Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

মালামাল ক্রোক হতে পারে কর খেলাপিদের

আজ ডিএসসিসি’র বাজেট ঘোষণা

| প্রকাশের সময় : ২৪ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সায়ীদ আবদুল মালিক : ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট আজ ঘোষণা করা হবে। ডিএসসিসি’র মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন আজ সোমবার সকালে নগরভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিন হাজার ২৪১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার এ বাজেট ঘোষণা করবেন। দান, অনুদান, খয়রাত এবং প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস ও প্রকল্পের উপর নির্ভর করে অনেকটা কাল্পনিক এ বাজেট নিয়ে খোদ ডিএসসিসিতেই চলছে নানা জল্পনা কল্পনা। নির্বচিত মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন ঘোষিত ডিএসসিসি’র গত দুই অর্থ বছরের বাজেটও টেনে-ছিড়ে পার করতে হয়েছিল। তাই চলতি অর্থ বছরের এই প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন নিয়েও কেউ কেউ শঙ্কা প্রকাশ করেন।
বাজেট বাস্তবায়নের প্রধান অন্তরায়, প্রতি বছরের নির্ধারিত রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি। ডিএসসিসি’র বিগত অর্থবছরগুলোতে দেখা গেছে, নানা কারণে হোল্ডিং ট্যাক্স থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারেনি সিটি কর্পোরেশন। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ খাতে আয় ধরা হয়েছিল ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু এবছর এ খাতে আয় হয়েছে মাত্র ১৯৫ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে আয় ধরা হয় ২৮৫ কোটি টাকা। কিন্তু সে বছর এ খাতে আয় হয়েছে মাত্র ১৮০ কোটি টাকা। তারও আগের অর্থবছরে (২০১৪-১৫)আয় ধরা হয়েছিল ২৫৫ টাকা। কিন্তু সে বছরও এ খাতে আয় হয়েছিল মাত্র ১৭৪ কোটি ২০ লাখ টাকা।
এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য ডিএসসিসি ইতোমধ্যে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে পরিমাণ মতো রাজস্ব আয় না হওয়ায় কর খেলাপিদের তালিকা তৈরি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে নির্ধারিত সময় বেঁধে দিয়ে চিঠি দেওয়া হবে। ওই সময়ের মধ্যে যদি কেউ কর পরিশোধ না করেন, তাহলে আইন অনুযায়ী তাদের মালামাল ক্রোক করা হবে। ডিএসসিসি’র সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসি’র প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ ইউসুফ আলী সরদার বলেন, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার কর খেলাপিদের বিষয়ে মেয়র একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। সে অনুযায়ী একটি তালিকা তৈরি করতে আঞ্চলিক অফিসগুলোকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। দুই-এক দিনের মধ্যে সব কার্যালয়ে চিঠি চলে যাবে। তালিকায় খেলাপিদের তিনটি স্তরে (কম খেলাপি, মধ্যম খেলাপি এবং বড় খেলাপি) ভাগ করা হবে। এরপর নির্ধারিত সময় বেঁধে দিয়ে সবাইকে চিঠি দেওয়া হবে। তারা যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বকেয়া কর পরিশোধ না করেন, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা অনুসরণ করে মালামাল ক্রোক করা হবে।
সূত্র জানায়, দক্ষিণ সিটি এলাকার ২৩-২৪টি বড় প্রতিষ্ঠান সিটি কর্পোরেশনের নামে অযথা মামলা দিয়ে ট্যাক্স দেওয়া বন্ধ রেখেছে। কর্পোরেশনের শীর্ষ ব্যক্তিরা মনে করেন, এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করে তাদের নাম ও ঠিকানা গণমাধ্যমে প্রকাশ করলে, অন্তত লোক লজ্জার ভয়ে হলেও ট্যাক্স পরিশোধে আগ্রহী হবে। এরপরেও যদি তারা ট্যাক্স পরিশোধ না করে, তাহলে আইন অনুযায়ী মালামাল ক্রোক করতে হবে।
সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব আয়ের প্রধান উৎস হচ্ছে হোল্ডিং ট্যাক্স। কিন্তু সংস্থার আওতাধীন বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান সিটি কর্পোরেশনের ট্যাক্স পরিশোধ করছে না। কেউ কেউ ট্যাক্সের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও করেছেন। স¤প্রতি ট্যাক্স পুনঃমূল্যায়নের উদ্যোগ নিলে এর বিরুদ্ধে আদালতে রিট করা হয়। এরপর সেই উদ্যোগও বন্ধ হয়ে যায়।
ডিএসসিসি’র বিগত অর্থবছরগুলোতে দেখা গেছে, নানা কারণে হোল্ডিং ট্যাক্স থেকে আয়ের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারেনি সিটি কর্পোরেশন। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এ খাতে আয় ধরা হয়েছিল ৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু এবছর এ খাতে আয় হয়েছে মাত্র ১৯৫ কোটি টাকা। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে আয় ধরা হয় ২৮৫ কোটি টাকা। কিন্তু সে বছর এ খাতে আয় হয়েছে মাত্র ১৮০ কোটি টাকা। তারও আগের অর্থবছরে (২০১৪-১৫)আয় ধরা হয়েছিল ২৫৫ টাকা। কিন্তু সে বছরও এ খাতে আয় হয়েছিল মাত্র ১৭৪ কোটি ২০ লাখ টাকা।
ডিএসসিসি সূত্র জানিয়েছে, সদ্যবিদায়ী (১০১৬-১৭) অর্থবছরে তিন হাজার ১৮৩ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করেছিল ডিএসসিসি। এতে নিজস্ব খাত থেকে আয় ধরা হয়েছে এক হাজার ৬১৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এরমধ্যে পুরো অর্থবছরে আয় হয়েছে মাত্র ৫১৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। যা নিজস্ব বাজেট আয়ের মাত্র ৩৭ দশমিক ২৭ শতাংশ।
জানতে চাইলে ডিএসসিসি’র প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউসুফ আলী সরদার বলেন, রাজস্ব ঘাটতির অন্যতম কারণ হচ্ছে হোল্ডিং ট্যাক্স। আমরা ট্যাক্স পুনঃমূল্যায়নের হিসাব করেই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম। কিন্তু আদালতের একটি রিটের কারণে তা বন্ধ হয়ে গেছে। তাছাড়া অনেকেই পৌর কর দিচ্ছেন না। এখন বড়বড় কর খেলাপিদের তালিকা করে মালামাল ক্রোকসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা হচ্ছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ