পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্পনির্ভর বাজেট ঘোষণা করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। তিনি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৩ হাজার ৩৩৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেন।গতকাল সোমবার দুপুরে নগরভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র এই বাজেট ঘোষণা করেন।
বাজেট অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল, সচিব মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন খান, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসুফ আলী সরদারসহ বিভাগীয় প্রধান এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলররা।
বাজেটে সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্প খাতে ১ হাজার ৯৩৮ কোটি ৫৯ লাখ টাকা পাওয়ার টার্গেট রাখা হয়েছে। আর নিজস্ব উৎসসহ অন্যান্য খাত থেকে বাকি ১ হাজার ৩৯৯ কোটি ৮ লাখ টাকা আদায়ের টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে।
গত অর্থবছরে ডিএসসিসির বাজেট ছিল ৩ হাজার ১৮৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা। ওই বাজেটের ৫৬ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। গত অর্থবছরে ১ হাজার ৭৮৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকার সংশোধিত বাজেট পাশ করা হয় এ অনুষ্ঠানে।
সাঈদ খোকন বলেন, বাজেটে বকেয়া হোল্ডিং ট্যাক্স ৫১৫ কোটি টাকা, বাজার সালামী ৩১৩ কোটি টাকা, দোকান ভাড়া ৩০ কোটি টাকা, ট্রেড লাইসেন্স ৭০ কোটি টাকা, অস্থায়ী পশুর হাট থেকে ১০ কোটি ১ লাখ টাকা, সম্পত্তি হস্তান্তর থেকে ৬৫ কোটি টাকা, সরকারি বিশেষ তহবিল ১৫০ কোটি টাকা আদায়ের টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে।
চলতি অর্থবছরে বাজেটে উন্নয়ন খাতে ব্যয়ের টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছে বেতন-ভাতা ২৫০ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি ও গ্যাসে ১৪৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণে ৩৭৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণে ২৬ কোটি ২৫ টাকা।
মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম (মনিটরিং, সার্ভাইলেন্সসহ) ৩০ কোটি টাকা, বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি ক্রয়ে ১০৪ কোটি ১২ লাখ টাকা, বিজ্ঞাপন ও প্রচারে ১০ কোটি টাকা, বিনোদনমূলক খাতে ১৭৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
বাজেটে কবরস্থান, শ্মশানঘাট সংস্কার ও উন্নয়নে ৯ কোটি টাকা; নাগরিক বিনোদনমূলক সুবিধাদি উন্নয়নে ১৭৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা; পরিবেশ উন্নয়নে ১৯২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অফিস নির্মাণে ১০ কোটি; ঢাকা নগর জাদুঘরে ৩ কোটি টাকা, বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্পে (মেয়রের জন্য নির্ধারিত) ২৫ কোটি টাকা, অপ্রত্যাশিত উন্নয়ন ব্যয় (মেয়রের জন্য নির্ধারিত) ২৫ কোটি টাকা, ল্যান্ডফিল্ড রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়ন খাতে ১৫০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।
এদিকে মেয়র সাঈদ খোকনের বাজেট ঘোষণার আগে কাউন্সিলরদের বক্তব্য পর্বে ডিএসসিসি’র ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন তার বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কাজ কচ্ছপের গতিতে চলছে। তিনি মেয়রকে উদ্দেশ্য বলেন, আপনি যখন দেশের বাইরে ছিলেন, তখন কর্পোরেশনের কাজের কোন গতি ছিল না। যে গতি ছিল তা হচ্ছে কচ্ছপের গতি।
ফরিদ উদ্দিন আহমেদ রতন বলেন, একটা উচ্ছেদের সময় আমাদের চারজন কাউন্সিলর সহযোগিতা ও পরামর্শ নেওয়ার জন্য প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাদের কোনও সম্মানই দেওয়া হলো না। তাহলে অবৈধ দখলে থাকা সম্পদ উচ্ছেদ হবে কিভাবে? সেই কচ্ছপের গতি যদি হয়, তাহলে কর্পোরেশন চলবে কিভাবে?
এই কাউন্সিলর আরও বলেন, আমাদের দক্ষিণ সিটির বড় একটি স্থাপনা মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার। এটা আমাদের বড় একটা সম্পদ। এ ফ্লাইওভার থেকে আয় ধরা হয়েছে এক কোটি টাকা। আমরা এখান থেকে কেন এক টাকাও রাজস্ব পাবো না?
জবাবে মেয়র বলেন, এ নিয়ে মামলা মোকদ্দমা রয়েছে। তখন কাউন্সিলর রতন বলেন, মামলা, সবখানেই মামলা আর রিট। ঢাকা শহরে আমাদের যে কয়টা মার্কেট আছে সবগুলোতেই মামলা আর রিট করে রাখা হয়েছে। এই রিট ১০-২০ বছরেও সমাধান হয় না। যে কোনও মামলা যদি সিটি কর্পোরেশন মোকাবিলা করে, তাহলে আমি মনে করি এক থেকে দুই মাসের মধ্যেই সমাধান হয়ে যায়। এই রিটের সঙ্গে কিছু টাউট বাটপার জড়িত। এরা রাজনৈতিক লেবাসধারী। এই লেবাসধারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে আমাদের যারা কর্মকর্তা ও আইনজীবী রয়েছেন তাদের একটা যোগসাজশ রয়েছে।
মেয়রের প্রতি প্রশ্ন রেখে কাউন্সিলর রতন বলেন, তাহলে কিভাবে এই কর্পোরেশন চালাবেন? এই কর্পোরেশনের যে পরিমাণ সম্পত্তি অবৈধ দখলে রয়েছে তা ১০০ একরের কম হবে না। এই সম্পত্তিগুলো যদি আমরা উদ্ধার করি তাহলে আমাদের সরকার থেকে সাহায্য নিতে হবে না। আপনি কর্পোরেশনে গতি আনেন।
রতন আরও বলেন, আমরা হোল্ডিং ট্যাক্স পাই না। প্রতিটি ভবন মালিকের সঙ্গে আমাদের কর্পোরেশনের লোকেরা আলাদা কথা বলেন। এই আলাদা কথা বলাটা বন্ধ করতে হবে। নির্দিষ্ট এলাকায় নির্দিষ্ট ফি দিয়ে যেন ট্যাক্স অনলাইনে জমা দিয়ে দিতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে আর আলাদা কথা বলতে হবে না।
এরপর অন্যান্য কাউন্সিলররা তাদের বক্তব্যে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব মার্কেটসহ অন্যান্য খাত থেকে কিভাবে আয় বাড়ানো যায় সে বিষয়ে মতামত দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।