থেকে রেহাই মিলবে, তা বলতে পারেননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ