বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঝিনাইদহে আন্দোলনে নেমেছে সর্বস্তরের মানুষ
মিজানুর রহমান তোতা : ‘আর কোন দাবি নেই, ঝিনাইদহ জেলা সদরে রেল লাইন চাই’-এই শ্লোগান এখন জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে ঝিনাইদহের চারিদিকে। তাল তমাল খেজুর বীথি, লালন শাহ, দুদ্দু শাহ, পাঞ্জু শাহ, পাগলা কানাই, বাঘা যতিন, ইলা মিত্র, কেপি বসু ও গোলাম মোস্তফার ্ঐতিহাসিক ঝিনাইদহের সর্বস্তরের মানুষ একটি দাবিতে এককাতারে মিলিত হয়েছেন। স্মরণকালে এমনটি ঘটেনি। স্থানীয় দাবিতে মানুষ এতটা সোচ্চার হতে পারে এটি রীতিমতো রেকর্ড। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, রাজপথে মিছিল মিটিং, ঝিনাইদহ প্রেসক্লাব ও উকিলবারে দফায় দফায় মিটিং, ঝিনাইদহের রাস্তায় রাস্তায় দাবি আদায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি, ফেসবুকে ঝড় তোলার ঘটনায় সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষকে আন্দোলিত করেছে।
ঝিনাইদহ দক্ষিণ-পশিশ্চমাঞ্চলে মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ জেলা। আন্দোলন সংগ্রামের পীঠস্থান,স্বাধীনতার প্রবেশদ্বার, মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদানের জেলাটি বরাবরই অবহেলিত। বহুদিন পর সর্বস্তরের মানুষ এককাতারে সামিল হয়ে একটি ছোট একটি দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন। ঝিনাইদহে জন্মস্থান এমন বহু ব্যক্তি দেশের বিভিন্নস্থানে কর্মরত। তারাও প্রাণের দাবিটির স্বপক্ষে যে যার মতো সরকারের বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। লেখালিখি করছেন পত্র-পত্রিকায়। দাবিটি অত্যন্ত যৌক্তিক। ইতোমধ্যে দাবির স্বপক্ষে মৌখিক আবেদন পৌছে গেছে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে। আন্দোলনের পাশাপাশি আবেদন নিবেদন চলছে নানাভাবে। সংশ্লিষ্টদের মতে, শান্ত ঝিনাইদহ এখন উত্তাল। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, ঝিনাইদহ রেল লাইন বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। যার আহŸায়ক হয়েছেন খন্দকার হাফিজ ফারুক, যুগ্ম আহŸায়ক এ্যাডঃ মনোয়ারুল হক লাল ও সদস্য সচিক ফজলুর রহমান খুররম। সদর ও শৈলকুপার এমপি, পৌর মেয়র, আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাসদ, ওয়াকার্স পার্টিসহ সকল রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করেছেন।
আন্দোলনকারিরা জানান, ঝিনাইদহ জেলা সদরে রেল লাইনের দাবিটি গণদাবিতে পরিণত হয়েছে। আমাদের দাবি ঐতিহাসিক মুজিবনগর থেকে ঝিনাইদহ ছুয়ে মাগুরা মধুখালী থেকে রাজধানীর ঢাকার সঙ্গে যোগোযোগ স্থাপন। রেলওয়ের একটি সূত্র জানায়, মধুখালী থেকে মাগুরা শালিখা হয়ে যশোরের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের প্রস্তাবনা রয়েছে। মাগুরা থেকে যশোরের দুরত্ব ৪৫ কিলোমিটার। প্রায় একই দুরত্ব হচ্ছে মাগুরা থেকে ঝিনাইদহ ছুয়ে কালীগঞ্জ (মোবাকগঞ্জ)। রেল লাইন স্থাপনের খরচও হবে প্রায় এক। যেটি হবে সেটি হচ্ছে মাগুরা থেকে একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা সদর যুক্ত হবে। এটি হলে ঝিনাইদহের রাজধানী ঢাকা ও উত্তরাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ নেটওয়ার্কের মধ্যে এসে যাব। দেশের প্রতিটি জেলা সদরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপন সরকারেরই ঘোষিত পরিকল্পনা। এই দিক থেকেও ঝিনাইদহ রেল লাইনের দাবি যুক্তিযুক্ত এবং এটি হলে সরকারের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পথটিও অনেকটা এগিয়ে থাকবে।
ঝিনাইদহ ব্যবসা-বাণিজ্যে ও অর্থনীতিতেও সমৃদ্ধ। ফুল, সবজি, পান, কলা উৎপাদনে রয়েছে রেকর্ড। এসব কৃষিপণ্য দেশের মোট চাহিদার সিংহভাগ সরবরাহ হয় এখান থেকে। ব্যবসায়িক যোগাযোগের স্বার্থে রেল লাইন ঝিনাইদহে চালু করা খুবই জরুরি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।