পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার
পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় ইউনূস সেন্টারের সোশ্যাল বিজনেস ডের আন্তর্জাতিক সম্মেলন বাতিল করা হয়েছে। ৩৬টি দেশের দুই হাজারেরও বেশি প্রতিনিধিকে নিয়ে এই সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল ২৮ ও ২৯ জুলাই। কিন্তু পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক অনুমতি না দেওয়ার বিষয়টি জানানোর দুই ঘণ্টার মাথায় গতকাল (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় ইউনূস সেন্টারের এক বিবৃতিতে সম্মেলন বাতিলের কথা জানানো হয়। শুক্রবার সকালে সাভারের জিরাবোতে নবনির্মিত সামাজিক কনভেনশন সেন্টারে দুই দিনের এই বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করার কথা ছিল নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসের। জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এবং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের (এসডিজি) সমন্বয়ক টমাস গাসের এ সম্মেলনে আসার কথা ছিল মূল বক্তা হিসেবে। ইউনূস সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, ৩৬টি দেশের দুই হাজারের বেশি প্রতিনিধির এ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। আমন্ত্রিত পাঁচশ বিদেশি অতিথির মধ্যে প্রায় দুইশ অতিথি এরইমধ্যে ঢাকায় উপস্থিতও হয়েছেন। তাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতিতে বলা হয়, “অনিবার্য কারণে সামাজিক ব্যবসা দিবস উপলক্ষে জুলাই ২৮-২৯, ২০১৭ তারিখের সপ্তম আন্তর্জাতিক সম্মেলন আমরা বাতিল ঘোষণা করছি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামাজিক ব্যবসা উদ্যোক্তাদের মধ্যে আলোচনা, বিতর্ক, ধারণা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের লক্ষ্য নিয়ে ২০১০ সাল থেকে প্রতিবছর এ সম্মেলনের আয়োজন করে আসছে ইউনূস সেন্টার। সাধারণত এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয় ২৮ জুন; ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক ব্যবসার ধারণা নিয়ে কাজ করা ইউনূসের জন্মদিনে। তবে রোজার কারণে ২০১৫ সালের মত এবারও সম্মেলনের তারিখে হেরফের হয়েছে।
সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং যারা নিবন্ধন করেছিলেন, তাদের ‘সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি বাতিল করার’ অনুরোধ জানানো হয় ইউনূস সেন্টারের বিবৃতিতে। ইউনূস সেন্টার সম্মেলন বাতিলের কোনো কারণ না দেখালেও পুলিশ মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক বৃহস্পতিবার বিকালে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সম্মেলনের অনুমতি না দেওয়ার বিষয়টি জানান। তিনি বলেন, ২৮ জুলাই সম্মেলন শুরুর বিষয়টি তাদের জানানো হয়েছে মাত্র পাঁচ দিন আগে গত ২৩ জুলাই। এত অল্প সময়ের আবেদনে কাউকে এত বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়।
ইউনূস সেন্টারের একজন মুখপাত্র জানান, সম্মেলনের বিষয়টি জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ, বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনসহ বিভিন্ন দপ্তরে গত ২০ জুলাই চিঠি পাঠন তারা। ওই চিঠি ২০ থেকে ২৪ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পৌঁছায়। সাভারের যে এলাকায় সম্মেলন হওয়ার কথা, সেখানে কয়েকদিন আগেও ‘সন্ত্রাসী’ ধরা পড়েছে জানিয়ে আইজিপি বলেন, যেহেতু সেখানে অনেক দেশের প্রতিনিধিদের আসার কথা, সেহেতু সব দিক মাথায় রেখেই পুলিশকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
তিনি বলেন, ড. ইউনূস সাহেবের অফিস থেকে, ইউনূস সেন্টার থেকে সম্ভবত ২৩ জুলাই আমরা জানতে পেরেছি, ‘সপ্তম আন্তর্জাতিক ব্যবসা দিবস ২০১৭’ নামে একটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। উনারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, এখানে ৩৬টি দেশ এবং সংস্থা থাকবে। তার মধ্যে একজন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব, অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, আজারবাইজানের রাজা অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে। হঠাৎ করে তারা এমন একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করবে, সে কথা জানানো হয়েছে ঢাকার এসপিকে। এই ধরনের আন্তর্জাতিক ইভেন্টের নিরাপত্তা দেওয়ার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে, যার জন্য প্রস্তুতির দরকার। এ ধরনের সম্মেলন যখন হয়, আয়োজক সংস্থা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট এবং গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকি এবং আয়োজক সংস্থার চাহিদা পূরণ করে থাকি। এক্ষেত্রে আমাদের অন্ধকারে রেখে অনুষ্ঠানের তিন দিন আগে জানিয়ে বলবেন নিরাপত্তা দেন- এটা কিন্তু হয় না।”
ইউনূসের সম্মেলন ‘সরকার বন্ধ করে দিয়েছে’- এমন অভিযোগ সত্য নয় মন্তব্য করে আইজিপি বলেন, “সরকার বন্ধ করে নাই। আমাদের নিরাপত্তা নেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেওয়া তাদের উচিৎ ছিল। বিষয়টি নিয়ে ‘অপপ্রচার’ হচ্ছে মন্তব্য করে শহীদুল হক বলেন, তাদের উদ্যোগ তারা সঠিকভাবে নেয়নি, আয়োজন ঠিক মত করেনি। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি, তাদের ল্যাকিং আছে। একটা আর্ন্তর্জাতিক সম্মেলনে এরকম ল্যাকিং থাকা উচিৎ না। তিনি বলেন, সরকার চায় বাংলাদেশে বেশি বেশি আন্তর্জাতিক, আঞ্চলিক সম্মেলন হোক। পুলিশ বিভাগও এ ধরনের আয়োজনকে স্বাগত জানায়। উনারা আমাদের এসপির কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন। এসপি তো একা এতো বড় আয়োজনের নিরাপত্তা দিতে পারবে না। এসপি সেটাই বলেছেন, ‘আমার একার পক্ষে আমাদের এতো অল্প সময়ে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব না।’ এজন্য পর্যাপ্ত সময় প্রয়োজন। আইজিপি দাবি করেন, এই সম্মেলনের কথা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পুলিশ সদর দপ্তর জানত না। বিদেশি লোক আসবে, আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানে না, এটা হয় নাকি? এই যে পানি সম্মেলন হচ্ছে, তার এক মাস আগে থেকে আমরা প্রস্তুত। সেটা নিয়ে তো অনেক মিটিং করা হয়েছে। এরপর সময় নিয়ে অনুমতি চাইলে পুলিশ দেবে কি না জানতে চাইলে আইজিপি বলেন, “অবশ্যই অনুমতি দেয়া হবে। সরকার তো সব সময়ই দেয়।”####
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।