বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
![img_img-1719768630](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678506381_AD-1.jpg)
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সাদিক মামুন,কুমিল্লা থেকে : অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের অনুপ্রবেশ ও ব্যবহার বাড়ছে কুমিল্লায়। চিহ্নিত ক্যাডার বা পেশাদার খুনি, সন্ত্রাসীই নয়- দেশি বিদেশি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার এখন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের হাতে এসেও ঠেকেছে। কুমিল্লায় খুন-খারাবি থেকে শুরু করে শিক্ষাঙ্গন বা নিজ এলাকায় প্রভাব বিস্তার এবং ছিনতাই, ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ব্যবহার হচ্ছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র। কুমিল্লার বেশ কটি সীমান্ত রুট ছাড়াও মিয়ানমার হয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম থেকে অবাধে এখানে আসছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র। গত ছয় মাসে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে আইন-শৃংখলা বাহিনী দেশি বিদেশি পিস্তল, রিভলবার, এলজিসহ অন্যান্য ধরণের ৪২টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করেছে।
কুমিল্লায় অস্ত্রবাজ ও অস্ত্র ব্যবসায়ির সংখ্যাও নেহাত কম নয়। অস্ত্র বেচাবিক্রি ছাড়াও একটি চক্র ছিনতাই, সংঘর্ষসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে আগ্নেয়াস্ত্র ভাড়া দিয়ে থাকে। কুমিল্লা নগরী ও বাইরের বিভিন্ন এলাকায় এখন তরুণ, যুবক ও রাজনৈতিক কর্মীদের হাতে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র শোভা পেয়ে থাকে। ছোট-বড় কোন ঘটনা ঘটলেই ওদের হাতে দেখা যায় দেশি বিদেশি পিস্তল, রিভলবার, এলজি, পাইপগানের মতো অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র। সময়ের ব্যবধানে এধরণের অস্ত্র ব্যবহার এখন ওদের জন্য নিছক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও কুমিল্লা নগরীর কয়েকটি কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রভাব বিস্তারের ঘটনায় অস্ত্র ব্যবহার করছে।
এদিকে ভারত থেকে কুমিল্লার অন্তত ৩০টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের অনুপ্রবেশ ঘটছে। ভারতীয় অস্ত্রের পাশাপাশি চীন ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে মিয়ানমার হয়ে আসা অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র বিক্রির গোপন বাণিজ্য চলে কুমিল্লায়। আবার স্থানীয়ভাবে দেশি প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে পিস্তল, লোকালগান বা এলজি ও পাইপগান। দামে কম হওয়ায় দেশিয় আগ্নেয়াস্ত্রের চাহিদাও রয়েছে অস্ত্রবাজদের কাছে। ফলে দিন দিন অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে কুমিল্লায়। ক্ষুদ্রাকৃতি বা বহনযোগ্য এসব অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র এখন সন্ত্রাসী, ডাকাত, ছিনতাইকারি থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের হাতেও শোভা পাচ্ছে। কুমিল্লায় থানা পুলিশ, র্যাব, ডিবি গত জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত দেশি-বিদেশি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র গুলি, ম্যাগজিন, অর্ধশত কার্তুজসহ বিশের অধিক অস্ত্র ব্যবসায়ি, অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসী, ছিনতাইকারি, ডাকাত আটক করেছে। উদ্ধারকৃত অস্ত্রের বেশিরভাগই বিদেশি। গত ছয় মাসে কুমিল্লার আইন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীর মধ্যে থানা পুলিশ, র্যাব ও ডিবি পুলিশ বিভিন্ন উপজেলা ও নগরীর কয়েকটি এলাকা থেকে দেশি পিস্তল ৪টি, বিদেশি পিস্তল ৯টি, রিভলবার ২টি, কাটা রাইফেল ২টি, দেশি বন্দুক ৫টি, পাইপগান ৮টি, শটগান ১টি, লোকালগান বা এলজি ১১টিসহ মোট ৪২টি এবং এসব অস্ত্রের সাথে ৪৩ রাউন্ড গুলি, ৬টি ম্যাগজিন এবং ৫০টি কার্তুজ উদ্ধার করে।
কুমিল্লায় অসংখ্য অস্ত্রবাজ যেমন রয়েছে তেমনি অস্ত্র চোরাচালান ব্যবসায় ২০টির মতো সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গত ছয় মাসে বিশের অধিক অবৈধ অস্ত্র বহনকারি, বিভিন্ন ঘটনা ও সংঘর্ষে জড়িত অস্ত্রবাজ ও ব্যবসায়ি আটক হয়েছে। কিন্তু ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে অস্ত্র চোরাচালান বা বেচাবিক্রির মূল হোতারা। সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সভাপতি ও মানবাধিকার সংগঠক আরী আকবর মাসুম বলেন, কুমিল্লা মূলত ভারত সীমান্ত ঘেঁষা একটি জেলা। এখানকার সীমান্তের চিহ্নিত অস্ত্র চালানের প্রবেশপথগুলো অরক্ষিত থাকার কারণেই ভারত থেকে কুমিল্লার অভ্যন্তরে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র আসছে। রাজনৈতিক, অরাজনৈতিক বিভিন্ন ঘটনায় এখন অস্ত্র প্রদর্শন বা অস্ত্র হাতে নিয়ে মহড়া দেয়াটা মামুলি ব্যাপারে দাঁড়িয়েছে। অস্ত্র চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত এখানকার মূল হোতাদের চিহ্নিত করে তাদের আইনের আওতায় আনতে না পারলে এসব অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রই জননিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।