Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নদ-নদী সংকুচিত দখল অপরিকল্পিত নগরায়ন ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা

সাতক্ষীরায় পানিবদ্ধতা

| প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

আবদুল ওয়াজেদ কচি, সাতক্ষীরা থেকে : সাতক্ষীরার বিস্তীর্ণ এলাকা পানিবদ্ধতার কবলে বিপর্যস্থ। জেলাবাসির জন্য বর্তমান সময় পানিবদ্ধতা নামক অভিশাপ জন ভোগান্তীতে পরিনত করে চলেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি জমে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। শহরের বাসিন্দাদের অভিমত জেলা শহরে ইতিপূর্বে সামান্য বৃষ্টিতে পানিবদ্ধতার স্থায়িত্ব দেখা না গেলেও সা¤প্রতিক বছর গুলোতে শহরের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিবদ্ধতার অভিশাপে বিপর্যস্থ। শহরের কোট চত্বর এলাকা, পলাশপোল, মেহেদীবাগ, কাসেমপুর, মধুমল্লারডাঙ্গী, কামালনগর, নিউমার্কেটের পিছে, ইটাগাছা, নারিকেলতলা, কাটিয়া, চালতেতলা, সুলতানপুর বড় বাজার সংলগ্ন এলাকা, সার্কিট হাউজ এলাকা সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় গত কয়েকদিনের বর্ষায় পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সাতক্ষীরা শহরের অভ্যন্তর দিয়ে প্রবাহীত সাপমারা খালের দখল, দুষণ, জরাজীর্ণতা এবং যৌবন হারানোর কারণে পানি নিষ্কাষন ব্যবস্থা সংকুচিত হয়েছে যে কারণে বৃষ্টির পানি দ্রæত নিষ্কাষন হয় না, একদা সাপমারা খালে পন্যবাহী নৌকা পালতোলা নৌকার বিচরন ছিল, অপরিকল্পিত নগরায়ন, ড্রেন কালভার্ড নির্মাণে যথাযথ প্রক্রিয়া এবং পানি নিষ্কাষনের সুব্যবস্থা না রেখেই নির্মান, শহরের একাধিক বাসিন্দা জানান বহু ড্রেন আছে যা ময়লার স্তুপের কারণে বন্ধ হওয়ার উপক্রম ঘটেছে। ময়লা, আবর্জনার স্তুপে পরিপূর্ণ ড্রেন দিয়ে পানি নিষ্কাষনের পরিবর্তে পানিবদ্ধতার ক্ষেত্র বিস্তৃত হচ্ছে। শহরের অভ্যন্তরের সড়কগুলোর কোন কোন সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা হইনি যে কারণে সামান্য বর্ষাতেই সড়ক গুলোতে পানি জমে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সাতক্ষীরা শহরে দিনে দিনে জনবসতি, বসতবাড়ি, শিল্প কলকারখানা সহ স্থাপনার সংখ্যা দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে যে কারণে জলাশয় এবং পুকুরের সংখ্যা অতি দ্রæত আশংকাজনক হারে হ্রাসপাচ্ছে। গত পাঁচ/সাত বছরে শহরের বহু পুকুর সমতল ভূমিতে পরিনত হয়েছে। পুকুরগুলো বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে পারতো কিন্তু বর্তমান সময়ে পুকুরের সংখ্যা কমে যাওয়ায় পানি ধরে রাখার সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা না থাকায় পানিবদ্ধতার ক্ষেত্র ব্যাপক ভাবে বিস্তৃত হচ্ছে। সাতক্ষীরার অভ্যন্তর দিয়ে প্রবাহীত নদ নদী গুলোর নাব্যতা সংকটের পাশাপাশি এক শ্রেনীর ভূমিদস্যু এবং নদী খেকোরা নদ নদী এবং খালের জায়গা দখল পরবর্তি স্থাপনা নির্মাণ করে পানি নিষ্কাষনের পথ সংকুচিত করনের পাশাপাশি নদ নদীতে জোয়ার ভাটার স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘœ ঘটিয়েছে যার প্রভাব পড়েছে পানিবদ্ধতা সৃষ্টিতে।
এক শ্রেনীর কর্মকর্তা কর্মচারীরা নদীর যায়গাও ইজারা দিয়েছে বলে অভিযোগ আছে। খাল খনন এবং পুনঃখননের বিষয়টি ত্বরিৎ গতিতে সম্পাদন করতে হবে, এক সময়ে জেলার আর্শীবাদ হিসেবে খ্যাত কপোতাক্ষ নদ সময়ের ব্যবধানে আর বাস্তবতার নিরিখে তলদেশ ভরাট হয়ে স্বাভাবিক নাব্যতা হারিয়েছে সেই সাথে নদী খেকো ভূমি দস্যুদের উৎপাত কপোতাক্ষকে সাতক্ষীরার দুঃখ এবং হাজার হাজার বিঘা এলাকায় পানিবদ্ধতা সৃষ্টি করেছে। জেলার মরিচ্চাপ, বেতনা, সাপমারা, সূবর্ণবাদ, লাবণ্যবতী, কাকশিয়ালী, বদরতলা প্রভৃতি নদী ও খাল দখলে, এবং নাব্য সংকটের কারনে দিনে দিনে অধিকতর বিস্তৃত ঘটছে। সাতক্ষীরার জনসাধারন পরিত্রান পেতে চায়, পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে অতি বৃষ্টি নয় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। ফসলি জমিতে ও পানি জমেছে, পানিবদ্ধতার কারণে চিংড়ী ঘের প্রতিবছর ভেসে যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ