রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
মোঃ আনিস উর রহমান স্বপন, ধামরাই (ঢাকা) থেকে : মাছ নাগবো খালা মাছ। ২৫ বছরের বেশী সময় ধরে এমনই ডাক গেয়ে মাছ বাড়ি বাড়ি গিয়ে মহিলাদের কাছে মাছ বিক্রি করে চলেছে শুভা রানী রাজ বংশী। গর্ভের ২টি ছেলে থাকা সত্তে¡ মাছ বিক্রি করে যে টাকা লাভ হয় তা দিয়েই সাংসার চালাতে হয় তার।
নিজের বয়স কত হয়েছে এমনকি কত বছর বয়সে বিয়ে হয়েছে তাও বলতে পারে না শুভা রানী রাজ বংশী। শুধু বলতে পারেন স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার বড় ছেলের বয়স ছিল দেড় বছরের মতো।
শুভা রানীর বিয়ে হয় দেশ স্বাধীন হওয়ার অনেক আগে ধামরাই পৌরসভার কায়েৎ পাড়া মহল্লার গৌর চন্দ্র রাজ বংশীর কাছে। বর্তমানে শুভা রানীর বয়স ষাট ঊর্ধ্বের মতো। ওইসময় তার স্বামী মাছ ধরতো ও ব্যবসা করতো। বিয়ের পরে স্বামী ও ২ ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে ভালই চলছিল সংসার। ১৯৮৮ সালে বন্যার সময় তার স্বামী মৃত্যু বরণ করে। স্বামীর মৃত্যুর পর ৩ জন সন্তান নিয়ে মহাবিপাকে পড়ে শুভা রানী। তবুও সে আর বিয়ে করেনি। পরে ৩ সন্তানের মুখে অন্ন তুলে দেয়ার জন্য অন্যের ধানের চাতালে কাজ নেয়। সেখানে চাল ঝেড়ে কুড়া আলাদা করার সময় হঠাৎ করে তার চোখের মধ্যে ময়লা যায়।
তখন থেকেই সিদ্ধান্ত নেয় মাছ ব্যবসার। মাছ বিক্রি করে লাভের টাকায় ছেলে মেয়েদের মুখে অন্ন জোগাতে থাকে শুভা রানী। এর মধ্যে হঠাৎ করে ঘরে ফ্যান পড়ে আঘাত লাখে মুখের মধ্যে। এসময় তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা ব্যয় হয়। ফলে অর্থনৈনিক অবস্থা একেবাড়েই নাজুক হয়ে পড়ে। তবুও সে মাছের ব্যবসা ছাড়েনি। অভাবের সংসারে ছেলে-মেয়ে বড় হয়। মেয়েকে বিয়েও দেয়। এদিকে ২টি ছেলেই বিবাহ করে। বিবাহের কয়েক বছরের মাথাই গর্ভধারীনি মা থেকে স্ত্রী সন্তান নিয়ে পৃথক হয়ে যায় ছেলেরা।
মা থাকে শুধু সংসারে একা। কে তাকে দেখ ভাল করবে। কে চাল ডাল কিনে খাওয়াবে। সন্তান থাকতেও সে যেন একা হয়ে পড়ে। কিন্তু হাল ছাড়েনি শুভা রানী। ছেলেদের মুখে দিকে না তাকিয়ে অল্প পুঁজি নিয়েই নয়ারহাট/ইসলামপুর বাজার থেকে প্রতিদিন সকালে ছোট ছোট মাছ কিনে ধামরাই পৌর শহরের বিভিন্ন মহল্লায় বাড়ি-বাড়ি গিয়ে মাছ নাগবো খালা মাছ এ ডাক গেয়ে তা বিক্রি করছে। ৮ শত থেকে হাজার টাকার মাছ কিনে তা বিক্রি করে ১১শত টাকা থেকে ১২শত টাকায়। এ থেকেই যা আয় হয় তা দিয়েই নিজের সংসার নিজেই চালাচ্ছে। জীবন সংগ্রামে শুভা রানী কারো করোনার পাত্র নয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।