পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পাসের হার ৮২.৮৫%, ছাত্র ৮৩.৯২% আর ছাত্রী ৭৮.৯৩%
স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক দাওরা হাদিস সনদের স্বীকৃতির পর আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশের প্রথম কেন্দ্রীয় পরীক্ষার ফল গতকাল প্রকাশিত হয়েছে। পরীক্ষায় গড় পাশের হার ৮২.৮৫%। ছাত্রদের পাশের হার ৮৩.৯২% আর ছাত্রীদের পাশের হার ৭৮.৯৩%। আল-হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়ার উদ্যোগে গতকাল সকালে কেন্দ্রীয় দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ফলাফল ঘোষণা করেন দাওরায়ে হাদীসের সনদের মান বাস্তবায়ন কমিটির কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলী। ফলাফল ঘোষণার পূর্বে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আল্লামা হাফেয মাওলানা ইসমাঈল ফলাফলের ফাইল কো-চেয়ারম্যানের কাছে হস্তান্তর করেন।
ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আল্লামা আশরাফ আলী মহান আল্লাহ তায়ালার শুর্ক আদায় করে বলেন, কওমি মাদরাসার ছাত্র-ছাত্রীগণ দেশের আদর্শ নাগরিক। শিক্ষাঙ্গনের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা ও নকলমুক্ত পরীক্ষা দেওয়া কওমি মাদরাসার অঙ্গীকার। দাওরায়ে হাদীসকে মাস্টার্সের (ইসলামিক স্টাডিজ এবং আরবী) সমমান প্রদান করায় তিনি প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, আমাদের ছাত্র-ছাত্রীগণ দেশ ও জাতি গঠনে, ইসলামী শিক্ষা ও আদর্শ বিস্তারে এবং জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে, ইনশা-আল্লাহ। উল্লেখ্য গত ১১ এপ্রিল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী কওমী মাদরাসার দাওরায়ে হাদীসের সনদকে মাস্টার্স (ইসলামিক স্টাডিজ এবং আরবি) এর সমমান প্রদানের ঘোষণা দিয়েছিলেন।
পরীক্ষায় মোট উত্তীর্ণ হয়েছে ১৫৩০৪ জন। এর মধ্যে ছাত্র ১২১৭৯ জন এবং ছাত্রী ৩১২৫ জন। পাশের হার ছাত্র ৮৩.৯২%, ছাত্রী ৭৮.৯৩%। গড় পাশের হার ৮২.৮৫%। মুমতায (স্টার) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ছাত্র ৭৪৬ জন এবং ছাত্রী ৪০ জন। জায়্যিদ জিদ্দান (১ম) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ছাত্র ৩১১৬ জন, ছাত্রী ৫১০ জন। জায়্যিদ (২য়) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ছাত্র ৪৩৩১ জন, ছাত্রী ১৪২২ জন এবং মকবুল (৩য়) বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে ছাত্র ৩৯৮৬ জন, ছাত্রী ১৪২২ জন।
ছাত্রদের মেধা তালিকায় শীর্ষে রয়েছে যৌথভাবে ২ জন। তারা হল ঢাকা জেলার মাদরাসা বাইতুল উলূম ঢালকানগর এর মুহাম্মদ ইয়াসীন এবং ঢাকা জেলার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া ইদারাতুল উলুম আফতাবনগর মাদরাসার মো: ইলয়াস হুসাইন। মেধা তালিকায় ২য় স্থান অধিকার করেছে যৌথভাবে ২ জন। তারা হল নারায়ণগঞ্জ জেলার আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানীনগর মাদরাসার মুহাম্মদ সাঈদ আহমদ এবং ঢাকা জেলার মাদরাসা বাইতুল উলূম ঢালকানগর এর মুহাম্মদ আদনান। মেধা তালিকায় ৩য় স্থান অধিকার করেছে ঢাকা জেলার জামিয়া ইসলামিয়া বাইতুন নূর, উত্তর পশ্চিম যাত্রাবাড়ী এর মো: জাওয়াদ আহমদ।
ছাত্রীদের মেধা তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ঢাকা জেলার রামপুরা জাতীয় মহিলা মাদরাসার মুসাম্মাত মাহিরা। মেধা তালিকায় ২য় স্থান অধিকার করেছে ঢাকা জেলার জামিয়া সাহবানিয়া দারুল উলূম এলিফ্যান্ট রোড এর জান্নাতুন নাঈম সাদিয়া এবং ৩য় স্থান অধিকার করেছে যৌথভাবে ২ জন। তারা হল ঢাকা জেলার রামপুরা জাতীয় মহিলা মাদরাসার সানজিদা হুসাইন তামীমা এবং ঢাকা জেলার দারুল উলূম গোলাপবাগ মহিলা মাদরাসার ফাতেমা সাদিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দাওরায়ে হাদীসের সনদের মান বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য মাওলানা আনোয়ার শাহ, মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মুফতী মো: ওয়াক্কাস, মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, মাওলানা মোহাম্মাদ আলী, মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমূদ, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা মুফতী ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মুছলিহুদ্দীন রাজু, মুফতি জসিম উদ্দিন, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা মুফতী নূরুল আমীন। আরো উপস্থিত ছিলেন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ এর মহাসচিব মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, আযাদ দ্বীনী এদারায়ে তা‘লীম বাংলাদেশ এর প্রতিনিধি মাওলানা মুহিব্বুল হক, জাতীয় দীনী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড বাংলাদেশ এর মহাসচিব মুফতী মোহাম্মদ আলী, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার মহাপরিচালক অধ্যাপক মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মুফতী আবু ইউসুফ। অনুষ্ঠানে সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন আল হাইআতুল উলয়া লিল-জামি‘আতিল কওমিয়া বাংলাদেশ এর দপ্তর সম্পাদক মাওলানা মু. অছিউর রহমান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।